চুরি যাওয়ার ২২ বছর পর ডারউইনের নোটবুক ফিরিয়ে দিয়ে গেল চোর!
চুরি যাওয়ার ২২ বছর পর রহস্যময়ভাবে ফিরে এল চার্লস ডারউইনের দুটি নোটবুক। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে নোটবুকগুলো।
চামড়ায় বাঁধানো ছোট্ট নোটবুক দুটোর মূল্য কয়েক মিলিয়ন পাউন্ড। এছাড়া একটি নোটবুকে ডারউইনের 'ট্রি অভ লাইফ' স্কেচ আঁকা রয়েছে।
নোটবুক ফিরে পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান ড. জেসিকা গার্ডনার। তিনি জানিয়েছেন, নোটবইগুলো ভালো অবস্থায় আছে।
তবে পোস্টকার্ড সাইজের নোটপ্যাড দুটো কে ফিরিয়ে দিয়েছে, তা রহস্যই রয়ে গেছে। নোটবইগুলো একটি উজ্জ্বল গোলাপি রঙের গিফট ব্যাগে ভরে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে রেখে যাওয়া হয়।
গোলাপি খামে মোড়ানো ছিল নোটবুকগুলো। আর খামের ওপর লেখা ছিল ছোট্ট একটি বার্তা:
'লাইব্রেরিয়ান
হ্যাপি ইস্টার
এক্স।'
ড. গার্ডনারের অফিসের বাইরে সিসিটিভি নেই, লাইব্রেরির এমন একটি জায়গায় রেখে যাওয়া হয় নোটবুক দুটো।
প্যাকেজটা পাওয়ার পর কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তা খোলা হয়নি। পাঁচ দিন পর ওটা খোলার অনুমতি দেয় পুলিশ।
নোটবুক ফিরে পাওয়ার অনুভূতি জানাতে গিয়ে ড. গার্ডনার বলেন, ওগুলো ফিরে পাওয়ার আনন্দে তিনিসহ অনেকেই কেঁদে ফেলেছিলেন।
১৮৩০-এর দশকের শেষ দিকে গ্যালাপ্যাগোস দ্বীপ থেকে ফেরার পর নোটবুকগুলোতে লেখেন ডারউইন। একটি পাতায় তিনি এক গাছের ছবি আঁকেন, যা থেকে তিনি বিবর্তনবাদের তত্ত্ব প্রণয়নের অনুপ্রেরণা পান। ওই নোটবুকে তিনি প্রজাতির সম্ভাব্য কয়েকটি বিবর্তনের রেখাচিত্র আঁকেন।
নোটবুকগুলো সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ২০০০ সালের নভেম্বরে। ওই সময় ছবি তোলার জন্য লাইব্রেরির স্ট্রংরুম থেকে ওগুলো বের করা হয়েছিল।
এরপর ২০০১ সালে লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ বিশেষ বইগুলো স্থানান্তর করতে গিয়ে টের পায়, ডারউইনের নোটবুকগুলো হারিয়ে গেছে। পায়। দীর্ঘদিন ধরে তারা মনে করে আসছিল ওই ভবনের বইগুলোর ঠিকঠাক তালিকা করা হয়নি।
এর পরের দুই দশক বিবর্তনবাদের প্রবক্তা ডারউইনের নোটবুক দুটি খুঁজছিল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি। অবশেষে ২০২০ সালের নভেম্বরে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় বিবৃতি দিয়ে জানায়, নোটবুকগুলো সম্ভবত চুরি হয়ে গেছে।
অবশেষে হারানোর প্রায় দুই দশক পর কেমব্রিজ লাইব্রেরিতে ফিরে এল নোটবুক দুটো। কিন্তু ফিরে এলেও তুলে দিল অনেকগুলো প্রশ্ন। নোটবুকগুলো নিয়েছিল কে? আর ওগুলো ফিরিয়েই বা দিল কে?
- সূত্র: বিবিসি