হোটেল থেকে বের করে দেওয়া, পণ্য বিক্রি না করা- ভারতে ইমিগ্রেশনে হয়রানির মুখে বাংলাদেশিরা
ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে আসায় শেষবারের মতো পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ভ্রমণের জন্য গতকাল সোমবার (২ ডিসেম্বর) আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলায় যান কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বাসিন্দা ফরিদ মিয়া। কিন্তু সেখানে গিয়ে বিপাকে পড়েন। বাংলাদেশি ও মুসলিম হওয়ায় ভাড়া নেওয়ার এক ঘণ্টা পরই তাকে হোটেল থেকে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে হোটেল থেকে বের করে দিলেও তাকে ফেরত দেওয়া হয়নি ভাড়ার টাকা। পরে দিনভর চেষ্টার পর আজ মঙ্গলবার বিকেলে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরির পর থেকেই দেশটিতে ভ্রমণ ও চিকিৎসার কাজে যাওয়া বাংলাদেশিরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
ফরিদ মিয়া বলেন, হঠাৎ করে হোটেল কর্তৃপক্ষ এসে বলে বাংলাদেশি এবং মুসলিমদের হোটেলে থাকতে দেওয়া হবে না। হোটেলের যে ভাড়া নিয়েছিল, সেটাও ফেরত দেয়নি। ভয় দেখিয়ে হোটেল থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে বাধ্য হয়ে শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে রাত কাটিয়ে সকালে দেশে ফেরার জন্য চেকপোস্টের দিকে রওনা হই। এখানে এসে দেখি বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে। আর বলা হচ্ছে বাংলাদেশি ও ইউনূসের (প্রধান উপদেষ্টা) লোক পেলেই পেটাবে। সারাদিনের চেষ্টার পর বিকেলে দেশে ফিরতে পেরে মনে হচ্ছে প্রাণে বেঁচে ফিরেছি।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বাসিন্দা মুজিবুর রহমান জানান, তিনি শিলচরে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে জামদানি শাড়ির স্টল দিয়েছেন। গতকাল একদল যুবক জয় শ্রী রাম স্লোগান দিয়ে মেলায় এসে তার দোকান ভাঙচুর করে এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের হুমকি দেয়।
এদিকে বাংলাদেশি যাত্রী হয়রানির ঘটনায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মঙ্গলবার স্বাভাবিকের চেয়ে কম যাত্রী পারাপার হয়েছে। এদিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত মাত্র ১৪১ জন যাত্রী ভারতে প্রবেশ করেছেন। আর ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন ১৪০ জন যাত্রী।
আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. খাইরুল আলম জানান, বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি নাগরিক। আর ভারত গমন করা যাত্রীদের বেশিরভাগ ভারতীয়। ভারতফেরত বাংলাদেশি যাত্রীরা হোটেল থেকে বের করে দেওয়া, মার্কেটে বাংলাদেশি পরিচয় পেয়ে পণ্য না বিক্রি করা এবং ইমিগ্রেশনে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। বিষয়গুলো আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।