ভারতে হিমালয়ের হিমবাহ ভেঙে তুষারধস, হতাহত শতাধিক ছাড়ানোর আশঙ্কা
হিমবাহ ভেঙে তুষারধস নামল ভারতের উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায়। প্রবল পানির তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হৃষিগঙ্গা নদীর উপর অবস্থিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। হতাহতের সংখ্যা কমপক্ষে ১০০-১৫০ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিরও আশঙ্কা করছে উদ্ধারকারী দল।
হরিদ্বার পর্যন্ত সমস্ত জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ জোশীমঠের কাছে হিমালয়ের হিমবাহ ভেঙে পড়ে। রেনি গ্রামের তুষারধসের জেরে ধৌলিগঙ্গার জলস্তর হু হু করে বেড়ে গিয়েছে। ক্ষতি হয়েছে হৃষিগঙ্গার ওপর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের। নদীর দু'ধারে অবস্থিত অসংখ্য বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
একটি অংশের দাবি, বিপর্যয়ের সময় সেখানে কয়েকজন কাজ করছিলেন। তারা পানির তোড়ে ভেসে গিয়েছেন। তবে সরকারিভাবে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। অবশ্য, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যসচিব ওমপ্রকাশ সংবাদসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, হতাহতের সংখ্যা ১০০-১৫০ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তারইমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ)। ইন্দো-টিবেটিয়ান বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) দুটি দলও উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। দেরাদুন থেকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) তিনটি দল রওনা দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানিয়েছেন, ভারতীয় বায়ুসেনার চপারে করে আরও তিনটি দল সন্ধ্যার মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছাবে।
এএনআইকে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ সিং রাওয়াত জানান, অলকানন্দা নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দাদের উদ্ধার করা হচ্ছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ভাগীরথী নদীর প্রবাহ রুদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। অনকানন্দ নদীতে যাতে পানি যেতে না পারে, সেজন্য শ্রীনগর এবং হৃষিকেশ বাঁধ ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলের উদ্দেশে তিনি ইতিমধ্যে রওনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ) মুখপাত্র প্রবীণ অলোক বলেন, 'রোববার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তপোবনের কাছে হিমবাহে ফাটল ধরে হড়পা বান আসে। তার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প।'
সঙ্গে তিনি যোগ করেন, 'সকাল ১১টা নাগাদ স্থানীয় এসডিআরএফ দলকে খবর দেওয়া হয়। উদ্ধারকাজের জন্য দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তিনটি দল। প্রতিটি দলে মোটামুটি ৩০ জন আছেন। তুষারধসের ফলে নদীতে প্রচুর পরিমাণে নোংরা এবং ধ্বংসাবশেষ জড়ো হয়েছে। কারও প্রাণহানি এবং কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না, তা এখনো বোঝা যায়নি।'