পারলেন না সাকিব, জেতা ম্যাচ হারলো কলকাতা
সাকিব আল হাসান যখন উইকেটে গেলেন, তখন ৪৩ বলে ৪৯ রান দরকার কলকাতা নাইট রাইডার্সের। তেমন তাড়াই ছিল না, দেখেশুনে খেলেই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে পারতেন নিতিশ রানা ও সাকিব। কিন্তু এদের কেউ-ই স্থির থাকলেন না। ১৫তম ওভারে নিতিশ, পরের ওভারে সাকিব বিদায় নিলেন। এই ভাঙনের খেলা চললো শেষ ওভার পর্যন্ত। তাতে সহজ ম্যাচ কঠিন করে হেরে গেল কলকাতা।
বুধবার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ছোট সংগ্রহ গড়েও কলকাতাকে ১০ রানে হারিয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। হার দিয়ে এবারের আইপিএল মিশন শুরু করা মুম্বাই দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়ালো। এবারও তারা শিরোপার দাবিদার, হারতে হারতে ম্যাচ জিতে যেন সেই জানানই দিয়ে রাখলো আইপিএলের বর্তমান চাম্পিয়নরা।
চেন্নাইয়ের চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও সূর্যকুমার যাদব ছাড়া কেউ-ই সেভাবে ব্যাট চালাতে পারেননি।। ১৫২ রানে শেষ হয় তাদের ইনিংস।
জবাবে উদ্বোধনী জুটি থেকে ৭২ রান পাওয়ার পরও হঠাৎ-ই দিক হারিয়ে ফেলা কলকাতার ইনিংস শেষ হয় ১৪২ রানে। নিতিশ রানা ও শুভমান গিল ছাড়া কলকাতার কেউ-ই দুই অঙ্কের রানে পৌঁছাতে পারেননি। ৪ উইকেট নিয়ে কলকাতাকে দিক ভুলিয়ে দেওয়া মুম্বাইয়ের লেগ স্পিনার রাহুল চাহার জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে দলকে দারুণ শুরু এনে দেন নিতিশ রানা ও শুভমান গিল। কিন্তু শুভমান গিলের আউটে কিছুক্ষণের মধ্যেই এলেমেলো হয়ে পড়ে কলকাতার ইনিংস। ২৪ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৩ রান করা গিলের পর দ্রুতই ফেরেন রাহুল ত্রিপাঠি।
দেখেশুনে খেলা কলকাতার অধিনায়ক ইয়ন মরগানও দলকে পথ দেখাতে পারেননি। সাকিব আল হাসান গিয়েও হতাশ করেন। তাড়া না থাকলেও উড়িয়ে মারতে গিয়ে সূর্যকুমার যাদবের হাতে ধরা পড়েন ৯ বলে ৯ রান করা সাকিব।
১৮ বলে কলকাতার দরকার তখন ২২ রান। ১৮তম ওভারটি করতে আসেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। মাত্র ৩ রান দেন বাঁহাতি এই স্পিনার। এতে চাপ বাড়ে কলকাতার। ১৯তম ওভারে আরও চাপ বাড়ান জাসপ্রিত মুবরাহ, তার খরচ ৪ রান। শেষ ওভার কলকাতার প্রয়োজন দাঁড়ায় ১৫ রান। যা তুলতে পারেননি আন্দ্রে রাসেল, দীনেশ কার্তিক, প্যাট কামিন্সরা। ২৭ রানে ৪ উইকেট নেন রাহুল চাহার। এ ছাড়া ট্রেন্ট বোল্ট ২টি ও ক্রুনাল একটি উইকেট নেন।
এরআগে ব্যাটিং করা মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ব্যাটসম্যানরা সাকিবকে খেলতে রীতিমতো হিমশিম খেয়েছেন। মারকাটারি ফরম্যাট হলেও বাংলাদেশের বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার ৪ ওভারে মাত্র ২৩ রান খরচা করে নেন একটি উইকেট। এদিন কলকাতার হয়ে সবচেয়ে কম রান খরচা করেছেন সাকিবই।
বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন কলকাতার ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। ১৫ রান দিয়ে ৫টি উইকেট তুলে নেন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে এটাই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। বরুণ চক্রবর্তীও মুম্বাইয়ের ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন।
শুরুতেই দিক হারায় মুম্বাই। যদিও সূর্যকুমার যাদবকে সঙ্গে নিয়ে এই চাপ সহজেই কাটিয়ে তোলেন রোহিত শর্মা। এই জুটিতে ৭৬ রান পায় মুম্বাই। কিন্তু ৩৬ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৬ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলে সূর্যকুমার আউট হলে দিক হারায় আইপিএলের সফলতম দলটি।
কিছুক্ষণ পরই বিদায় নেন ঈষাণ কিষান। ৪৩ রান করে রোহিত আউট হন। এরপর বাকি ব্যাটসম্যানরা কেউই দলের রানচাকা ঘোরাতে পারেননি। দুই ভাই হার্দিক পান্ডিয়া ও ক্রুনাল পান্ডিয়া ১৫ রান করে করেন। প্যাট কামিন্স ২টি এবং বরুণ চক্রবর্তী ও প্রাদিস কৃষ্ণ একটি করে উইকেট নেন।