নৃশংস রাজা ব্লাদ, আর তার কাউন্ট ড্রাকুলা পরিচয়!
ট্রান্সেলভেনিয়ায় আঁধার নেমে আসছে সেই দিন, পাহাড়ি অন্ধকার বাদুড়ের মতো নিকষ ডানার বিস্তার ঘটিয়ে হটিয়ে দিচ্ছে সূর্যের অস্তিত্বের শেষ চিহ্নকেও, এমনকি দিগন্তে রেখায় যেখানে সূর্যদেবের রথ কয়েক মুহূর্তের জন্য একটু বেশি সময় গোধূলিআলো ছড়িয়ে ভেসে থাকে, তা-ও যেন আজ কী এক আশঙ্কায় একটু দ্রুতই বিদায় নিল। আমাদেরও তাড়াহুড়ো বাড়ছে, আমরা বলতে পূর্বইউরোপ ভ্রমণে বের হওয়া চার বাঙালি (রমজান ভাই, শাহিন ভাই, বড় ভাই তানভীর অপু এবং আমি), তাড়াহুড়োর মূল কারণ সেই রাতের গন্তব্য যে শহর তা জানি কিন্তু কোনো সরাইখানার সাথে পূর্বযোগাযোগ করা হয়নি। পাহাড়ি এলাকায় ছড়ানো-ছিটানো খুদে খুদে জনপদ, এর মাঝে গ্রীষ্মকাল বিধায়, পর্যটকদের ভিড়ে সরগরম, কাজে কাজেই থাকার জায়গা মিলতে ঝামেলা হতেই পারে, আর এটা আমরা কোনো মতেই চাই না, কারণ এটি ট্রান্সেলভেনিয়া।
We are in Transylvania and Transylvania is not England. Our ways are not your ways, and there shall be to you many strange things.Dracula (Bram Stoker)
জি ব্রাম স্টোকারের বিশ্বখ্যাত উপন্যাস ড্রাকুলার নায়কের আবাস এখানেই। তার সাথে দেখা হোক বা না হোক, সেই ফেনিয়ে ওঠা কুয়াশা, প্রেতাত্মার মতো ভেসে চলা মেঘ, পাহাড়ের মুখব্যাদান করে থাকা নীরবতা, শীতল বৃষ্টি এমনকি স্থানীয়দের ব্যবহারে উষ্ণতার অতিমাত্রায় অভাব সবই যেন নিজের অজান্তে কোনো এক অমঙ্গলের গান গাইছে। তারপরও রোমাঞ্চের আশাতেই হয়তো সাহস করে পথের বাঁকে আবিষ্কার করলাম সেই রাতের গন্তব্য ব্রাসভ শহর। জেঁকে ধরা আঁধারে চটজলদি সেই ব্যাকপাকারস হোস্টেল সামনে পেলাম, সেইখানেই উঠে গেলাম অচেনা অলিগলিতে কালো ওভারকোট পরা তীক্ষè শ্বদন্তের মালিকের হঠাৎ সাক্ষাৎ এড়াতে।
সেই হোস্টেলের মালিক দম্পতির প্রিয় শব্দ ছিল 'না'! গরম পানি আছে? 'না'! রাতের খানা মিলবে? 'না'! এক্সট্রা বালিশ আর কম্বল মিলবে? 'না'! কফি? 'না'! শুধুই এইটাতেই নয় তাদের এইখানে স্লিপিং ব্যাগ ব্যবহার করলে বিশাল অঙ্কের জরিমানা করা হবে, ব্যাপারটা কি আসল নাকি কৌতুক এইটা জিজ্ঞাসা করলেই পুরো বেলু লুগোসি অভিনীত কাউন্ট ড্রাকুলার মতো ভেংচি কেটে জানালেন যে অনেক আগে কোন পর্যটকের ব্যাগ থেকে ছারপোকা বেরিয়ে নাকি তাদের বিশাল অঙ্কের অর্থের ক্ষতিসাধন করেছিল, তারপর থেকেই এই সাবধানতা। যাক, হোটেলের মালিকের ব্যবহার যা-ই হোক, বিছানাপত্তর বেশ ভালোই, সেইখানে ছারপোকাও নেই, ব্যাকপ্যাক সেখানে ফেলে বেরিয়ে পড়লাম সবাই জঠরানল নেভানোর জন্য।
