এনসিটিবি’র সামনে হামলার ঘটনায় ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা
গত ১৫ জানুয়ারি রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে 'সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা'র ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামাসহ আসামি করা হয়েছে ৩০০ জনকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন। তিনি জানান, ১৭ জানুয়ারি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
এছাড়া, হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটক হওয়া আরিফ আল খবির ও মো. আব্বাসকেও মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ওসি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, 'আমরা হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি'।
গত ১৫ জানুয়ারি পাঠ্যপুস্তকে 'আদিবাসী' শব্দসংবলিত গ্রাফিতি রাখা ও না রাখাকে কেন্দ্র করে 'সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা'র ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে 'স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি' নামক সংগঠনের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অন্তত ৯ জন আহত হন।
ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) মো. আব্বাস ও আরিফ আল খবির নামের দুজনকে আটক করে পুলিশ।
আটক হওয়া দুই ব্যক্তি নিজেদের মাথায় ব্যান্ডেজ এবং ভায়োডিন নামের ওষুধ ব্যবহার করে ভুয়া আঘাতের চিহ্ন তৈরি করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এক বিবৃতিতে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে।
বিবৃতিতে সরকার জানায়, জুলাই বিপ্লবের সত্যিকারের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে, সরকার স্পষ্টভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে বাংলাদেশে সহিংসতা, জাতিগত বিদ্বেষ এবং ধর্মান্ধতার কোনো স্থান নেই। যারা ঐক্য, শান্তি ও আইন-শৃঙ্খলার বিনষ্ট করবে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, নবম ও দশম শ্রেণির 'বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি' বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে 'আদিবাসী' শব্দ থাকা একটি গ্রাফিতি যুক্ত করা হয়েছিল। স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি সংগঠন এর প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রাফিতিটি বাতিলের দাবি জানায়। তাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে গ্রাফিতিটি সরিয়ে নতুন একটি নকশা সংযোজন করে পাঠ্যবইয়ের পিডিএফ সংস্করণ প্রকাশ করে।