গম সংকটে বিশ্ব: সরবরাহ শূন্যতা পূরণে ঝাঁপিয়ে পড়েছে দেশগুলো, দাম বাড়ছে হুহু করে
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের বয়স তখন এক মাসও পেরোয়নি, এরই মধ্যে ইউনাইটেড গ্রেইন করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী অগাস্টো বাসানিনি বিশ্বব্যাপী গমের বাজারে অস্থীতিশীলতার আভাস পেয়েছিলেন কিছুটা।
জাপানী ট্রেডিং কোম্পানি মিৎসুই অ্যান্ড কোং এর মালিকানাধীন ওয়াশিংটনভিত্তিক এই শস্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, সাধারণত প্রশান্ত মহাসাগর হয়ে এশিয়ার দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানি করে। তবে গেল মার্চে মিশরীয় এক আমদানিকারক ইউনাইটেড গ্রেইন করপোরেশনের কাছে ৬০ হাজার টন গমের বুকিং দেয়। জানা গেছে, গত দুই দশকেও এই আমদানিকারকের সঙ্গে কোনো ধরনের ব্যবসা হয়নি ইউনাইটেডের। বুকিং দেওয়া গম ওয়াশিংটনের ভ্যাঙ্কুভার বন্দর থেকে পানামা খাল ও আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে হাজার হাজার মাইল দূরে মিশরে গিয়ে পৌঁছাবে। এমনকি, মিশরে প্রধান শস্য সরবরাহকারী দেশ ইউক্রেন এবং রাশিয়া থেকে খরচও অনেক বেশি পড়বে এই আমদানি বাণিজ্যে।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্যের বাজারের উত্থান-পতনের ছোট্ট একটি চিত্র এটি। চলমান এই সংঘাত বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কৃষি উৎপাদনশীল অঞ্চলগুলোর একটি থেকে দরিদ্র দেশগুলোর খাদ্য সরবরাহকে হুমকির মুখে ফেলেছে ইতোমধ্যেই।
খাদ্যশস্যের বাজারে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের ফলে কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলকেন্দ্রিক যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণ করতে ভারত থেকে আয়ারল্যান্ড পর্যন্ত, বিভিন্ন দেশের সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কৃষকদের আরও ফসল ফলাতে অর্থ প্রদান করার পাশাপাশি গম স্থানান্তরের জন্য বেলগাড়িসহ অন্যান্য বিকল্প পথেরও অনুসন্ধান করছে তারা। উল্লেখ্য, কৃষ্ণ সাগর দিয়ে সারাবিশ্বে কয়েক মিলিয়ন টন শস্য আমদানি-রপ্তানি হয়।
বাঞ্জ লিমিটেড এবং আর্চার ড্যানিয়েলস মিডল্যান্ড কোং-এর মতো ট্রেডিং জায়ান্টগুলো ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য আমদানির জন্য ইতোমধ্যেই বিকল্প পথের সন্ধান শুরু করেছে। কারণ রুশ বাহিনীর আক্রমণে ওডেসার মূল বাণিজ্য বন্দরটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে ইউক্রেন। অন্যদিকে এডিএম, বায়ের এজি অ্যান্ড কারগিল ইঙ্কসহ আরও কিছু কোম্পানি আপাতত রাশিয়ায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
রাশিয়া এবং ইউক্রেন মিলিতভাবে বিশ্বব্যাপী গম রপ্তানির এক চতুর্থাংশেরও বেশি রপ্তানি করে। তাই বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এভাবে যুদ্ধ চলতে থাকলে নিকট ভবিষ্যতেই বড় ধরনের খাদ্য সংকটে পড়বে পুরো বিশ্ব। কারণ রাশিয়া এবং ইউক্রেন ব্যতীত বিশ্বের বাকি অঞ্চলের কৃষকদের পক্ষে এই শূন্যতা পূরণ কঠিন হয়ে উঠবে।
এদিকে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয় বর্তমান মৌসুমে গম বাণিজ্যের টার্গেট ৬ মিলিয়ন টন বা ৩ শতাংশ কমিয়েছে বলে জানা গেছে। কারণ যুদ্ধের কারণে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের রপ্তানি ইতোমধ্যেই কমেছে, যা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।
