প্রথম দেখায় মনেই হয়নি এই ছেলের পক্ষে 'শচীন' হওয়া সম্ভব: ওয়াকার ইউনিস
ভারতীয় মাস্টার ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকার ও পাকিস্তানি স্পিডস্টার ওয়াকার ইউনিস। দুজনের টেস্ট অভিষেক হয়েছে একসঙ্গে। ১৯৮৯ সালে। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার টেস্ট সিরিজে। অবশ্য দুজনেই এখন 'প্রাক্তন' ক্রিকেটার।
দ্য গ্রেটেস্ট রাইভালরি পডকাস্টে ওয়াকার জানিয়েছেন শচীনকে প্রথম দেখার স্মৃতি, 'ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের সবাই বারবার ওর কথা বলছিল। ওর প্রশংসা করছিল। বলছিল, স্কুল ক্রিকেটে ট্রিপল সেঞ্চুরি করা একমাত্র স্কুলছাত্র সে। স্কুলেই ট্রিপল সেঞ্চুরি? কে করল? স্কুলে সেঞ্চুরি করতে পারাই তো বিস্ময়কর ব্যাপার!'
'সবসময়ই আমাদের কানে আসত, এই তল্লাট থেকে এই তাগড়া বালক উঠে আসছে, যে এক দুর্দান্ত ক্রিকেটার হয়ে উঠবে। প্রথম দেখায় অবশ্য তাকে তেমন কিছু মনে হয়নি আমার। মনে হয়নি, এই ছেলেটি আজকের দিনের গ্রেট শচীন টেন্ডুলকার হতে যাচ্ছে। এরপর, বছরের পর বছর মাঠে ও মাঠের বাইরে সে যা করেছে, এক কথায় বিস্ময়কর। সেই প্রথম দেখার ক্ষণটিতে আমি একদমই টের পাইনি, এই ছেলে ক্রিকেটের এত বড় এক নাম হয়ে উঠবে। কিন্তু কঠোর পরিশ্রমে সে আমাকে ভুল প্রমাণ করেছে।'
ওই ম্যাচে যদিও শহীদ সাঈদ ও সলিল অ্যাংকোলারও অভিষেক হয়েছিল, কিন্তু ব্যাট-বলের লড়াইয়ে তারা শচীন-ওয়াকার পর্যায়ে পৌঁছতে পারেননি। টেস্টে শচীনকে প্রথম আউট কিন্তু ওয়াকারই করেছেন; সেই অভিষেক ইনিংসে মাত্র ১৫ রান করেছিলেন ভারতীয় জিনিয়াস। ওই সিরিজে এরপর শচীনের ব্যাট থেকে আসে ৫৯, ৮, ৪১, ৩৫ ও ৫৭ রান; এরমধ্যে ওয়াকারের বাউন্সারে একবার নাক ভেঙে রক্তাক্তও হতে হয় তাকে।
'করাচিতে প্রথম টেস্টে আমি তাকে খুব দ্রুতই আউট করি। ও সম্ভবত ১৫ রান করেছিল। এই ১৫ রানের মধ্যেই দারুণ কিছু ক্লাসিক অন-ড্রাইভ ও স্ট্রেট ড্রাইভ মেরেছিল। ওই সিরিজে খুব বেশি রান পায়নি; তবে শিয়ালকোটের সবুজ উইকেটে করা অর্ধশতকটি দারুণ ছিল', স্মৃতি হাতড়ে বলছিলেন ওয়াকার।
'আমরা রেজাল্ট চেয়েছিলাম। সিরিজের যেন রেজাল্ট আসে, সেজন্য ঘাসে ভরা উইকেট বানিয়েছিলাম। ওই ইনিংসের শুরুতেই একটা বল ওর নাকে আঘাত করেছিল। ১৬ বছর বয়সী সেই বালকের মুখ মুহূর্তেই ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছিল ঠিকই, তবে খুবই আত্মবিশ্বাসীও দেখাচ্ছিল তাকে। মনে পড়ে, তার সঙ্গে ব্যাট করছিলেন সিধু; তারা দুজনেই শুরুতে ৫-৭ মিনিট সময় নিয়েছিলেন; তারপর শচীন মারতে শুরু করল। ওই অর্ধশতকের ইনিংসে নিজের জাত চিনিয়েছে সে। তখনই আমাদের বোঝা হয়ে যায়, এই ছেলে বিশেষ কেউ হয়ে উঠবেই।'
- সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস