মস্তিষ্কের সংকোচন ও টিস্যু ক্ষয়ের কারণ হতে পারে কোভিড-১৯: গবেষণা
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ একজন ব্যক্তির মস্তিষ্ক সংকোচনের কারণ হতে পারে, এমনকি আবেগ ও স্মৃতিশক্তি নিয়ন্ত্রণ করে এমন অংশের গ্রে ম্যাটার কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ঘ্রাণশক্তি নিয়ন্ত্রণকারী অংশের ক্ষতি করতে পারে।
কোভিড-১৯-এর জেনেটিক্স নিয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় গবেষণা এটি। কোভিডের গুরুতর সাথে যুক্ত ১৬টি নতুন জেনেটিক ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে এই গবেষণায়।
মস্তিষ্কের গবেষণায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৫১ থেকে ৮২ বছর বয়সী ৭৮৫ জন ব্যক্তির ব্রেইন স্ক্যানের ফলাফল বিশ্লেষণ করেন। মহামারি শুরুর আগের ও পরের ফলাফলের মধ্যে তুলনা করেন তারা। এদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ ব্যক্তিই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
৩৮৪ জন অসংক্রমিত ব্যক্তির স্ক্যানের সাথে তুলনা করে দেখা যায়, যাদের করোনা ধরা পড়েছিল তাদের মস্তিষ্কের সামগ্রিক সংকোচনের পাশাপাশি গ্রে ম্যাটারের সংকোচনের হারও বেশি।
গবেষণায় দেখা যায়, যাদের কোভিড ছিল তারা ঘ্রাণশক্তি নিয়ন্ত্রণকারী অঞ্চলের অতিরিক্ত ১.৮ শতাংশ অংশ হারিয়েছেন এবং সেরিবেলামের ০.৮ শতাংশ অংশ হারিয়েছেন।
মস্তিষ্কের বিশেষ অঞ্চলের টিস্যুর এই সংকোচন তাদের ঘ্রাণশক্তি এবং মানসিক দক্ষতা কমার কারণ হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয় গবেষণায়। উল্লেখ্য, মানসিক দক্ষতার পরীক্ষায় অসংক্রমিত ব্যক্তিদের তুলনায় কোভিডে সংক্রমিত ব্যক্তিদের স্কোর ছিল কম।
তবে নেচার জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মস্তিষ্কের এই পরিবর্তনের স্থায়ীত্ব জানতে আরও স্ক্যান করা প্রয়োজন।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর গোয়েনেল ডৌড বলেন, "মস্তিষ্ক মূলত প্লাস্টিকের মতো। অর্থাৎ এটি আবার সংগঠিত হতে পারে এবং নিজেকে কিছুটা নিরাময় করতে পারে, এমনকি বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও।"
ব্রিটেনে কোভিডের আলফা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ চলার সময় এই গবেষণাটি চালানো হয়। ফলে এতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগী থাকার সম্ভাবনা নেই।
এছাড়া, কোভিডের ভ্যাকসিন এক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলে কিনা সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেন নি গবেষকরা। তবে, ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি গত মাসে জানায়, ১৫টি গবেষণার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ভ্যাকসিন দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দীর্ঘ কোভিডের লক্ষণ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা অন্যান্যদের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান