ক্ষুধার যন্ত্রণায় মাত্র ৫০০ ডলারে মেয়েশিশু বিক্রি আফগানিস্তানে
বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকটের মোকাবিলা করছে আফগানিস্তান। গত আগস্টে তালেবান ক্ষমতার দখল নেওয়ার পর থেকেই খারাপ হতে শুরু করে দেশটির পরিস্থিতি। খাবারের পয়সা জোগাড়ের জন্য বাড়ির তৈজসপত্র পর্যন্ত বিক্রি করে দিতে দেখা গেছে আফগানদের।
এই পরিস্থিতিতে খাবারের অভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে লক্ষ লক্ষ শিশু। হাসপাতালগুলোর শিশু ওয়ার্ডে গেলে চোখে পড়ে শীর্ণকায় অসংখ্য শিশু। এসব শিশুর ২০ শতাংশই বাঁচবে না। ডাক্তার-নার্সরা বেতন পাচ্ছেন না মাসের পর মাস। ভেঙে পড়ছে দেশটির জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
স্রেফ টাকার অভাবে খাদ্য কিনতে পারছেন না বলে চোখের সামনে সন্তানকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে দেখছেন অসংখ্য আফগান বাবা-মা।
এমনকি পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতে শিশু সন্তানদেরও বিক্রি করে দিচ্ছে বহু পরিবার। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এমনই এক পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। টাকার অভাবে পরিবারটি তাদের মেয়েশিশুকে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
ওই শিশুর মা বিবিসিকে বলেন, 'আমার অন্য সন্তানরা না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছিল, তাই আমার মেয়েকে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছি।'
মেয়েটি হাঁটতে শিখলেই যে ব্যক্তি কিনেছে, তার হাতে তুলে দেওয়া হবে তাকে। শিশুটিকে ৫০০ ডলারে বিক্রি করা হয়েছে। তার পরিবারকে এখন ২৫০ ডলারের মতো দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা দেওয়া হবে মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়ার সময়। এই টাকায় মেয়েটির পরিবারের কয়েক মাসের খাবারের ব্যবস্থা হবে। শিশুটির পরিবারকে বলা হয়েছে যে ব্যক্তি তাকে কিনেছে তার ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এ কথা কতটা সত্যি, তা কেউই জানে না।
এই মেয়েশিশুর পরিবারের মতোই আরও বহু আফগান পরিবার তাদের সন্তান বিক্রি করে দিয়েছে ক্ষুধার যন্ত্রণায়। আরও বহু পরিবার মরিয়া হয়ে সন্তান বিক্রির চেষ্টা করছে।
তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া-না-দেওয়ার বিতর্কে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো আফগানিস্তানে অর্থসাহায্য দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। মানুষের হাতে টাকা নেই।
টাকা ও খাবারের অভাবে ধুঁকছে আফগানরা। জাতিসংঘ সাবধান করে দিয়েছে, শিগগিরই জরুরি সহায়তা না পৌঁছালে দেশটিতে লাখ লাখ মানুষ মারা যাবে।