ইউরোপিয়ান ফুটবলে আরব ধনকুবেরদের নজর
ইউরোপিয়ান ফুটবলে এই মুহূর্তে 'মোস্ট টকড অ্যাবাউট' ক্লাব কোনটি? খুব বেশি চিন্তাভাবনা না করেই বলে দেওয়া যায়, সেটি হলো প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)।
এই গ্রীষ্মের ট্রান্সফার উইন্ডোতে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ক্লাবটি। একদিকে তারা ফ্রি এজেন্ট হিসেবে দলে ভিড়িয়েছে বার্সেলোনা কিংবদন্তি মেসি, এসি মিলান গোলরক্ষক দোনারুমা, রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়ক রামোস ও লিভারপুল মিডফিল্ডার ভাইনালডমকে; অন্যদিকে চড়া দামে ইন্টার মিলান ফুলব্যাক হাকিমিকে নিয়ে এসেছে নিজেদের শিবিরে।
তাই ইতিমধ্যে কয়েক বছর ধরে ইউরোপিয়ান ফুটবলে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করা দলটি এখন বিবেচিত হচ্ছে মহাদেশের অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে নিয়ে ইউরোপ-সেরার খেতাব অর্জন করাই এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য।
অথচ এই ক্লাবের ইতিহাস কিন্তু খুব বেশিদিনের নয়। ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ক্লাবটি। শুরুতে ক্লাবটির মালিক ছিলেন ফরাসি ফ্যাশন ডিজাইনার ড্যানিয়েল হেকটার। কিন্তু তিনি একটি ডাবল টিকেটিং স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে পড়লে হাতবদল হয় ক্লাবটির মালিকানার। বাটলার ক্যাপিটাল, কলোনি নর্থস্টার ও মর্গান স্ট্যানলির মতো ইনভেস্টমেন্ট ফার্মগুলো কিনে নেয় ক্লাবটির অংশীদারত্ব। কিন্তু বারবার মালিকানা পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল ক্লাবটির পারফরম্যান্স।
অবশেষে ভাগ্যের চাকা পরিবর্তিত হয় ২০১১ সালে, যখন চিত্রনাট্যে আগমন ঘটে কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্টসের চেয়ারম্যান নাসের আল-খেলাইফি। ক্লাবটিকে কিনে নেয় তাঁর গ্রুপ। এরপরই খোলনলচে পরিবর্তন আসে প্যারিসের এই ক্লাবে। রাতারাতি ইউরোপের অন্যতম ধনী ক্লাবে পরিণত হয় তারা।
শুরুতে ইব্রাহিমোভিচ, থিয়াগো সিলভা, কাভানি, ডেভিড লুইজদের মতো তারকাদের দলে টেনে পত্রিকার শিরোনাম হয় ক্লাবটি। অবশ্য ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে ভঙ্গের দায়ে উয়েফা তাদের জরিমানাও করে। কিন্তু তাতেও কী আর থেমে থাকে তারা! পরবর্তী সময়ে রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে তারা বার্সেলোনা থেকে নিয়ে আসে নেইমারকে। এ ছাড়াও চোখধাঁধানো মূল্যে নিজেদের করে নেয় মোনাকোর এমবাপ্পেকে।
ম্যানচেস্টার সিটির ইতিহাস আবার অন্য রকম। ১৮৮৪ সালে সেইন্ট মার্কস হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও ১৮৯৪ সালে তারা নিজেদের অফিশিয়াল নামকরণ করে ম্যানচেস্টার সিটি। তাদের শুরুটা ছিল চোখধাঁধানো। ১৮৯৯ সালে সেকেন্ড ডিভিশন জিতে তারা যোগ্যতা অর্জন করে ফার্স্ট ডিভিশনে খেলার। ১৯০৪ সালে এফএ কাপ জয়ের মাধ্যমে তারাই পরিণত হয় ম্যানচেস্টার থেকে প্রথম কোনো মেজর ট্রফি জেতা ক্লাবে। পরবর্তী কয়েক মৌসুমেও তাদের সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকে।