কৃষি বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গ্রীষ্মের মধ্যেও যদি সংঘাত ও অস্থিতিশীলতা এভাবেই চলতে থাকে, তাহলে ফসলের ঘাটতি খাবারের দাম বাড়াবে এবং মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার মতো অঞ্চলগুলোর খাদ্য নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করবে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, এ অঞ্চলের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে গত দশক ধরেই খাদ্যের দাম বেড়েছে। নতুন সংকট আগের সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে তাদের অনুমান।
এফএও বলছে, বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম ইতোমধ্যেই রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে, এবং ইউক্রেনে যুদ্ধের ফলে সরবরাহ ঘাটতির কারণে দাম আরও ২২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক জনসংখ্যার চাপ এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির কারণে সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বিশ্বে গমের বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউএসডিএ-এর তথ্য অনুসারে, কৃষকরা চলতি মৌসুমে প্রায় ৫৫০ মিলিয়ন একর জমি থেকে গম সংগ্রহ করেছেন, যা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যাপক উৎপাদনশীল ফসলে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের এফএও-এর মহাপরিচালক কু ডংইউ-এর মতে, গম বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশেরও বেশি মানুষের প্রধান খাদ্যশস্য।
ইউএসডিএ-এর সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো জোসেফ গ্লাবার বলেন, "এখানে বিষয়টি বিশ্বে খাদ্যশস্য ফুরিয়ে যাওয়ার নয়, বরং এর জন্য মানুষকে কতটা চড়া মূল্য দিতে হবে, সেটিই এখানে মূল প্রশ্ন।"
শিকাগোভিত্তিক কৃষি গবেষণা সংস্থা অ্যাগরিসোর্স কোং-এর প্রেসিডেন্ট ড্যান বাস বলেন, যদি চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চলতে থাকে, তাহলে পরবর্তী মৌসুমে রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে সম্মিলিত গম রপ্তানি ৬০ শতাংশেরও বেশি কমে যাবে।
এফএও-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৫০টি দেশ তাদের মোট গম আমদানির ৩০ শতাংশেরও বেশির জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল। মিশর, তুরস্ক, বাংলাদেশ এবং ইরান তাদের আমদানি করা গমের অন্তত ৬০ শতাংশ এই দুই দেশ থেকেই করে থাকে।
বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ীদের মতে, সুইফট থেকে রাশিয়ার কিছু ব্যাংককে বাদ দেওয়ার পর, রপ্তানিকারকরা লেনদেনের নতুন সমাধান খুঁজে পেয়েছেন। নতুন ব্যবস্থার মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য আগের মতোই স্বাভাবিক রাখতে চান ব্যবসায়ীরা।
এদিকে কারগিল, লুই ড্রেফাস কোং, ভিটেরা, গ্লেনকোর পিএলসি সহ অ-রাশিয়ান রপ্তানিকারকরা ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে প্রায় ১ মিলিয়ন মেট্রিক টন গম, ভুট্টা এবং বার্লির অন্তত ৪০টি চালান পাঠিয়েছে। বন্দরগুলোতে পণ্যের চালান নিরীক্ষণকারী সংস্থা লজিস্টিক ওএস জানিয়েছে এ তথ্য।
কারগিলের একজন মুখপাত্র বলেন, তাদের কোম্পানি যেখানে যেখানে সম্ভব সেসব জায়গায় প্রয়োজনীয় পণ্য রপ্তানি করছে। কিন্তু, ভিটেরা এবং লুই ড্রেফাস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করে নি।
