চলছে ইউক্রেন যুদ্ধ: চেরনোবিলের সেরা ভদকা অ্যাটমিকের উৎপাদন থেমে নেই
শুরুটা 'চেরনোবিল মুনশাইন' দিয়ে। যেসব বিজ্ঞানী চেরনোবিল এক্সক্লুশন জোনে জন্মানো ফসল নিয়ে গবেষণা করছিলেন, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অবশিষ্ট কিছু শস্য থেকে অ্যালকোহল উৎপাদন করবেন।
ওই পরীক্ষানিরীক্ষাই পরিণত হয় এক সামাজিক উদ্যোগে। বিজ্ঞানীরা তৈরি করেন 'অ্যাটমিক' নামে এক মদ।
চেরনোবিলের পরিত্যক্ত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশে জন্মানো ঈষৎ তেজস্ক্রিয় ফল চোলাই করে যে স্পিরিট বানানো সম্ভব, তা দেখানোই ছিল এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য। এক্সক্লুশন জোন সংলগ্ন বঞ্চিত বাসিন্দারা এ উদ্যোগ থেকে লাভবান হতে থাকেন।
যে জায়গায় ফল ফলানো হয়, তা এখন রুশ বাহিনীর দখলে। রুশ বাহিনীর উপস্থিতি সত্ত্বেও এখানকার মদ উৎপাদনকারী কোম্পানি দুঃসাহসী এক পদক্ষেপ নিয়েছে। ইউক্রেনের শরণার্থীদের সাহায্যার্থে লাভের টাকা দান করার জন্য আরও দুটো 'প্রিমিয়াম ড্রিঙ্ক' বাজারে আনছে কোম্পানিটি।
এক্সক্লুশন জোনের ওপর ৩০ বছরের গবেষণা শেষে অ্যাটমিক প্রকল্প চালু করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। এই প্রকল্পের সুবাদে এই দূষিত এলাকার বাসিন্দারা নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারছিল। ১৯৮৬ সালের বিপর্যয়ের পর বৃহৎ এক অঞ্চল পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। সেই পরিত্যক্ত অঞ্চলকে ফের কর্মচঞ্চল ও বাসযোগ্য করার পথে এই মদের উৎপাদন ছোট হলেও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।
অ্যাটমিক টিমের সদস্য ও পরিবেশ গবেষক কিরিলো কোরিচেনস্কি বিবিসিকে বলেন, 'আমরা যেখানে ফল ফলাতাম, সেই গোটা এখন রুশ বাহিনীর দখলে।'
হামলার প্রথম কয়েক দিনের মধ্যেই চেরনোবিলের বর্তমানে পরিত্যক্ত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দখল নিয়ে নেয় রুশ বাহিনী।
কিরিলো জানান, রুশ বাহিনী গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের বাগানে ট্যাঙ্ক রাখছে।
অ্যাটমিকের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক জিম স্মিথ বলেন, এক্সক্লুশন জোনের বাসিন্দাদের ৩৫ বছর ধরে যন্ত্রণা পোহাতে হয়েছে। এখন আরও বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হবে তাদের।
অ্যাটমিক প্রকল্প—এবং এক্সক্লুশন জোনের আশপাশে যারা ফল ফলায় ও এর ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত।
- সূত্র: বিবিসি