পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পদত্যাগ করছেন?
পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে গৃহীত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর অনাস্থা প্রস্তাব। ভোটাভুটির বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) থেকেই আইনপ্রণেতাদের বিতর্ক শুরু হওয়ার কথা। আর ভোট হতে পারে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। তার আগেই ইমরানের সরকারকে সমর্থন দেওয়া রাজনৈতিক দল মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম-পি) পক্ষত্যাগ করে বিরোধী দলগুলোর সাথে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। এতে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে নিশ্চিত হারের মুখে পড়লেন ইমরান। ভোটাভুটিতে হারাতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রীত্ব।
বুধবার (৩০ মার্চ) কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগের কথা জানান এমকিউএম-পি'র নেতৃবৃন্দ। ফলে জাতীয় পরিষদে ইমরানের তেহরিক-ই-ইনসাফের সরকার কোণঠাসা হয়ে পড়লো।
এমকিউএম বিরোধীদের সাথে যোগ দেওয়ায় জাতীয় পরিষদের নিম্নকক্ষে সম্মিলিত বিরোধী জোটের আসন সংখ্যা ১৭৭টিতে পৌঁছেছে। অনাস্থা প্রস্তাব পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ আইনপ্রণেতার সমর্থন। অর্থাৎ, দরকারের চেয়ে পাঁচটি বেশি ভোট এখন বিরোধীদের হাতে।
ইসলামাবাদে দলের সিদ্ধান্তের কথা সম্মিলিত বিরোধী জোটের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে ঘোষণা করেন এমকিউএম-পি'র দলীয় কনভেনার খালিদ মকবুল সিদ্দিকী।
পরিবর্তিত বাস্তবতায় আজ বুধবারই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল ইমরানের। একথা জানিয়েছিলেন, তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের জ্যেষ্ঠ নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ। তাতে অনেকেই ধারণা করেন, ভোটাভুটির আগেই সম্মানজনক পদত্যাগের ঘোষণাই দেবেন পাকিস্তানী প্রধানমন্ত্রী।
কিন্তু, পরবর্তীতে তার দলের আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা ফয়সাল জাভেদ জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের ওই পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান। তবে এর পেছনে কোনো কারণ ব্যাখ্যা করেননি তিনি।
পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীও ইমরান পদত্যাগ করবেন -এমন গুঞ্জনকে নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, তিনি (ইমরান) শেষ বলটি পর্যন্ত ময়দানে লড়বেন।
বুধবার পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া এবং সামরিক গোয়েন্দা শাখার মহাপরিচালক লে. জেনারেল নাদিম আঞ্জুম ইসলামাবাদে ইমরান খানের বাসভবনে আসেন। এরপরই তার সরকারের পক্ষ থেকে এমন বিবৃতি আসতে থাকে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের নিম্নকক্ষে মোট আসন সংখ্যা ৩৪২। এমকিউএম এর সমর্থনে মোট ১৭৯ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জোট সরকার গঠন করে পিটিআই। এমকিউএম পক্ষত্যাগ করায় এখন ইমরানের দলের আসন সংখ্যা ১৬৪টি রয়ে গেল।
অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষের বিরোধী দলগুলো হলো- পিএমএল-এন, পাকিস্তান পিপলস পার্টি, এমকিউএম, বালুচিস্তান আওয়ামী পার্টি এবং আরও কয়েকটি ছোটখাট দল।