ভ্যাকসিন আর বোতলজাত পানির সুবাদে আম্বানিকে হটিয়ে এশিয়ার নতুন শীর্ষ ধনী চীনা ধনকুবের
এশিয়ার শীর্ষতম ধনীতে পরিণত হয়েছেন টিকা উৎপাদক সংস্থা আর বোতলজাত পানীয়ের চীনা ব্যবসায়ী জং শানশান। চলতি বছর তার সম্পদ বেড়েছে ৭শ' কোটি মার্কিন ডলার। ফলে বিত্তের জৌলুসে পেছনে ফেলেছেন ভারতের মুকেশ আম্বানি এবং স্বদেশীয় জ্যাক মা'র আধিপত্য।
শানশানের মোট সম্পদমূল্য এখন ৭৭.৮ বিলিয়ন ডলার। এবং ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুসারে তিনি এখন বিশ্বের ১১তম ধনাঢ্য ব্যক্তি।
'লোন উলফ' নামে খ্যাত শানশানের কর্মজীবন আর ব্যবসার ধরনে আছে নানামুখী বৈচিত্র। গণমাধ্যম, মাশরুমের খামার আর স্বাস্থ্যসেবা খাতেও করেছেন বিনিয়োগ।
২০২০ সালের এপ্রিলে তিনি নিজ মালিকানাধীন বেইজিং ওয়ানতাই বায়োলজিক্যাল নামক টিকা উৎপাদক কোম্পানিকে চীনা পুঁজিবাজারে নিবন্ধনের উদ্যোগ নেন। তিন মাস পর একই পদক্ষেপ নেন তার বোতলজাত পানীয় কোম্পানি নোংফু স্প্রিং- এর ক্ষেত্রে। ওই সময় কোম্পানিটি হংকং বাজারে প্রাথমিক শেয়ার ছাড়ে।
এরপর যেন বাড়তেই থাকে শানশানের সম্পদ্গতি । বাজার মূল্যায়ন আর নতুন পুঁজির সুবাদে পেছনে ফেলেন চীনের সেরা ধনী এবং আম্বানির আগে এশিয়ার সেরা ধনী থাকা জ্যাক মা'কে।
চীনের মূল ভূখণ্ডে তুমুল জনপ্রিয় নোংফু ব্রান্ডের বোতলজাত পানি এবং অন্যান্য পানীয়। হংকং বাজারে তাই এর আইপিও পরিণত হয় হটকেকে, পুঁজিলগ্নির আগ্রহে বাজারে আসার পর থেকে সেকেন্ডারি বাজারে কোম্পানির বাজার মূল্যায়ন ফুলেফেঁপে ১৫৫% বেড়েছে।
অন্যদিকে, মহামারী অবসানের চেষ্টায় দরকার বিপুল পরিমাণ টিকার ডোজ। বেইজিং ওয়ানতাই বায়োলজিক্যাল নিজেরাও একটি কোভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকা তৈরি করেছে, তাই সংস্থাটি দেখে আরও বেশি ঊর্দ্ধগতি। এর সার্বিক মূল্যায়ন বেড়েছে অবিশ্বাস্য ২,০০০ শতাংশ!
ব্লুমবার্গের মতে, এশিয়ার সেরা ধনীর কাতারে শানশানের নাটকীয় উত্থান ইতিহাসের অন্যতম দ্রুত সম্পদশালী হওয়ার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।
ধনীরাই আরও ধনী হচ্ছেন:
মহামারীর মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ সম্পদশালীদের বিত্ত আরও বেড়েছে। তাদের মধ্যে প্রধান হলেন অ্যামাজন মুখ্য নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস।
এশিয়ার সদ্য শিরোপা হারানো আম্বানিও তার রিলায়েন্স শিল্প সংস্থাকে প্রযুক্তি আর ই- কমার্স উদ্যোগে জড়িয়ে লাভ করেছেন ১৮.৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি সম্পদ। তার মোট বিত্ত এখন ৭৬.৯ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ সিংহাসন হারালেও শানশানের ঘাড়ে নিঃশ্বাস নেওয়ার মতোই দূরত্বে তিনি।
সদ্য বিদায় নেওয়া বছরের শুরুতে ফেসবুক ইঙ্ক আম্বানির মোবাইল ইন্টারনেট কোম্পানি- রিলায়েন্স জিও'তে ৫৭০ কোটি ডলার বিনিয়োগের কথা জানায়। এসব মিলিয়ে বাড়তে থাকে মুকেশের বৈভব, তবে বছরশেষে তাকে হার মানতে হলো শানশানের কাছে।
চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্বৈরথে বছরটা অবশ্য ভালো যায়নি জ্যাক মা'র, তার সম্পদ গত অক্টোবরে ছিল ৬১.৭ বিলিয়ন ডলার। চীনা নিয়ামক সংস্থার বিরোধিতার মুখে তার আলীবাবা সাম্রাজ্য নাজুক অবস্থায় পড়ায়, মা'র সম্পদমূল্য কমতে থাকে। তার কিছুদিন পরেই মা'কে ছাড়িয়ে চীনের সেরা ধনীর শিরোপা পান শানশান। এবার তিনি এশিয়ার শীর্ষ ধনীও হলেন।
- সূত্র: বিবিসি