কেমন যেন মরা একটা শহর, দালানকোঠা ভালোই আছে কিন্তু প্রাণ নেই! ঝিরঝির বৃষ্টিতে স্থানীয় খাবারের খোঁজে বেশি ঘোরাঘুরি না করে হাতের কাছে কেএফসিতেই প্রবেশ করতে হলো। খেতে খেতেই চারিদিকে ট্যুরিস্টের ভিড় দেখে রমজান ভাই দরাজ গলায় হো হো করে হেসে বললেন,'দেখছ, মানুষের কাজ, ড্রাকুলার মতো একটা কল্পনার জিনিস নিয়ে কতই না উৎসাহ আর ভয়।' জিজ্ঞাসা করলাম ড্রাকুলার কথা কিছু জানা আছে কিনা। জানা গেলে তিন ভ্রমণসঙ্গীর কেউই ড্রাকুলার বই বা সিনেমা কোনোটা সম্পর্কেই খুব একটা মাথা ঘামাননি, তাই ভাজা মুরগির ঠ্যাং আর ডানা চিবোতে চিবোতে মিনিট চারেকের মধ্যেই তাদের বললাম ট্রান্সেলভেনিয়ার আতঙ্কের কথা, রক্তচোষা বাদুড় আর উধাও হয়ে যাওয়া রোমানিয়ান রাজার মৃতদেহের কথা! ফলাফল মিলল সেই রাতেই! কেউই আর রাতে একা টয়লেটেও যেতে চাচ্ছিল না! আর পাকনামো করে খোদ ড্রাকুলার রাজ্যে বসে কৈশোরের রোমাঞ্চ ফিরিয়ের আনার জন্য গা শিরশিরে অনুভূতি নিয়ে পড়ছিলাম সেবা প্রকাশনীর প্রকাশিত ড্রাকুলার অনুবাদ।
সত্যি বলতে, সেই রাতে জানালার বাইরে তাকিয়ে হঠাৎ হঠাৎ মনে হয়েছিল যে কিছু একটা ঝুলে আছে কিনা, কেউ জানালা দিয়ে আসলে গলে বেরিয়ে আসবে কিনা!
'গরাদশূন্য জানালা গলে আস্তে করে বেরিয়ে এল কাউন্টের মাথাটা! অবাক লাগল। গভীর রাতে এভাবে জানালা গলে বেরিয়ে আসছেন কেন কাউন্ট? কয়েক মুহূর্ত পরেই আমার অবাক ভাবটা গভীর আতঙ্কে পরিণত হলো। বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হলো হৃৎপিণ্ডের গতি। জানালা গলে বেরিয়ে এসে নব্বই ডিগ্রি খাড়া মসৃণ দেয়াল বেয়ে টিকটিকির মতো এদিকেই উঠে আসছেন কাউন্ট। বাতাসে বিশাল বাদুড়ের ডানার মতো উড়ছে কালো আলখেল্লার দুপাশ।'
সকালে ঘুম ভাঙল কিছুটা আনন্দের অনুভূতি নিয়েই, নতুন একটা দিনে জীবিত অবস্থায় মুখের ওপর রোদের কোমল স্পর্শের আনন্দময় অনুভূতি, পিশাচ ডেরা থেকে বেরিয়ে স্বর্ণকেশী রাজকন্যাকে উদ্ধার করে দুর্গ পানে ফেরার সুখের মতো। আমাদের যাত্রা তখন ব্রান দুর্গের পানে।