অন্যদিকে, শস্য রপ্তানিতে রাশিয়া এগিয়ে চলেছে ক্রমান্বয়ে।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভাভিত্তিক ফসলের ডেটা ফার্ম এজিফ্লো এসএ অনুসারে, রাশিয়া থেকে মিশর গত বছরের তুলনায় ৫৮০ শতাংশ বেশি গম আমদানি করেছে। এছাড়া, ইরান, তুরস্ক এবং লিবিয়ায় রাশিয়ার গম রপ্তানি বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।
তবুও, উচ্চ রপ্তানি কর, ক্রমবর্ধমান শিপিং খরচ এবং রুবলে অর্থ পরিশোধের নিয়ম চালু করার ফলে আগামী মাসে রাশিয়ান রপ্তানির পরিমাণ কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এজিফ্লো অনুসারে, কৃষ্ণ সাগরের অন্যান্য শস্য-উৎপাদনকারী দেশ যেমন বুলগেরিয়া এবং রোমানিয়ার রপ্তানিও মার্চ মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনাসহ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো থেকে গমের চালান বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। সেইসাথে অস্ট্রেলিয়া থেকে বেড়েছে প্রায় ৭৫ শতাংশ।
ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগরের নিকটবর্তী বন্দরগুলোর টার্মিনালসমূহ বন্ধ থাকায় দেশটি থেকে শস্য রপ্তানির পরিমাণ কমেছে।
কোম্পানির কর্মকর্তা এবং কৃষি ব্যবসায়ীদের মতে, এডিএম এবং বাঞ্জসহ রপ্তানিকারকরা দেশের বাইরে রেল ও ট্রাকে করে পোল্যান্ড এবং রোমানিয়াতে অল্প পরিমাণে ফসল পাঠাতে সক্ষম হয়েছে। যদিও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার ফলে ফসলের পরিমাণ ছিল কম।
কৃষ্ণ সাগর অঞ্চল নিয়ে কাজ করা গ্রীন স্কয়ার অ্যাগ্রো কনসাল্টিংয়ের পরিচালক মাইক লি বলেন, "ভিন্ন প্রস্থের রেল ট্র্যাক থাকায় বিভিন্ন আকারের রেলকারের জন্য শিপারদের ইউক্রেন-পোল্যান্ড সীমান্তে বারবার শস্য আনলোড ও লোড করতে হয়।"
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ শস্য সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়ে কাজ করছে। গম, ওট এবং বার্লির মতো শস্য চাষে কৃষকদেরকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রোগ্রাম চালু করেছে আয়ারল্যান্ড। আমদানিকৃত শস্যের উপর নির্ভরতা কমাতে এই উদ্যোগ নিয়েছে তারা।
এছাড়া, বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ইউরোপীয় কমিশন। এর মধ্যে রয়েছে, কৃষকদেরকে ফসল ফলাতে উৎসাহ দেওয়ার লক্ষ্যে সাময়িকভাবে পতিত জমিতে ফসল ফলানোর অনুমতি দেওয়া। এছাড়া, শস্য-ভিত্তিক জৈব জ্বালানীর অনুপাত কমানোর সম্ভাব্য প্রচেষ্টাকেও সমর্থন করছে তারা।
এদিকে, গত সপ্তাহে মার্কিন শস্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কংগ্রেসের কাছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার চায় বাইডেন প্রশাসন। ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য প্রশাসনের ৩৩ বিলিয়ন ডলারের বিডের অংশ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত এই আবেদনটি গম এবং সয়াবিনের মতো ফসল চাষাবাদকারী কৃষকদের ঋণের হার বাড়ানোতেও ভূমিকা রাখবে। সেইসাথে, কৃষকরা যাতে দ্বিগুণ পরিমাণে গম উৎপাদন করে, সেই লক্ষ্যে তাদেরকে শস্য বীমার মাধ্যমে প্রণোদনাও দেওয়া হবে।
খাদ্য শস্যের এই সংকটকালে অনেক আমদানিকারকই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গম উৎপাদক দেশ ভারতের দিকে ফিরে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশটির সরকরি কর্মকর্তারা ফসলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে রপ্তানি ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কাজ করে চলেছেন।
ভারতের কৃষি পরামর্শদাতা এবং কর্মকর্তাদের মতে, এই বছর ভারত রেকর্ড পরিমাণ গম রপ্তানি করতে পারে।