কিন্তু তারপরই তারা পতিত হয় দুর্ভাগ্যের ঘূর্ণাবর্তে। অর্থনৈতিক অসামঞ্জস্যের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে তারা রেলিগেটেড হয় সেকেন্ড ডিভিশনে। তবে ১৯৩৭ সালে তারা আবার ফার্স্ট ডিভিশন এবং ১৯৩৪ ও ১৯৫৬ সালে এফএ কাপ জয় করে। ক্লাবটির সবচেয়ে সফল সময়কাল ছিল ১৯৬৮ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে, যখন তারা একাধারে এফএ কাপ, লিগ কাপ ও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে। কিন্তু ১৯৮০-এর দশকে ফের শনি লাগে ক্লাবটির কপালে। ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো তারা ইংলিশ ফুটবলের থার্ড টায়ারে নেমে যায়।
সেখান থেকে আজকের ম্যানচেস্টার সিটিতে রূপান্তরের পেছনে আছে আবুধাবি ইউনাইটেড গ্রুপের ভূমিকা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ মনসুরের মালিকানাধীন গ্রুপটি ২০০৮ সালে কিনে নেয় সিটিকে। এরপর থেকেই তারা মোটা দামে বিশ্বসেরা ফুটবলারদের নিয়ে আসতে থাকে নিজেদের দলে।
বর্তমানে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে অর্থ ব্যয় ও সিটি পরস্পরের সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। গেল বছর তো তারা ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে ভঙ্গের জন্য উয়েফার তরফ থেকে দুই বছরের জন্য চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে নিষিদ্ধও হয়েছিল, যদিও শেষ পর্যন্ত সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকেনি।
একটু খেয়াল করলে দেখবেন, পিএসজি ও ম্যানচেস্টার সিটির শুরুর ইতিহাস আলাদা হলেও একবিংশ শতাব্দীতে এসে তাদের পথচলায় বেজেছে অভিন্ন সুর। দুই আরব ধনকুবেরের কৃপাদৃষ্টি বর্ষিত হওয়ায় বদলে গিয়েছে তাদের ভাগ্য এবং ঘরোয়া ফুটবলে তারা পেয়ে চলেছে একের পর এক ঈর্ষণীয় সাফল্য। দুই দলেরই আক্ষেপ শুধু একটি। কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ ব্যয়ের পরও ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের মঞ্চে নিজেদের বিজয় নিশান উড়াবার সুযোগটা পাচ্ছে না তারা।
সাম্প্রতিক অতীতে আরব ধনকুবেরদের মালিকানায় এসেছে ইউরোপের আরও বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় ক্লাব। ইরানি বিলিয়নিয়ার ফরহাদ মশিরির কাছে রয়েছে এভারটন ফুটবল ক্লাবের সিংহভাগের মালিকানা। কাতারি রাজ পরিবারের সদস্য শেখ আব্দুল্লাহ আল থানি ২০১০ সালে কিনে নিয়েছেন স্পেনের ক্লাব মালাগাকে। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের আরেক ক্লাব হাল সিটির মালিকানা গেছে মিসরীয় ব্যবসায়ী আসিম আলমের হাতে।
তাহলে বুঝতেই পারছেন, আরব ধনকুবেররা কীভাবে নিজেদের প্রভাবকে বৈশ্বিক অর্থনীতি, ভূ-রাজনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েই শুধু সীমাবদ্ধ রাখছেন না, পেট্রোডলারের বিনিময়ে তারা ক্রমে নিজেদের স্থান করে নিচ্ছেন ইউরোপিয়ান ফুটবলেও।
কিন্তু কেন? কী স্বার্থ কাজ করছে এর পেছনে?
