ব্যবহৃত পিপিই থেকে জৈব-জ্বালানি!
ব্যবহৃত পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট) ফেলে না দিয়ে বা নষ্ট না করে তা বায়োফুয়েলে রূপান্তরিত করা যেতে পারে। সম্প্রতি একটি গবেষণাপত্রে এমনটাই দাবি জানালেন ভারতের একদল বিজ্ঞানী।
'বায়োফুয়েলস' নামক জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষায় বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, 'পাইরোলাইসিস' নামক উচ্চ তাপমাত্রার রাসায়নিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করে অব্যবহৃত কয়েক কোটি পিপিই-র প্লাস্টিক থেকে জৈব জ্বালানি বা বায়োফুয়েলে রূপান্তর করা যেতে পারে।
ভারতের উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের 'দ্য ইউনিভার্সিটি অফ পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এনার্জি স্টাডিজের' শীর্ষস্থানীয় লেখিকা স্বপ্না জৈন তার একটি বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, 'জৈব ক্রুডে রূপান্তরিত এক ধরণের সিন্থেটিক জ্বালানি পরিবেশের উপর কোনও মারাত্মক প্রভাব ফেলবে না। বরং এটি মানবজাতি তথা পরিবেশে নতুন এক শক্তির উৎস হবে।'
এর ফলে কিছুটা হলেও আমাদের শক্তির চাহিদা মিটবে। আর্থিক সংকটও কাটবে। গবেষকদের মতে, এই প্লাস্টিকের উপকরণগুলো যখন পরিবেশে ফেলে দেওয়া হয় তখন সেগুলো নানাভাবে মাটিতে অথবা পানিতে গিয়ে পড়ে। আর এই প্লাস্টিকে এমন কিছু উপাদান থাকে যেগুলো পরিবেশ থেকে পুরোপুরি নির্মূল হতে কয়েক দশক লেগে যায়।
সেক্ষেত্রে এই ব্যবহৃত পিপিই বাইরে ফেলে পরিবেশ দূষণ না ঘটিয়ে তা থেকে বায়োফুয়েল উৎপাদন করলে তা মানুষের প্রয়োজনে লাগবে। এতে যেমন পরিবেশের কোনও ক্ষতি হবে না তেমনই জৈব শক্তির চাহিদা মেটানো যাবে। গবেষণায় বিজ্ঞানীরা পিপিই এবং পলিপ্রোপিলিনের সামগ্রীগুলোকে জৈব জ্বালানিতে রূপান্তরিত করেছে।
তারা পলিপ্রোপিলিনের কাঠামো, পিপিই'এর উপযুক্ততা এবং প্লাস্টিকের উপাদানগুলোকে পুনর্ব্যবহার করার পদ্ধতিও দেখিয়েছেন। তাদের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে, বিজ্ঞানীরা পিপিই বর্জ্যকে পাইরোলাইসিস পদ্ধতিতে ব্যবহার করে জ্বালানিতে রূপান্তরিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
পাইরোলাইসিস পদ্ধতিটি হল, অক্সিজেন ছাড়াই এক ঘন্টার জন্য ৩০০ থেকে ৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্লাস্টিকের অণুরকাঠামো ভাঙার একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া। বিশেষজ্ঞদের দাবি, পাইরোলাইসিস হল সর্বাধিক ব্যবহৃত রাসায়নিক পদ্ধতি। যার মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে বায়ো-অয়েল উৎপাদন করার ক্ষমতা।
গবেষকদের আরও দাবি, পিপিই'র বর্জ্য থেকে আমাদের শক্তির চাহিদা অনেকটাই মিটবে। এছাড়াও পিপিই কিট থেকে তরল জ্বালানির সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে। প্লাস্টিক থেকে উৎপাদিত তরল জ্বালানি পরিষ্কার এবং জীবাশ্ম জ্বালানিই সমতুল্য।