জি হ্যাঁ, এই ব্রান দুর্গই সারা বিশ্বে ড্রাকুলার দুর্গ বলে পরিচিত। যদিও ড্রাকুলার লেখক ব্রাম স্টোকার আদৌ এই দুর্গ নিয়ে জানতেন কিনা, সেই নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায় এবং খোদ ড্রাকুলার চরিত্র যাকে নিয়ে রচিত সেই ব্লাদ টেপাস আসলেই এই দুর্গে কত রাত অতিবাহিত করেছেন, সেটিও প্রশ্নসাপেক্ষ তো বটেই, তারপরও ইতিহাসপ্রেমী এবং ভ্যাম্পায়ার তথা ড্রাকুলা মুগ্ধদের কাছে রোমানিয়া মানেই ব্রান দুর্গ।
১৪৪৮ সালে ওয়ালিসিয়ার যুবরাজ হিসেবে জন্ম নেওয়া তৃতীয় ব্লাদ কীভাবে ব্লাদ টেপাস বা শূলে চরানো ব্লাদ থেকে ইতিহাসের ধূসর পাতা থেকে পরবর্তী সময়ে কাউন্ট ড্রাকুলা হিসেবে ফিকশনের পাতায় আশ্রয় নিলেন, সে এক চমকপ্রদ ঘটনা। তবে রোমানিয়া বা পূর্ব-ইউরোপের চেয়ে বরং পাশ্চাত্যেই ব্লাদকে এক অতিমাত্রায় নিষ্ঠুর, রক্তপিপাসু শাসক হিসেবে দেখানো হয়েছে। বলা হয়ে থাকে অটোম্যান সম্রাট দ্বিতীয় মেহমুদ ব্লাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার সময় ব্লাদের রাজধানীর কাছে এক অঞ্চলে শূলে চড়ানো ২০ হাজার মৃতদেহ দেখে, নিষ্ঠুরতা চাক্ষুষ করেই অসুস্থ বোধ করেছিলেন।
কিন্তু রোমানিয়ায় ব্লাদ টেপাসকে একজন দেশপ্রেমী রাজা হিসেবেই দেখা হয়, যে কিনা আক্রমণকারী তুর্কি হানাদার এবং অন্যদের থেকে মাতৃভূমি রক্ষা করতেই সারা জীবন যুদ্ধ করে গেছে, যার মৃত্যুর কারণ আজ রহস্যে ঘেরা এবং যে কবরটি তার কবর হিসেবে ধরা হতো, পরবর্তী সময়ে সেখানে কোনো মৃতদেহ পাওয়া যায়নি,তাই হয়তো অমর ব্লাদের গল্প ডানা মেলা শুরু করে। ব্লাদের জন্মের সময় তার রাজা বাবা বিশেষ মিশনে জার্মানিতে ছিলেন এবং সেখানে রোমান সম্রাট সিগিস্মুন্ড কতৃক ড্রাকুল বা অর্ডার অব ড্রাগন পদবিতে ভূষিত হন, যাদের মূল মিশন ছিল হামলাকারী অটোম্যান এবং অন্যদের থেকে ইউরোপের খ্রিষ্টীয় ধর্ম এবং ভূমিকে রক্ষা করা।
কিন্তু এত কিছুর পরও মাত্র ১৩ বছর বয়সে ব্লাদ এবং তার ভাইকে তুর্কি সৈন্যরা রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে অটোম্যান সুলতানের কাছে নিয়ে যায়, যেখানে সে তুর্কি ভাষা শেখা, আল কোরআন পড়া, নানা ভাষায় বিদ্যালাভ এবং যুদ্ধবিদ্যা রপ্ত করে। ধারণা করা হয় সেই সময়ে দুঃসহ স্মৃতিগুলোয় তাকে বিষণ্ন এক অত্যাচারী মানুষ পরিণত করে পরবর্তী সময়ে, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ শূলে চরাতে তার যেমন কোনো দ্বিধা হয়নি, বরং এইভাবে মানুষ খুন করতে হয়তো উপভোগই করতেন। সম্ভবত ১৪৭৭ সালের প্রথম দিকে ব্লাদ টেপাস অজ্ঞাত কারণে নিহত হন।
