কোভিড-১৯ প্রতিরোধী ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমোদন দিল চীন
নিজ দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ প্রতিরোধী একটি পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে চীন। বিশ্বজুড়ে নতুন করোনাভাইরাস স্থায়ীভাবে প্রতিরোধের যে চেষ্টা চলছে, এ অনুমোদন তাতে নতুন মাত্রা যোগ করলো।
এডি৫-এনসিওভি নামের এই প্রতিষেধক টিকাটি- চীনা সামরিক বাহিনীর চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণা শাখার অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বেইজিং ইনস্টিটিউড অব বায়োটেকনলজি এবং স্থানীয় কোম্পানি ক্যানসাইনো বায়োলজিক্স যৌথভাবে উদ্ভাবন করেছে।
গত সোমবার হংকং পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত ক্যানসাইনো তাদের শেয়ারহোল্ডারদের প্রতি দেওয়া এক বিবৃতিতে জানায়, চীনের সামরিক কমিশন উৎপাদিত প্রতিষেধকটিকে 'বিশেষ জরুরি ওষুধ হিসেবে অনুমোদন' দিয়েছে। গত ২৫ জুনেই এ অনুমোদন দেওয়া হয়। আগামী এক বছর পর্যন্ত বিশেষ অনুমোদনটি কার্যকর থাকবে, যার আওতায় শুধু সামরিক বাহিনীর সদস্যরাই টিকাটি পেতে চলেছেন। খবর সিএনএনের।
করোনার মহামারিতে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা তেমন একটা সংক্রমিত হননি, শুরু থেকেই এ দাবি করে আসছে চীন। চীনা গণমুক্তি ফৌজ- পিএলএ'র একজন সদস্যও ভাইরাসে আক্রান্ত নন, এমন দাবিও করা হয় ইতোপূর্বে। তারপরও কেন সামরিক বাহিনীর সদস্যরা আগে পরীক্ষামূলক টিকা পেতে চলেছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।
তবে মার্কিন পর্যবেক্ষকরা চীনের দাবির বিষয়ে আগে থেকেই সন্দেহ পোষণ করে আসছেন। তাদের দাবি- বিশ্বের বৃহত্তম পেশাদার সামরিক বাহিনীই হচ্ছে চীনের। প্রায় ২৩ লাখ সদস্যের মাঝে করোনার সংক্রমণ হয়নি এমন দাবি তাই মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তবে চীনে সংক্রমণ পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে- একথাও সত্য। আগামীদিনে, সবার আগে সশস্ত্র বাহিনীকে ভাইরাসের প্রাণঘাতী প্রভাব মুক্ত রাখতেই দেশটি এ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
তবে চীন সরকার বা ক্যানসাইনো কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ কেউই নতুন প্রতিষেধকটি কতজনের শরীরে প্রয়োগ করা হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। এ টিকা গ্রহণ বাধ্যতামূলক বা স্বেচ্ছায় যে কেউ নিতে পারবেন, তাও সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি।
তবে ক্যানসাইনোর বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ভ্যাকসিনটির প্রয়োগ সুরক্ষিত বলে প্রমাণিত হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষায় এডি৫-এনসিওভি নতুন করোনাভাইসকে সফলভাবে প্রতিহত করতেও সক্ষম হয়।
এর আগে গত মে'তে কানাডার সরকার সেদেশে ভ্যাকসিনটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগে অনুমোদন দিয়েছে বলে জানায় ক্যানসাইনো। সেসময় কানাডার জাতীয় গবেষণা কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ইয়ান স্টুয়ার্ট 'ভ্যাকসিনটি করোনা প্রতিরোধে উজ্জ্বল সম্ভাবনার আশা দেখাচ্ছে' বলে মন্তব্য করেছিলেন।