ইউনিভার্সিটি অব সালফোর্ডের অধ্যাপক সাইমন চ্যাডউইকের মতে, আরব ধনকুবেরদের ইউরোপিয়ান ফুটবলে বিনিয়োগের নেপথ্যে থাকতে পারে তিনটি মোটিভেশন: একটি ইউরোপিয়ান ক্লাবের মালিকানা লাভের মাধ্যমে নিজেদের স্ট্যাটাস বৃদ্ধি, নিজেদের অর্থ বিদেশে স্থানান্তরের মাধ্যমে ক্ষতির আশঙ্কা হ্রাস করা এবং নতুন ধরনের অর্থনৈতিক লাভের সম্ভাবনা সৃষ্টি, তা সে যত স্বল্প পরিমাণই হোক না কেন।
এ ছাড়া সফট পাওয়ার অর্জনের উদ্দেশ্যও রয়েছে। ইউরোপিয়ান ফুটবলের রয়েছে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা। তাই কোনো ইউরোপিয়ান ফুটবল ক্লাবের সঙ্গে যদি নিজের নাম যুক্ত করা যায়, তাহলে একটি বিশালসংখ্যক টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় এবং তার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজের ও নিজের দেশের প্রভাব-প্রতিপত্তিও বৃদ্ধি করা যায়।
যেমন ধরুন পিএসজি সভাপতি নাসের আল-খেলাইফির কথা। ইতিপূর্বে নেইমার, এমবাপ্পের পেছনে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছেন। বেতন হিসেবে মেসির পেছনেও কম অর্থ ঢালবেন না। কিন্তু এতসব খরচের বিনিময়ে তিনি যা অর্জন করেছেন, তা তো নিছক ইউরো বা ডলারের অঙ্কে পরিমাপ অসম্ভব। নিজ দেশে তার যত প্রভাব-প্রতিপত্তিই থাকুক, আর তিনি যত অঢেল ধন-সম্পদের মালিকই হোন না কেন, ফুটবলজগতে নাম না লেখালে সাধারণ মানুষ কি আর তাঁকে চিনত!
তবে হ্যাঁ, অনেক সমালোচকই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের ইউরোপিয়ান ফুটবল ক্লাব কেনাকে নিজেদের যশ-খ্যাতির 'স্পোর্টসওয়াশ' হিসেবে অভিহিত করেন। কারণ, এভাবে বড় বড় ফুটবল ক্লাবগুলোকে কিনে এবং তাদের ভাগ্য ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাঁরা বিশ্বব্যাপী প্রচুর মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা জয় করছেন। এর ফলে নিজ দেশে তাঁরা যেসব দুর্নীতি, কেলেঙ্কারি বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যুক্ত, সেগুলো ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। যেহেতু তাঁদের অনেকেই নিজ দেশে সরাসরি সরকার পরিচালনার সঙ্গে সংযুক্ত, তাই তাঁদের মাধ্যমে তাঁদের গোটা দেশেরই ভাবমূর্তিতে ফুটবলীয় ইতিবাচক প্রলেপ পড়ছে।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক গবেষক নিক ম্যাকগিহানের রয়েছে স্বতন্ত্র পর্যবেক্ষণ। তিনি মনে করেন, স্পোর্টসওয়াশিংয়ের উদ্দেশ্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজনৈতিক প্রভাবশালী ধনকুবেরদের মধ্যে যতটা প্রকট, কাতারের ধনকুবেরদের ক্ষেত্রে ততটা নয়। তাঁরা বরং বেশি করে চেয়েছেন ২০২২ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বৈশ্বিক ফুটবল কমিউনিটির সমর্থন অর্জন করতে এবং সে ক্ষেত্রে তাঁরা সফলও হয়েছেন।
জানিয়ে রাখা ভালো, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো অনেকেই বিশ্বকাপ উপলক্ষে কাতারে আগত প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়-অবিচার-বৈষম্য নিয়ে সরব হলেও খুব একটা হালে পানি পাচ্ছে না সেসব অভিযোগ।
এরই ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতে সম্ভাবনা রয়েছে সৌদি আরবেরও নিয়মিতভাবে ইউরোপিয়ান ফুটবলে নাম লেখানোর। সে ক্ষেত্রে তারা কাতার নয়, আবুধাবির কৌশলকেই হয়তো বেশি অনুসরণ করবে।
ইউরোপের অন্যান্য লিগের চেয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ওপর আরব ধনকুবেরদের নজর একটু যেন বেশিই। এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ডেলয়েট স্পোর্টস বিজনেস গ্রুপের প্রধান ড্যান জোনস।