এর কয়েক শ বছর পরে আইরিশ লেখক ব্রাম স্টোকার ড্রাকুলা উপন্যাস রচনা করেন, যার প্রধান চরিত্র রক্তপায়ী কাউন্ট ড্রাকুলা, যাকে বাস্তবের ব্লাদ টেপাসের চরিত্র অবলম্বনে লেখা বলেই মনে করা হয়, আর ড্রাকুলা যে সেই ড্রাকুল বা অর্ডার অব ড্রাগন উপাধি থেকে নেওয়া, সে তো বলাইবাহুল্য। সেই থেকে সারা বিশ্বের পিশাচকাহিনি বা ভ্যাম্পায়ার মানেই তাদের চূড়াকুলশিরোমণি ট্রান্সেলভেনিয়ার এই কাউন্ট।
(ড্রাকুলা বইটি প্রসঙ্গে একটি কথা। একবার গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস কিউবা যাওয়ার সময় বরাবরের মতোই বেশ কিছু বই নিয়ে গেছেন তার পড়ুয়া বন্ধু ফিদেল কাস্ত্রোর জন্য। ফিদেল একটি বইয়ে এমন মজেছিলেন যে সারা রাত বইটি পড়ে পরদিন সকালে গাবোকে বলেছিলেন, 'কোথায় পেলে এই বই? এতদিন পড়ি নাই কেন অসাধারণ এই সাহিত্য!' বইটির নাম ছিল ড্রাকুলা, লেখক ব্রাম স্টোকার। অনেক সাহিত্যবোদ্ধার মতে ড্রাকুলা পৃথিবীর অন্যতম ভুল বোঝা এবং ভুল কারণে জনপ্রিয় একটা বই। এটি মোটেও ভ্যাম্পায়ার বা ভূতের কাহিনি নয়। এটি কয়েকজনের ডায়েরি বা কাহিনি একই সমান্তরালে চলছেÑএই স্টাইলে লেখা বিশ্বের প্রথমদিকের উপন্যাসগুলোর একটি। আর ব্রাম যেহেতু আইরিশ ছিলেন, অনেকেই মনে করেন রক্তচোষা অমর ড্রাকুলা আসলে ব্রিটিশ উপনিবেশকতার একটা প্রতিচ্ছবি, যারা বেঁচে থাকে প্রজাদের রক্ত চুষে। বন্ধুরা, এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে একবার পড়ে দেখতে পারেন ড্রাকুলা, ঠকবেন না! )
ব্রানকে বলা চলে ব্রাসভের একটা উপশহর মতো ছোট্ট জনপদ, যেখানে প্রবেশের পরপরই পাহাড়চূড়ায় সবুজ বনঘেরা লাল ছাদের প্রায় ৬০০ বছরের প্রাচীন মধ্যযুগীয় সুদৃশ্য দুর্গটি চোখে পড়ে। এমন দুর্গ মধ্য ইউরোপে বিরল কিছু নয়, কিন্তু সেই যে পরিবেশের প্রভাব, একে তো দুর্গম ট্রান্সেলভেনিয়া, তার ওপর আবার খোদ ড্রাকুলার আস্তানা বলে কথা, দেখামাত্রই মনে হলো জানালা দিয়ে কেউ উড়ে বেরোল কিনাডানা ঝাপটে! বেশ লম্বা লাইন সেই সাত সকালেই দুর্গের সামনে।
শহরের ছোট বাজারটিও মজার, ড্রাকুলাকে বেচা হচ্ছে নানাভাবেÑমুখোশ, কাপ, পোশাকÑযে যেভাবে পারে! পুরাণকথার পরাক্রমশালী দানব আজ পয়সার হাতে বন্দী।
লাইন ধরে ঢুকতেই সামনে চোখে পড়ল গ্রামের কৃষকের বাড়ির মতো কাঠের কুঁড়েঘর, মনোমুগ্ধকর নরম সবুজ শ্যাওলায় ঢাকা ছাদ। তার পাশ দিয়েই পাথর বসানো রাস্তা এঁকেবেঁকে চলে গেছে ওপরের দিকে দুর্গের প্রধান ফটক পর্যন্ত। থেমে থেমে বহু আরাধ্য এই গন্তব্যে পৌঁছানোর আনন্দ পূর্ণ মাত্রায় উপভোগ করে যেতে যেতে একটা অতি প্রাচীন ক্রুশও চোখে পড়ল।
