‘নেট জিরো’ কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্য প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত
'নেট জিরো' কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্য ঘোষণার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে গ্রিন হাউজ নিঃসরণে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে থাকা দেশ ভারত।
দেশটি জানিয়েছে, কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রার বিপজ্জনক বৃদ্ধি এড়াতে একটি যথাযথ উপায় বের করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আগামী সপ্তাহে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে আয়োজিত হতে যাচ্ছে কোপ২৬ জলবায়ু সম্মেলন। প্রায় ২০০ টি দেশের প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে যোগ দেবেন। ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির অধীনে আলোচিত বৈশ্বিক উষ্ণতা বিষয়ক বিপর্যয় মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা জোরদারে আলোচনা করবে ১২ টি দেশ।
এই সম্মেলনে কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার জন্য চাপের মুখে রয়েছে ভারত। দেশটি ঠিক কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্বের সাথে নিচ্ছে, সে বিষয়ে আলোচনার জন্য এ সম্মেলনে যোগ দেবেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
২০৫০ সালের মধ্যে বা তার কাছাকাছি সময়ে কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করতে যাচ্ছে সম্মেলনে অংশ নিতে যাওয়া বাকি দেশগুলো।
তবে ভারতের পরিবেশ সচিব আর. পি. গুপ্তা সাংবাদিকদের বলেন, নেট জিরো ঘোষণা জলবায়ু সংকটের সমাধান নয়। "শূন্য কার্বন নিঃসরণে পৌঁছানোর আগে বায়ুমণ্ডলে কী পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হবে সেই বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ," বলেন তিনি।
এদিকে, কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে ২০৫০ সালের একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে দেশগুলো এমন পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত করবে যা বন, ফসল, মাটি এবং 'কার্বন ক্যাপচার' প্রযুক্তি দ্বারা শোষিত হতে পারে।
তাদের পাশাপাশি, চীন এবং সৌদি আরব ২০৬০ সালের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু সমালোচকদের মতে, বাস্তব পদক্ষেপ ছাড়া এগুলো মূলত অর্থহীন।
ভারত সরকারের গণনার উদ্ধৃতি দিয়ে গুপ্তা জানান, এখন থেকে শুরু করে ২০৫০ সাল পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলে ৯২ গিগাটন কার্বন নিঃসরণ করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রে এ পরিমাণ ৬২ গিগাটন কার্বন। এছাড়া, এই সময়ের মধ্যে চীন নিঃসরণ করবে ৪৫০ গিগাটন কার্বন।
ভারতের পরিবেশ মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব বলেন, ২০১৫ প্যারিস চুক্তিতে উল্লেখিত লক্ষ্যগুলো অর্জনের পথে ছিল ভারত। এমনকি, পরিকল্পনাগুলো সংশোধনের অবকাশও রয়েছে তাদের।
২০০৫ সালের তুলনায় ২০৩০ সালে জিডিপি-প্রতি কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল ভারত। ২০১৬ সালের মধ্যে দেশটির কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ ২৪ শতাংশ কমেছে।
কিছু পরিবেশ বিশেষজ্ঞের মতে, প্রয়োজনীয় অর্থ এবং নতুন প্রযুক্তির অ্যাক্সেসের ভিত্তিতে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারে ভারত।
- সূত্র: সিএনএন