অবসর ভেঙে ক্রিকেটে ফিরতে যুবরাজের আবেদন
সব ধরনের ক্রিকেট ছেড়েছেন গত বছরের জুনে। অবসরের ১৫ মাস হয়ে গেছে। কিন্তু ক্রিকেট ছেড়ে থাকতে চান না যুবরাজ সিং। ভারতের সাবেক এই অলরাউন্ডার অবসর ভেঙে ক্রিকেটে ফেরার কথা জানিয়েছেন। ভারতীয় ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরতে ইতোমধ্যে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) কাছে আবেদনও করেছেন সাবেক তারকা এই ক্রিকেটার।
লকডাউনে নিজের সামর্থ্য বুঝতে পেরেছেন যুবরাজ। এরপর আর দেরি করেননি। ক্রিকেটে ফেরার আবেদন করে বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি ও সদস্য সচিব জয় শাহকে মেইল করেছেন তিনি। যদিও এখনও মেইলের জবাব পাননি বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার।
পাঞ্জাবের তরুণ ক্রিকেটারদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে ক্রিকেটে ফেরার ইচ্ছা জেগেছে যুবরাজের। করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ আছে ভারতীয় ঘরোয়া ক্রিকেট। বিরতির সময়ে যুবরাজকে তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করতে অনুরোধ জানায় পাঞ্জাব ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন।
গত কয়েক মাসে শুভমান গিল, অভিষেক শর্মা, প্রাভসিমরান সিং, আনমোলপ্রিত সিংদের মতো তরুণদের সঙ্গে কাজ করেছেন যুবরাজ। এসব ক্রিকেটারের সঙ্গে কাজ করার পর যুবরাজের মনে হয়েছে, ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরলে মন্দ হয় না। তবে শুধু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেই ফিরতে চান তিনি।
ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে এক সাক্ষাৎকারে যুবরাজ বলেছেন, 'তরুণ ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাটানো সময় আমি উপভোগ করেছি। তাদের সঙ্গে খেলার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলে আমার মনে হয়েছে, তাদেরকে যা বলছি, সেগুলোর অনেক কিছুই তারা বুঝতে পারছে।'
এসব ক্রিকেটারের সঙ্গে কাজ করার সময় যুবরাজও ব্যাটিং করেছেন। নিজের ব্যাটিংয়ে সন্তুষ্ট হওয়ার পর তার মনে হয়েছে আরও দুটি মৌসুম খেলাই যায়। ২০১১ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় বলেন, 'কিছু বিষয় দেখানোর জন্য আমাকে নেটে ব্যাটিং করতে হয়েছে। নিজের কাছেই বিস্ময় মনে হয়েছে যে, দীর্ঘদিন ব্যাট না ধরলেও আমি কতটা ভালোভাবে বল মারতে পেরেছি।'
লকডাউন শিথিল হওয়ার পর টেনিস ও গলফ নিয়ে মেতে ছিলেন যুবরাজ। এ সময় ক্রিকেটে ফেরার প্রস্তাব পান তিনি। পাঞ্জাব ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব পুনিত বালি যুবরাজকে প্রস্তাব দিয়ে বলেন, অবসর ভেঙে ক্রিকেটে ফেরার বিষয়টি তিনি বিবেচনা করবেন কিনা।
যুবরাজ বলেন, 'দুই মাস ট্রেনিংয়ের পর পাঞ্জাবের ওই ক্যাম্পে আমি ব্যাটিং শুরু করি। কয়েকটি অনুশীলন ম্যাচে রানও করেছি। একটা সেশনের পর পাঞ্জাব ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব পুনিত বালি প্রশ্ন করেন, অবসর ভেঙে ফেরার কথা আমি বিবেচনা করব কিনা।'
শুরুতে দ্বিধায় ছিলেন যুবরাজ। পরে চিন্তা-ভাবনা করে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি, 'শুরুতে নিশ্চিত ছিলাম না, প্রস্তাবটা গ্রহণ করব কিনা। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার দিন শেষ হয়ে গেছে। বিসিসিআই অনুমতি দিলে বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলার ইচ্ছা ছিল। আবার বালির অনুরোধও ফেলতে পারছিলাম না।'
'প্রায় দুই-তিন সপ্তাহ ভেবেছি। ফেরার প্রেরণাটা হলো পাঞ্জাবকে চ্যাম্পিয়নশিপ জেতাতে সহযোগিতা করা। হরভজন সিং এবং আমি চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। কিন্তু একসঙ্গে কখনও জেতা হয়নি। ফিরে আসার সিদ্ধান্তে এটাও বড় কারণ।' যোগ করেন যুবরাজ।
গত বছরের জুনে স্বীকৃত সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেন যুবরাজ। কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ ও আবু ধাবিতে টি-টেন লিগে খেলতে এমন সিদ্ধান্ত নেন তিনি। স্বীকৃত সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ায় ভারতীয় ক্রিকেটে ফেরার জন্য বোর্ডের অনুমতির প্রয়োজন পড়ছে যুবরাজের। কারণ ভারতীয় বোর্ডের তত্ত্বাবধানে থাকা ক্রিকেটাররা বাইরের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার অনুমতি পান না।