উল্লেখ্য যে ট্রান্সেলভেনিয়ার অধিকাংশ হোটেলেই শুকনো রসুনের মালা রাখা হয়, বিশেষ করে ভিনদেশি শিশুদের জন্য, যাতে তারা রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ারদের ভয় থেকে সামান্য হলেও মুক্ত থাকতে পারে, যেহেতু বলা হয় যে রসুন, ক্রুশ এবং ধুনোই পারে ওই আঁধারের জীবদের দূরে রাখতে। ক্রুশ দেখেই ওপরের জানালার দিকে তাকিয়ে পরখ করলাম যে কেউ আমাদের দেখছে কিনা, যদিও লোককথা মতে ড্রাকুলাসহ বিশ্বের সকল ভ্যাম্পায়ের তখন ঘুমানোর কথা, কিন্তু অজানা রোমাঞ্চের আনন্দ পেতে তো আর বাধা নেই!
দুর্গের কাঠের ফটক পেরিয়ে ঢুকে পড়লাম মধ্যযুগের সরু সরু গলি, সিঁড়ি আর একের পর এক গোছানো কামরাতে, কোথাও কোথাও আছে অস্ত্রের ভান্ডার, কোথাও আছে রোমানিয়ার রানি মারির সংগ্রহের নানা বস্তু। বিশেষভাবে নজর কাড়ল রত্নখচিত মুকুট, মনে আছে যে ব্লাদ টেপাসের ছবিতেও সবসময় এমন একটি মুকুট দেখা যায়!
এর মাঝে দরজার পাশে সিন্দুক দেখেই জনৈক শিশু বলে উঠল এটাই ড্রাকুলার কফিন কিনা, একজন আবার ফিসফিস করে বলল, হুস, ওর ঘুম ভাঙিও না! তবে ঠিক দেখা মিলল এক কামরার, যেখানে মধ্যযুগে মানুষকে অত্যাচারের জন্য ব্যবহৃত নানা যন্ত্রের সংগ্রহের, বিশেষ করে চোখা চোখা কাঠের শলাকাসমৃদ্ধ দ্য আয়রন মেইডেনের! পাশে আবার ছবি এঁকে বোঝানো হয়েছে যে কোন যন্ত্র দিয়ে কীভাবে অত্যাচার করা হতো!
এর পরপরই বেশ ফাঁকা একটু বারান্দামতো, যেখানে দাঁড়ালে ড্রাকুলা দুর্গের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়, লাল ছাদের টাওয়ার, পাথরের দেয়াল, সামনের উঠোন, কাছের সবুজ বন আর দূরের পাহাড়, কেবল রাতের চাঁদটাই অনুপস্থিত থেকে গেল অসাধারণ এক দৃশ্যপট রচনা থেকে। সেই লাল টালির এক কোণে আবার বেরসিকের মতো ফুটে উঠেছে গুচ্ছ গুচ্ছ রক্তলাল গোলাপ, বড়ই বেমানান যেন কালো জাদুর এই রাজত্বে!
বারান্দায় দাঁড়িয়ে বেশুমার ছবি তোলা হলো, এমনকি সেবা প্রকাশনীর ড্রাকুলা হাতেও। যদিও বাস্তবের ড্রাকুলার ব্লাদ টেপাস এই দুর্গের সাথে কতখানি সম্পর্কিত ছিলেন, তা নিয়ে ব্যাপক ধোঁয়াশা আছেই। তবে ব্লাদ যে এই দুর্গের পাশ দিয়ে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই, এবং ইতিহাসবিদেরা ধারণা করেন শত্রুপক্ষের হাতে বন্দী অবস্থায় এই দুর্গেই কয়েকদিন ছিলেন ব্লাদ।