স্কুল নাটকে ‘মোদী বিরোধী’ সংলাপ, পুলিশের জেরার মুখে শিক্ষার্থীরা
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে দেশদ্রোহের অভিযোগে স্কুল শিক্ষার্থীদের জেরা করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও এক অভিভাবককে।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ওই স্কুলে একটি নাটক হয়েছিল। সেই নাটকের কয়েকটি সংলাপ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া হয়েছে, যেগুলো দেশদ্রোহী বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন এক ব্যক্তি। এর প্রেক্ষিতে গত ছদিন ধরে স্কুলের শিক্ষার্থীদের টানা জেরা করছে রাজ্যের পুলিশ।
দেশদ্রোহের অভিযোগে ইতোমধ্যেই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা এবং একটি মুসলিম ছাত্রের মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গত ২১ জানুয়ারি কর্নাটকের বিদারে শাহিন প্রাইমারি অ্যান্ড হাইস্কুলে চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মিলে সিএএ বিরোধী একটি নাটক মঞ্চস্থ করে। নাটকের কয়েকটি সংলাপ ‘দেশদ্রোহী’ মনে করায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সমাজকর্মী নীলেশ রক্ষাল। এই অভিযোগ পেয়ে ইউনিফর্ম পরে দুই মহিলা পুলিশকর্মী ও সাধারণ পোশাকে এক পুরুষ পুলিশকর্মী স্কুলে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ওই নাটক সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জেরা করা হয় ৯ বছরের এক শিশুকেও।
নাটকের একটি লাইনকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্কুলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তৌসিফ মাদিকেরি। নাটকের একটি ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, একটি শিশু আর একজনকে বলছে, ‘সরকার মুসলিমদের বলছে ভারত ছেড়ে চলে যেতে।’ জবাবে অপর শিশু বলছে, ‘মা, মোদী বলছেন, আপনার বাবার ও ঠাকুরদার তথ্য দেখাতে হবে। নইলে তিনি আমাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলবেন।’ সেই সময় আর এক শিশুকে বলতে শোনা যায়, ‘কেউ তথ্য দেখতে চাইলে, তাকে চটিপেটা করো।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শাহিন স্কুলের অভিভাবকরা। এক অভিভাবককের কথায় ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বা প্রভাবশালীরা বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করলে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। অথচ, সিএএ-এর প্রতিবাদে একটি বাচ্চার মন্তব্যকে ঘিরে কত ঘটনা ঘটছে।’ আরেক অভিভাক বলেন, ‘২১ তারিখের ঘটনা কীভাবে দেশদ্রোহীতা হতে পারে তা বুঝতে পারছি না। ৯-১০ বছরের শিশু সিএএ বিরোধী কথা বললে কিভাবে তা জাতীয়তাবাদ বিরোধী হতে পারে?’