গুজরাট অম্বুজা এক্সপোর্টস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মনীশ কুমার গুপ্ত বলেন, তিনি সম্প্রতি এমন সব আমদানিকারক দেশের সাথে যোগাযোগ করেছেন যা এর আগে কখনও করেন নি। তিনি প্রথমবারের মতো তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়ায় ৫০ হাজার টন গম রপ্তানির প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান।
তবে, এক্ষেত্রে রয়েছে বেশকিছু লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ। গুপ্ত জানান, মূল বন্দরগুলোতে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সীমিত হওয়ায় মধ্য ভারত থেকে গম পশ্চিম প্রান্তের বন্দরে নিতে রেলকারের জন্য দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয়।
আন্তর্জাতিক খাদ্য নীতি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুসারে, ২৩টি দেশে ইতোমধ্যেই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এছাড়া, ২০০৮ সালের খাদ্যপণ্যের মূল্য নিয়ে সংকটের সময় প্রায় ২৮টি দেশ পণ্য রপ্তানিতে বিভিন্ন সীমা নির্ধারণ করে।
১৯ শতকের গোড়ার দিকে বিশ্বের শস্য বাজারে প্রায় একক রাজত্ব ছিল রাশিয়ার। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের সার্বিক কৃষি ব্যবস্থার বিপর্যয় ঘটলে ১৯৭০-এর দশকে তারা বিপুল পরিমাণ গম এবং অন্যান্য ফসল আমদানি করতে শুরু করে।
তবে, ২১ শতকের শুরু থেকে রাশিয়ান কৃষি পুনরুজ্জীবিত হতে সক্ষম হয়। এরইমধ্যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মার্কিন চাষিরা গম উৎপাদন কমিয়ে ভুট্টা এবং সয়াবিনের মতো আরও লাভজনক পণ্যের দিকে ঝুঁকতে থাকায় আমেরিকার চেয়ে গম উৎপাদনে অনেক এগিয়ে যায় রাশিয়া।
এছাড়া, উল্লিখিত সময়ে বিশ্বের বৃহত্তম কৃষি ব্যবসায়িক সংস্থাগুলো ইউক্রেনের বন্দর, শস্য লিফট এবং প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্টগুলোতে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করে। দেশটি সূর্যমুখী তেলে বিশ্বের বৃহত্তম রপ্তানিকারক। এছাড়াও ভুট্টা, গম এবং বার্লির একটি প্রধান রপ্তানিকারক।
ইলিনয় ইউনিভার্সিটির কৃষি অর্থনীতিবিদ স্কট আরউইন জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেনের সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করা ছয়টি ফসলের বপন হয়েছে ৫৯ মিলিয়ন একর জুড়ে; যা আমেরিকার তিনটি বৃহত্তম শস্য উৎপাদনকারী রাষ্ট্র ইলিনয়, ইন্ডিয়ানা এবং আইওয়াতে রোপিত ফসলি জমির সমান।
একই সাথে, বিশ্বের বৃহত্তম গম রপ্তানিকারক রাশিয়া আমেরিকার ক্যানসাসে উৎপাদিত শস্যের চারগুণ বেশি শস্য রপ্তানি করে। আমেরিকার শীর্ষ গম উৎপাদনকারী রাষ্ট্র ক্যানসাস।
এছাড়া, গত মাসে প্রকাশিত ইউএসডিএ পূর্বাভাস অনুসারে, মার্কিন কৃষকরা এই বছর বসন্তের গমের রোপণ ২০২১-এর তুলনায় ২ শতাংশ কম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর পরিবর্তে তারা রেকর্ড পরিমাণ সয়াবিন বপন করবে। ২০২২ সালে গমের আবাদ মাত্র ১ শতাংশ বাড়তে পারে বলে অনুমান করছে ইউএসডিএ।
কৃষি ঋণদাতা কোব্যাঙ্কের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ কেনেথ জুকারবার্গ বলেন, "এ বছর ঘাটতি পূরণ করা অসম্ভব।"
ফসলি জমির সীমাবদ্ধতা, অন্যান্য ফসলের উচ্চ মূল্য এবং খরার কারণে মার্কিন গমের উৎপাদনে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পেরে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
- সূত্র: ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল