১ কেজি কলার দাম ৪৫ মার্কিন ডলার! চরম খাদ্য সংকটে উত্তর কোরিয়া
নিজ দেশে চরম খাদ্য সংকটের ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন। শাসকগোষ্ঠী সমাজতন্ত্রী দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের এক বৈঠকে তিনি বলেন, "দেশে মানুষের খাদ্যাভাব চরম আকারে রূপ নিচ্ছে।"
গেল বছরের এক প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি খাত উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সম্প্রতি দেশটির খাদ্য সংকট নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত উ. কোরিয়া বিষয়ক গণমাধ্যম- এনকে নিউজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে কলা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ মার্কিন ডলার কেজিতে। এমন চড়া মূল্য সাধারণ উ. কোরিয়দের সাধ্যের ধারেকাছেও নেই।
উ. কোরিয়ার প্রধান বাণিজ্য অংশীদার চীন। কিন্তু, গেল বছর কোভিড-১৯ মহামারি হানা দেওয়ার পর দেশটি চীনের সঙ্গে নিজ সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। এতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেও ব্যাপক ধস নামে। অথচ, চীন থেকেই খাদ্য, জ্বালানি ও সার আমদানির ওপর নির্ভরশীল দেশটি।
এদিকে পরিমাণু কর্মসূচির কারণে নানাবিধ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত উ. কোরিয়া।
এই অবস্থায় চলতি সপ্তাহে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে শাসকদল ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে খাদ্য সংকট নিয়ে মুখ খোলেন কিম। বৈঠকে কৃষিখাতের সংকট স্বীকার করলেও শিল্পোৎপাদন এক-চতুর্থাংশ বৃদ্ধির দাবি করেন তিনি।
কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বেশ কয়েকদিন ধরে চলবে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের গতি-প্রকৃতি নিয়ে আলোচনাও হতে পারে। তবে এব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
এদিকে খাদ্য সংকট নিয়ে কিমের স্বীকারোক্তি উ. কোরিয় নেতৃত্বের ক্ষেত্রে বিরল ঘটনা। তবে এর আগে কিম নিজের গৃহীত অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টিও স্বীকার করেছেন।
এব্যাপারে, বিবিসির বিশ্লেষক লরা বিকার বলেছেন, কিম তার পিতার পর ক্ষমতা গ্রহণ করার সময়ে, জনগণকে সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সবার পাতে মাংস পৌঁছে দেওয়াসহ বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথাও বলেন তিনি। কিন্তু, সেসব অঙ্গীকার পূরণে ব্যর্থ হয়ে এখন তিনি বাস্তবতা মেনে নিয়ে জনগণকে আরও কঠোর পরিশ্রমের তাগিদ দিচ্ছেন।
- সূত্র: বিবিসি