গালে চড় খেলেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ
দক্ষিণপূর্ব ফ্রান্সে আনুষ্ঠানিক সফরকালে চড় পড়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর গালে! সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিও'তে দেখা যায়, নিরাপত্তা বেষ্টনীর ওপাশে উপস্থিত জনতার দিকে তিনি হেঁটে গেলে তাদেরই একজন মাখোঁকে সজোরে চড় মেরেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে ফ্রান্সের ভ্যালেন্স শহরে। এসময় প্রেসিডেন্টকে তার দেহরক্ষীরা সরিয়ে নেন। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তারের কথাও জানা যায় ফরাসী গণমাধ্যম সূত্রে।
মাখোঁ এই ঘটনাকে পরে 'বিচ্ছিন্ন ঘটনা' হিসেবে বর্ণনা করেন।
প্রেসিডেন্টকে চড় মারার সময় আক্রমণকারী ওই ব্যক্তি 'মাখোঁবাদ নিপাত যাক' বলে স্লোগান দেন। তাছাড়া, ফরাসী রাজতন্ত্রকালের রণ-হুঙ্কার 'মুঁজুঁয়া সান ডেনি' উচ্চারণ করেন ওই ব্যক্তি। প্রাচীন যুগের ফরাসী রাজা শার্লামেনের রণ-ধ্বজায় এ স্লোগানটি থাকতো।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, চড় মারার কিছুক্ষণ পরে মাখোঁ আবারো ব্যারিকেডের দিকে আসেন এবং মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ফরাসী গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, "আমি এটা আগেও করেছি এবং ভবিষ্যতেও করবো। কোন কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না।"
যে ব্যক্তি প্রেসিডেন্টকে চড় মেরেছেন তার পরিচয় এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনো পরিষ্কার নয়। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, আরেকজন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে ফরাসী 'জঁন্দারমারি' বা সামরিক পুলিশ।
চড় মারার পরপরই ভ্যালেন্সের রাস্তায় বাহিনীটির সদস্যদের উপস্থিতি জোরদার করা হয় বলে একজন ফরাসী সাংবাদিক টুইটারে জানান।
প্রেসিডেন্টকে সুরক্ষা দেয় কারা
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্সি সিকিউরিটি গ্রুপ (জিএসপিআর)।
১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই নিরাপত্তা দলে ৭৭জন নারী-পুরুষ রয়েছে। ইমানুয়েল মাখোঁ যখন কোন অনুষ্ঠানে যোগ দেন তখন তারা তাকে নিরাপত্তা দেন।
প্রেসিডেন্ট যখন কোন অনুষ্ঠানে যাবার সিদ্ধান্ত নেন, তার সফরের আগে সে জায়গাটির নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করে এই দলটি। এরপর প্রেসিডেন্টের সফরের সময় তার নিরাপত্তার জন্য অস্ত্রসহ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
ফ্রান্সের একটি টেলিভিশন চ্যানেল জানিয়েছে, মঙ্গলবারের সফরের সময় মাখোঁর সাথে ১০জন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন।
এদিকে প্রেসিডেন্ট মাখোঁকে চড় মারার ঘটনায় ফ্রান্সের রাজনীতিবিদরা নিন্দা জানিয়েছেন।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ ক্যাসেক্স বলেছেন, গণতন্ত্রে বিতর্ক এবং ভিন্নমত থাকতেই পারে। তবে এর অর্থ কোনভাবেই সহিংসতা নয়। মৌখিকভাবে আগ্রাসী আচরণ অথবা শারীরিকভাবে আঘাত কখনোই গণতন্ত্র হতে পারে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
- সূত্র-বিবিসি