ভারতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধের ইঙ্গিত দিয়েছেন মোদি: শশী থারুর
২০১৪ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোনো সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেননি মোদি। তবে অনলাইন সামাজিক গণমাধ্যম ব্যবহার করে সমর্থকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ নিয়ে তিনি সব সময়েই গর্ব করেন।
তাই এক সপ্তাহের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার বাদ দেবেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এমন এক টুইট বার্তায় অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন।
গত সোমবার রাতে করা ওই টুইটে মোদি বলেন, 'আমি আজ থেকে নিজের ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ রাখার কথা ভাবছি। বাকিটা আপনাদের পড়ে জানাব।'
মোদির সাম্প্রতিক টুইটের পর প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা শশী থারুর পাল্টা এক টুইট করেছেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিত্যাগের ঘোষণা জনগণকে উদ্বিগ্ন করেছে বলে জানান।
'প্রধানমন্ত্রীর এমন আকস্মিক ঘোষণায় অনেকে বিস্মিত হয়েছেন। অবশ্য এটা পুরো দেশে সামাজিক যোগাযোগের অনলাইন মাধ্যম নিষিদ্ধ করার পূর্ব সঙ্কেত হতে পারে। কারণ নরেন্দ্র মোদি ভালো করেই জানেন ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছাড়াও সামাজিক গণমাধ্যম অহিংসা ও সম্প্রীতির বন্ধন তৈরি করে' লিখেছেন থারুর।
শশী থারুর একাই নন, উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটির আরও অনেক বিশিষ্ট নাগরিক। তারা সকলে একই আশঙ্কা করছেন।
এদের মাঝে আছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সাবেক বিজেপি প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির প্রাক্তন সহকারি সুধেন্দ্র কুলকার্নি।
নিজ টুইটে তিনি 'ভারতীয় জনগণের মুক্তমত প্রকাশের ওপর বড় ধরনের আঘাত' আসতে চলেছে বলে হুঁশিয়ার করেন।
'ভারতীয়দের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর বড় আঘাত আসতে চলেছে, এটা গণতন্ত্রের ওপর পরিবর্তী আক্রমণেরও ইঙ্গিত। আসন্ন ঝড় মোকাবেলায় সকলের প্রস্তুত থাকা উচিত' টুইট বার্তায় লেখেন সুধেন্দ্র।
অবশ্য অনেকে বিষয়টিকে অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন। তারা মনে করছেন আগামী ৮ মার্চ নারী দিবসের সঙ্গে মোদির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ত্যাগের কোনো সংযোগ থাকতে পারে।
কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী অবশ্য নিজ টুইটে সামাজিক গণমাধ্যম নয় বরং মোদির প্রতি হিংসা প্রচার বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুসরণকারীদের সংখ্যা বিচারে বিশ্ব নেতাদের মাঝে শীর্ষ অবস্থানে নরেন্দ্র মোদি। টুইটারে তার অনুসারি ৫ কোটি ৩৩ লাখ, ফেসবুকে ৪ কোটি ৪০ লাখ, ইনস্টাগ্রামে ৩ কোটি ৫২ লাখ এবং ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৪৫ লাখ।
তাই আকস্মিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ত্যাগের মাধ্যমে মোদি বড় কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছেন এমন আশঙ্কা মোটেই অমূলক নয় ।