প্রথমত, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বিনিয়োগ তুলনামূলক বেশি লাভজনক। তাই এখানে বিনিয়োগের মাধ্যমে লাভের নিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীদের কাছে এর আবেদন বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয়ত, এই লিগের বৈশ্বিক সম্প্রচারব্যবস্থা। বিশ্বব্যাপী এই লিগের সম্প্রচার ব্যবস্থার বণ্টন অন্য যেকোনো ঘরোয়া লিগের চেয়ে শ্রেয়। তাই বিশ্ববাসী এই লিগের দলগুলোর সম্পর্কেই সবচেয়ে বেশি অবগত।
তবে জোনস এ-ও মনে করেন যে অর্থনৈতিক বা ভূ-রাজনৈতিক ব্যাপারগুলোকে একপাশে সরিয়ে রেখে, নিছকই ফুটবলের প্রতি আবেগ বা ভালোবাসাও অনেক ক্ষেত্রে বড় কারণ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেছেন চেলসির মালিক রোমান আব্রামোভিচের কথা। তিনি হয়তো মধ্যপ্রাচ্যের নন এবং চেলসিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁর অন্যান্য কার্যকারণও ছিল, তবু স্পষ্টতই একটি বিশ্বসেরা ফুটবল ক্লাবের মালিকানা মন ভরে উপভোগ করেছেন তিনি।
ফলে স্রেফ ফুটবলের জন্যই ফুটবলে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যতই অসম্ভব ও আজগুবি হোক না কেন, একেবারে উড়িয়ে দেওয়ারও উপায় নেই! আর এ ক্ষেত্রেও ঘুরেফিরে চলে আসে সেই নাসের আল-খেলাইফির কথা। তিনি যে আদতেই একজন ক্রীড়ামোদি ব্যক্তিত্ব, সে প্রমাণ মেলে তাঁর পেশাদার টেনিসের ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে।
যা-ই হোক, আরব ধনকুবেররা যে ইউরোপিয়ান ফুটবলকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন, সে ব্যাপারে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে ট্রান্সফার মার্কেট কিংবা ফুটবলারদের বেতনে বেশি খরচ করছে ক্লাবগুলো। আরব ধনকুবেররা এগুলোর প্রচলন ঘটিয়েছেন বলেই এখন বাদবাকি ক্লাবমালিকেরাও নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, ইউরোপিয়ান ফুটবলে আরব ধনকুবেরদের এমন আধিপত্য কোনো একদিন ফুটবলের ভবিষ্যৎকেই হুমকির মুখে ঠেলে দেবে না তো?
একটি দৃশ্যপট এমন হতে পারে যে ক্লাব ফুটবলে অর্থের ঝনঝনানিতে প্রলুব্ধ হয়ে জাতীয় দলের ক্যারিয়ারকে অকালে বিদায় জানাচ্ছেন অনেক ফুটবলার। সে রকম ঘটনা যদি ঘটে, তা কোনো শুভ ইঙ্গিত দেবে না।
আবার এমনটিও হওয়া অস্বাভাবিক নয় যে কোনো একদিন ইউরোপিয়ান ফুটবল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন আরব ধনকুবেররা। তাঁরা আলিঙ্গন করবেন অন্য কোনো আগ্রহের বিষয়কে। কিন্তু তত দিনে যেহেতু তাঁরা ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের কাঠামোকে পুরোপুরি বদলে দেবেন, তাই সেই পরিবর্তিত ব্যবস্থার ধারাবাহিকতায় কোনো ছেদ ঘটলে, সেই ক্ষতি কি আদৌ কখনো পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে?
আর এসব আশঙ্কা যদি নেহাত অমূলকও হয়, তবু ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে যাঁরা চিরায়ত ঐতিহ্যের পূজারি, যাঁরা চান না কোনো ইতিহাসবিহীন ফুটবল ক্লাব হুট করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হোক, তাঁদের কাছে বোধ হয় কখনোই গ্রহণযোগ্যতা পাবে না আরব ধনকুবেরদের বিনিয়োগ। পিএসজি ও ম্যানচেস্টার সিটির মধ্যকার খেলাকে যেমন অনেকেই উপহাস করে ডাকে 'অয়েল ক্লাসিকো', সে রকম আরব অর্থায়নে ফুলেফেঁপে ওঠা ক্লাবগুলোর প্রতি সব সময়ই একধরনের তাচ্ছিল্য ও উন্নাসিকতা বিরাজ করবে অনেক ফুটবল-ভক্তের মনে।