১০ বছরে কফির দাম সর্বোচ্চ, পূর্বাভাস দিতে ব্রাজিলে বিশেষজ্ঞরা
দশ বছরে কফির দাম এখন সর্বোচ্চ। ২০২২ সালের ফসলের পরিস্থিতি কেমন হতে যাচ্ছে তা দেখতেই ব্রাজিলের মিনাস গেরাইস রাজ্যে ছুটছেন কমোডিটি ট্রেডিং হাউজের কফি বিশেষজ্ঞরা।
এ বছর সামগ্রিক কৃষি পরিস্থিতি বেশ শোচনীয় ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কফি উৎপাদনকারী এ দেশটিতে। সাম্প্রতিক খরা ও এরপর তুষারপাতের পর প্রায় ২০ শতাংশ কফি ফসল নষ্ট হয়ে যায়, এরফলে ঝুঁকিতে পড়েছে ভবিষ্যত উৎপাদনও। এরপরই কফির দাম বাড়তে থাকে। ফসলের প্রকৃত অবস্থা বোঝা যাবে জানুয়ারির শেষদিকে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কোম্পানি এলএলসি'র চিফ এনালিস্ট রায়ান ডেলানি এ বিষয়ে বলেন, "খরা আর তুষারপাতের পর বৃষ্টির কারণে ভালো ফুল ধরেছে। এখন দেখার বিষয় ফুল কী পরিমাণ ফল (কফি চেরি) ধরে।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ও পূর্বাভাস দিতে ব্রাজিলে এসে গাছের প্রতি শাখায় গড়ে কী পরিমাণ চেরি ধরেছে তা গুনছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন পর্যন্ত প্রকাশিত পূর্বাভাসগুলোর পার্থক্যও অনেক। সফট কমোডিটি অ্যানালিসিস্ট জুডি গেন সম্প্রতি ব্রাজিলে গিয়েছিলেন আরেকজনের অ্যানালিস্ট শন হ্যাকেটের সঙ্গে। তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, অ্যারাবিকা কফি উৎপাদন হতে পারে ৩৬ মিলিয়ন ব্যাগ। অন্যান্য পূর্বাভাসের চেয়ে এটিই সবচেয়ে কম।
ব্রাজিলের কৃষি অর্থনীতিবিদ জোনাস ফেরারেসো জানান, অক্টোবরে বৃষ্টির পর ভালোই ফুল ধরেছিল, কিন্তু ফুল থেকে ফল পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম।
"অনেক গাছেই ফল আসেনি, কিন্তু নতুন পাতা গজাচ্ছে। বছরের শুরুতে খরার কারণেই সম্ভবত অস্বাভাবিকতা দেখা দিয়েছে," বলেন তিনি।
অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এরচেয়ে বেশি আশাবাদী। রাবোব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী ৬৬.৫ মিলিয়ন ব্যাগ ফসল পাওয়া যেতে পারে। এরফলে ২০২২ সালে পাউন্ড প্রতি দাম কমে আসতে পারে ২ ডলার। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কারডিফ কফির পূর্বাভাসে ৬৩.১ মিলিয়ন ব্যাগের কথা বলা হয়েছে।
মিনাস গেরাইসের প্যাট্রোসিনিয়া এলাকায় ২২০ হেক্টরের ফার্ম পরিচালনা করেন পাওলো আরমেলিন। এ অঞ্চলে তুষারপাত হয় সবচেয়ে বেশি। তিনি জানান, তাঁর ২০ শতাংশ জমিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আগামী বছর এখান থেকে কোনো ফসল মিলবে না।
"অন্তত আমার ফার্মে ফুল ধরা আর ফুল থেকে ফল ধরা স্বাভাবিক ছিল।"
- সূত্র: রয়টার্স