মাস্ক উৎপাদনে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন দেড়শ তিউনিশিয় কর্মী
উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিশিয়ায় গত শুক্রবার পর্যন্ত ৬ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ২২৭ জন। আর গত রোববার থেকেই দেশটি লকডাইনে আছে।
এমন পরিস্থিতিতে অধিকাংশ মানুষ তাদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গেই বাড়িতে অবস্থান করতে চাইবেন এটাই স্বাভাবিক। চাইবেন তাদের প্রয়োজনের দিকে নজর দিতে।
কিন্তু এর ব্যতিক্রম ঘটিয়ে তিউনিশিয়ার একটি চিকিৎসা সরঞ্জাম তৈরির কারখানায় কর্মরত দেড়শ শ্রমিক এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
এদের অধিকাংশই আবার নারী। দেশজুড়ে সকল মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় মাস্ক জোগান দিতে তারা নিজ কর্মস্থল কারাখানাটিতেই অবস্থান করছেন। এবং প্রতিদিন উৎপাদন করছেন প্রায় ৫০ হাজার মাস্কসহ অন্যান্য সুরক্ষা সরঞ্জাম।
তাদের এই আত্মত্যাগ লকডাউনের মাঝেও দেশজুড়ে ব্যাপক দেশাত্মবোধের সাড়া ফেলেছে বলে বিবিসিকে জানান তাদের ম্যানেজার হামজা আলোইনি।
সামাজিক সংস্পর্শ যখন প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস বিস্তারের কারণ হতে পারে তার মাঝেই তাদের এই আত্মত্যাগ সত্যিই এক বিরল উদাহরণ।
খাওলা রেভি নামের এক নারী কর্মী জানান, পরিবারের সকলকেই খুব মনে পড়ছে, তবে সহকর্মীদের হাসিঠাট্টা আর সঙ্গ আমাকে এসব দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে সাহায্য করছে।
খাওলা বলেন, আমার স্বামী এবং ১৬ বছরের মেয়ে আমার এই কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কথা জেনেও আমাকে অকুণ্ঠ সমর্থন ও প্রেরণা দিয়েছে।
করোনার আগে কারখানায় উৎপাদিত চিকিৎসা সরঞ্জাম বিদেশে রপ্তানি করা হতো। তবে এখন দেশের স্বাস্থ্যখাতের চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যেই এটি চালু আছে।
শুধু উৎপাদন কর্মীরা নন, তাদের সঙ্গে আরও আছেন কয়েকজন বাবুর্চি এবং চিকিৎসক। রাজধানী তিউনিসের দক্ষিণে অবস্থিত এই কারখানায় ১১০ জন নারী এবং ৪০ জন পুরুষ কর্মীর জন্য থাকার আলাদা কর্মী নিবাসও আছে।
এসব কর্মী যেন স্বচ্ছন্দে কাজ করতে পারেন সেজন্য তাদের একমাসের প্রয়োজনীয় সকল খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য পণ্যের মজুদ করে রেখেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।