ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে হাভার্ড ও এমআইটি
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত থাকলে অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়া যাবে না দেশটিতে অবস্থান করে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড ছেড়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিজ দেশে ফিরে গিয়ে এমন ক্লাসে অংশ নিতে হবে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই বিদেশি শিক্ষার্থীদের অভিবাসন সংক্রান্ত এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এনিয়ে চরম অসন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ।
আজ বুধবার (৮ জুলাই) সিদ্ধান্তটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে- যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় দুই বিদ্যাপীঠ হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউড অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।
সরকারি নির্দেশনার আওতায়, আগামী ফল সেমিস্টারে (আগস্ট –ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় দুটির শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণে বাঁধা সৃষ্টি হওয়ায় মামলা করা হয়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে চলতি সপ্তাহেই সমস্ত বিভাগের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস নেওয়ার ঘোষণা দেয় হাভার্ড। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের জন্য তা সমানভাবে প্রযোজ্য।
মামলার কারণ জানিয়ে বার্তা সংস্থা সিএনএন'কে পাঠানো এক বিবৃতিতে হাভার্ড কর্তৃপক্ষ জানান, ''তাদের পাঁচ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত অনুসারে ভার্চুয়াল পাঠদানে অংশ নিতে হবে। এ অবস্থায় সরকারের সিদ্ধান্তটি ছিল বিনা মেঘে বজ্রপাতের সমান। আগে থেকেই কোনো প্রকার নোটিশ না দিয়ে নেওয়া- এ সিদ্ধান্তের নিষ্ঠুরতাকে শুধু এর হঠকারিতার সঙ্গেই তুলনা করা চলে।''
হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ল্যারি বেকো স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ''আগামী সেমিস্টারে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন শিক্ষার্থীদের জন্য স্বশরীরে ক্লাসে উপস্থিতির সিদ্ধান্ত নেয়, সে জন্যেই ইচ্ছেকৃতভাবে অন্যায় চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনার এটাই মূল উদ্দেশ্য। অথচ এভাবে ক্যাম্পাস চালু রেখে পাঠদান চালিয়ে গেলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষা সহযোগী অন্যান্য পেশাজীবীরা যে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির মুখে পড়বেন- তা একবার বিবেচনা করা হয়নি।''
সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের আওতায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা প্রাপ্তিতে কড়াকড়ি বাড়ানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এসে অনলাইন কোর্সে অংশ নিতে আগ্রহীদের আগমনে আরোপ করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্কনীতি প্রয়োগকারী সংস্থা (আইস) অবশ্য দাবি করে, আরোপিত নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইন এবং স্বশরীরে পাঠদান কার্যক্রমের 'হাইব্রিড' মিশ্র পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে পড়ুয়া বিদেশিরা স্বশরীরে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরিত হতে পারে, বলেও পরামর্শ দেয় সংস্থাটি।
তাই অভিবাসন নির্দেশনাটির প্রয়োগ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের জেলা আদালতে যৌথভাবে মামলা দায়ের করেছে হাভার্ড ও এমআইটি। মামলার অভিযোগপত্রে, সরকারি নির্দেশনা জারির প্রচলিত ধারাবাহিকতা ভঙ্গের অভিযোগও আনা হয়েছে।