ফিলিস্তিনের জনগণ আবুধাবীকে ক্ষমা করবে না: ইরান
ইরান তার চিরশত্রু ইসরাইল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগকে 'কৌশলগত বোকামী' বলে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনের জনগণ আবুধাবীকে ক্ষমা করবে না।
শুক্রবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, "এই উদ্যোগ আবুধাবীর কৌশলগত বোকামী এবং এর ফলে নি:সন্দেহে এ অঞ্চলে প্রতিরোধ অক্ষ জোরদার হবে।"
এতে বলা হয়, "ফিলিস্তিনের নিপীড়িত সকল মানুষ এবং বিশ্বের সকল দেশ দখলদার অপরাধী ইসরাইলি শাসকদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রয়াসকে কখনো ক্ষমা করবেনা।"
এর আগে বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইসরাইলের সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে পৌঁছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এক যৌথ বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ আল নাহইয়ান তখন জানান, তাদের প্রত্যাশা এই 'ঐতিহাসিক অগ্রগতি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।'
বিবৃতিতে বলা হয়, ঐতিহাসিক কূটনৈতিক অগ্রগতি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বয়ে আনবে। তিন নেতার দৃঢ় কূটনীতি ও সুদূর প্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরাইলকে নতুন পথে হাঁটার সাহস যুগিয়েছে। যা আঞ্চলিক বিশাল সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সহায়তা করবে।
বিবিসি'র এক খবরে বলা হয়, চুক্তির আওতায় আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইসরাইল ও আমিরাতের প্রতিনিধিরা বিনিয়োগ, পর্যটন, সরাসরি বিমান চলাচল, নিরাপত্তা, টেলিযোগাযোগ, প্রযুক্তি, জ্বালানি, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও দূতাবাস স্থাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করবেন।
এই চুক্তি অনুসারে পশ্চিম তীরের দখল ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়েছে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদাররা। যদিও ফিলিস্তিনের প্রতি কোন রকমের হুমকির নজির দেখায়নি আরব আমিরাত, তবু একটি আরব দেশ হয়ে ইসরায়েলি দখলদারদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করায় দুশ্চিন্তায় আছেন ফিলিস্তিনিরাও।
ফিলিস্তিন স্বাধীনতা সংগঠনের নির্বাহী কমিটির এক সদস্য আহমেদ মাজদালানি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, "ফিলিস্তিনের ইতিহাসে এটি একটি কালো দিন। এই চুক্তি আরব ঐক্যের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ফিলিস্তিনের জনগণ কাউকে যে কোনও কিছুর বিনিময়ে ইসরায়েলকে ছাড় দেওয়ার অনুমতি দেয়নি।"
১৯৪৮ সালে ইসরাইলের স্বাধীনতার ঘোষণার পর ইসরাইল ও আরবের মধ্যে এটি তৃতীয় চুক্তি। এর আগে মিসর ১৯৭৯ সালে ও জর্ডান ১৯৯৪ সালে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল।