ইতালিয়ান ভক্তের ছাদে গিয়ে টেনিস খেললেন ফেদেরার
করোনাভাইরাসের ছোবলে পুরো বিশ্ব তখন টালমাটাল। ঘরবন্দি হয়ে থাকাই তখন একমাত্র রাস্তা। সে সেময় কোয়ারেন্টিনে ছিলো ১১ বছর বয়সী ক্যারোলা পেসিনা ও ১৩ বছর বয়সী ভিত্তোরিয়া ওলিভেরিও। কিন্তু এই দুই কিশোরীর ধ্যান-জ্ঞানে টেনিস। এদের আটকে রাখে এমন সাধ্য কার! তারা ঠিকই টেনিস খেলার বুদ্ধি বের করে নেয়।
নিজ নিজ ছাদে থেকেই টেনিস খেলার অভিনব উপায় বের করে ফেলে ক্যারোলা ও ভিত্তোরিয়া। অর্থাৎ, দুজন আলাদা আলাদা ছাদে থেকে টেনিস খেলে। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করতেই হইচই পড়ে যায়। মুহূর্তেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পড়ে।
রাতারাতি পরিচিত হয়ে ওঠে ইতালির লিগুরিয়ার ফিনালে লিগারের এই দুই কিশোরী। তাদের টেনিস খেলার ভিডিওটি নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করে এটিপি ট্যুর। এই ভিডিও নজরে পড়ে সুইজারল্যান্ডের টেনিস তারকা রজার ফেদেরারেরও।
সেই ঘটনার দুই মাস পর ফেদেরার নিজেই গিয়ে হাজির দুই ভক্তের ছাদে। দুই ক্ষুদে ভক্তকে চমকে দিয়ে সেখানে তাদের সঙ্গে একইভাবে টেনিসও খেলেছেন তিনি। প্রিয় তারকাকে কাছে পেয়ে ভাষা হারিয়ে ফেলার অবস্থা ক্যারোলা ও ভিত্তোরিয়ার।
দুজনের কেউই জানতো না ফেদেরারের আসার ব্যাপারে। ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর অনেক সাক্ষাৎকার দেওয়া ক্যারোলা ও ভিত্তোরিয়া এটাকে একটি সাধারণ সাক্ষাৎকারই মনে করেছিল।
ফেদেরারের সঙ্গে দেখা হলে কেমন হতো, সাক্ষাৎকারের একটি প্রশ্নের উত্তরে ভিত্তোরিয়া বলে, 'তার স্ঙ্গে যদি আমার দেখা হতো, আমি তার ওপর হয়তো ঝাঁপিয়ে পড়তাম কিংবা হতভম্ব হয়ে বসে থাকতাম।' ক্যারোলা বলে ওঠে, 'আমি ফেদেরারের খেলার সৌন্দর্য চাইতাম।'
ফেদেরার তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে পর্দার আড়াল থেকে এসব উত্তর শোনেন। এরপর বেরিয়ে এসে নিজের পরিচয় দিয়ে তাদের সঙ্গে টেনিস খেলার আগ্রহের কথা জানান। ফেদেরার বলেন, 'কিছু মজা হয়ে যাক তাহলে? খেলার জন্য প্রস্তুত? হ্যাঁ, শুরু করা যাক।'
ফেদেরারকে সামনে দেখে কোনোভাবেই বিশ্বাস হচ্ছিল না ভিত্তোরিয়ার। স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছিল তার। ১৩ বছর বয়সী ভিত্তোরিয়ার ভাষায়, 'যখন তাকে দেখলাম, আরেকটু হলে অজ্ঞান হয়ে যেতাম।' কেবল এই দুই কিশোরীই নয়, এমন ঘটনায় রোমাঞ্চিত ফেদেরারও।
২০টি গ্র্যান্ড স্লামজয়ী এই সুইস টেনিস তারকা বলেন, 'ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, পুরো ক্যারিয়ারে ওই মুহূর্তটা আমার জন্য বিশেষ ছিল। টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে ভক্ত বা ক্যারোলা-ভিত্তোরিয়ার মতো বাচ্চাদের যে চমক দিতে পেরেছি, এটা বিশেষ কিছু।'
ফেদেরার আরও বলেন, 'আমি বিশ্বের দারুণ সব জায়গায় খেলেছি। কিন্তু এটা সব অভিজ্ঞতার মধ্যে উপরের দিকেই থাকবে। আমরা দেখিয়েছি যেকোনো জায়গায় খেলে সেখান থেকে আনন্দ নেওয়া সম্ভব। সত্যি বলতে সেরা সময় ছিল এটা।' শুধু দেখা করাই নয়, আগামী গ্রীষ্মে ক্যারোলা ও ভিত্তোরিয়াকে রাফায়েল নাদালের একাডেমিতে যাওয়ার ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন ফেদেরার।