অরুণ জেটলির জীবনাবসান
নরেন্দ্র মোদির বিগত সরকারের অর্থমন্ত্রী বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা অরুণ জেটলির জীবনাবসান হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হওয়ায় তাঁকে গত ৯ অগাস্ট নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স (এইমস) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গত মঙ্গলবার হাসপাতালের এক বুলেটিনে জানানো হয়, অরুণ জেটলিকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল তাঁকে পর্যবেক্ষণে করছে।
এরপর শুক্রবার রাত থেকে জেটলির শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল বলে হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়।। শনিবার ভারতের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার পর মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।
পাঁচ বছর অর্থ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব সামলানোর পর অসুস্থতার কারণে নিজেই মোদীর এবারের সরকারে না থাকার ইচ্ছা জানিয়েছিলেন তিনি। একই কারণে নির্বাচনও করেননি।
অর্থমন্ত্রী থাকার সময় ২০১৮ সালের মে মাসে চিকিৎসকেরা অরুণ জেটলির কিডনি প্রতিস্থাপন করেন। তারপর থেকে তিনি অসুস্থই ছিলেন বরাবর। অসুস্থতার কারণে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি তিনি।
অরুণ জেটলির জন্ম ১৯৫২ সালের ২৮ ডিসেম্বর, নয়াদিল্লিতে। দিল্লিতেই তাঁর পড়াশুনা। সেখানকার সেইন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়েন ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত। তারপর শ্রীরাম কলেজ অব কমার্স থেকে বাণিজ্যে সম্মানসহ স্নাতক শেষ করেন ১৯৭৩ সালে। ১৯৭৭ সালে তিনি দিল্লি ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদ থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেন।
দিল্লি ইউনিভার্সিটির ছাত্র থাকার সময তিনি অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের ছাত্রনেতা ছিলেন। ১৯৭৪ সালে দিল্লি ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্টও হন।
গত শতকের আশির দশকে বিজেপিতে সক্রিয় হন অরুণ জেটলি। ১৯৯১ সাল থেকে তিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে ছিলেন।
১৯৯৯ সালে বাজপেয়ী সরকারে প্রথম মন্ত্রিত্ব পান অরুণ জেটলি। এরপর থেকে ২০১৯ সালের মে মাস পর্যন্ত তিনি নানা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিভিন্ন সময়ে বিজেপির সদস্য হিসেবে বাজপেয়ী ও মোদি সরকারের অর্থ, প্রতিরক্ষা, করপোরেট এফয়ার্স, কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং ল এন্ড জাস্টিস মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
তাছাড়া, কংগ্রেস আমলে ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভায় বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন তিনি।
ভোটের রাজনীতিতে অসফল ছিলেন অরুণ জেটলি। কিন্তু বিজেপিশাসিত সরকারের নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য।
অরুণ জেটলি কাশ্মীরের সাবেক অর্থমন্ত্রী গিরিধারী লাল ডোগরার মেয়ে সঙ্গীতাকে বিয়ে করেন ১৯৮২ সালে।। তাদের দুই ছেলেমেয়ে। পেশায় তাঁরাও আইনজীবী।