ফানুসের আগুনে পুড়লো ৩০ বন্যপ্রাণি
নতুন বছরের আগমন উদযাপন করে সারা বিশ্বের মানুষ। প্রতিটি দেশেই নতুন বছরের সূচনালগ্নে আকাশে ভাসে সহস্র ফানুস আর আতশবাজি। মানুষের এই বর্ণিল উদযাপন তাদের বাঁধভাঙ্গা আনন্দের বহিঃপ্রকাশ হলেও এবার তা কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০টি বন্যপ্রাণির জন্য।
মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে সারাবিশ্বের মতো নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে জার্মানিও। দেশটির আকাশে জ্বলেছে অসংখ্য আতশবাজি, উড়েছে অসংখ্য ফানুস। আর সেই ফানুসের আগুন থেকেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে ক্রেফেল্ড শহরের একটি চিড়িয়াখানায়। পুড়ে গেছে বানরদের একটি বড় খাঁচা। আর সেই সঙ্গে পুড়ে মারা গেছে ওরাংওটাং, শিম্পাঞ্জি, গরিলা এবং মারমোসেটসহ ৩০টিরও বেশি বন্যপ্রাণি।
এখনও আতঙ্ক
এদিকে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ফেসবুকে জানায়, তাদের সবচেয়ে ভীতিকর আশঙ্কাই সত্য হয়েছে। বানরদের খাঁচায় কোনো প্রাণী বেঁচে নেই।
কর্তৃপক্ষ জানায়, অনেকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে চেয়েছে। এর জন্য অসংখ্য কৃতজ্ঞ তারা। তবে পুরো চিড়িয়াখানার এত ভয়াবহ অবস্থা যে কোথায় সহায়তা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, এটি এখনও স্পষ্ট হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা এখনও হতবাক আর আতঙ্কিত হয়ে রয়েছি। সঠিকভাবে কোথায় কোথায় সহায়তা দরকার তা এখনও নির্ধারণ করতে পারিনি।’
কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে
পুলিশ জানিয়েছে, বর্ষবরণের কিছু আগে ফানুস থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। যেগুলো চাইনিজ ফানুস বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
নিরাপত্তার আশঙ্কায় ২০০৯ সাল থেকেই কংমিং নামে পরিচিত চাইনিজ ফানুস শহরটিতে নিষিদ্ধ। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই এসব ফানুস উড়ানো হয়।
এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানিয়েছে, তথ্যের জন্য আবেদন করার পরে, কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে সে সম্পর্কে বেশ কয়েকটি ব্যক্তি তাদের কাছে বিবৃতি দিয়েছিল।
কোনো ব্যক্তির চার্জ আদায় করা হবে কিনা তা এখনও কর্মকর্তারা নিশ্চিত করতে পারেননি।
ক্রেফেল্ড চিড়িয়াখানাটি ১৯৭৫ সালে গড়ে উঠে। দুই হাজার বর্গমিটারের এই চিড়িয়াখানায় পাখি, বাদুড়, বানর ও বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। গরিলার সেকশনটি চিড়িয়াখানার মূল অংশের খানিক দূরে। সেখানেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বর্ষবরণের রাতে।