কৈশোরে ম্যাকডোনাল্ডের এক কর্মী প্রতিরাতে খাওয়াতেন রোনালদোকে, এখনো কৃতজ্ঞ সিআরসেভেন
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/11/25/cristiano_ronaldo.jpg)
বর্তমান বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের একজন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। গর্ব করার মতো অনেক সাফল্য রয়েছে তার, কিন্তু এত সাফল্যেঘেরা ক্যারিয়ারের পরেও নিজের অতীত কখনো ভুলেননি তিনি।
অতীতের সংগ্রামের কথা গর্বভরে স্মরণ করতেও কখনোই দ্বিধাবোধ করেন না সি আর সেভেন খ্যাত রোনালদো। প্রয়োজনের সময় যারা তাকে সহযোগিতা করেছিলেন, বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সাহায্যের হাত; প্রত্যেককেই রোনালদো মনে রেখেছেন। এদের একজন হলেন এডনা। খবর মার্কা-এর।
২০১৯ সালে পিয়ার্স মরগানের সাথে তার সাক্ষাৎকারের এডনার কথা প্রকাশ করেন রোনালদো। সম্প্রতি সাক্ষাৎকারটি আবার সামনে এসেছে। ওই সাক্ষাৎকারে রোনালদোর তার অতীত জীবনের কথা বর্ণনা করেছিলেন।
পর্তুগালের ছোট একটি শহর মাদিরায় রোনালদোর জীবন শুরু। অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছেন। ছোট এক ঘরের একটি কক্ষেই সব ভাই-বোন মিলে থেকেছেন। লড়াই সংগ্রাম করে এক পর্যায়ে রোনালদো হয়ে উঠেছেন সি আর সেভেন।
রোনালদো সবসময় নিঃসংকোচে বলে গেছেন, তার মা একজন রাঁধুনি ছিলেন; বাবা ছিলেন একজন মদ্যপ মালী। তার দেখভাল এবং বেড়ে ওঠা; পুরোটাই তার মায়ের অবদান।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আইটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোনালদো জানান, মাত্র ১২ বছর বয়সে লিসবনের যুব স্পোর্টিং অ্যাকাডেমিতে যাওয়ার জন্য বাড়ি ছেড়েছিলেন তিনি। এটি তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় বলে তিনি মনে করেন। পরিবারের সাথে তিন মাসে একবার দেখা করার সুযোগ পেতেন রোনালদো।
ওই সময়ের একটি স্মৃতি রোনালদোকে ভালোভাবে নাড়া দেয়। লিসবনে রোনালদো তার সতীর্থদের সাথে স্থানীয় ম্যাকডোনাল্ড-এর পেছনের দরজা দিয়ে গিয়ে রাতে বিক্রি না হওয়া হ্যামবার্গার কিনতেন। এডনা নামক একজন নারী এবং তার দুই সহকর্মী সবসময় তাদেরকে সাহায্য করতেন।
এডনাকে খুঁজেছিলেন রোনালদো
এডনাসহ অপর দুই নারীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন রোনালদো। তিনি বলেছিলেন, 'আমি এডনা এবং অন্য দুই নারীকে তুরিন অথবা লিসবন শহরে আমার বাড়িতে আমন্ত্রণ জানাতে চাই। তাদের সাথে একবেলা খেতে চাই। আমি তাদের সামান্য হলেও প্রতিদান দিতে চাই। রাতের বেলা বার্গার খেতে পারাটা কতটা আনন্দের ব্যাপার ছিল আমাদের জন্য, সেটা আপনি অনুধাবনই করতে পারবেন না।'
২০১৯-এর ওই সাক্ষাৎকারের পর এডনা ক্যারিনা এমানুয়েল ক্যলডাসের খোঁজ পাওয়া যায়। তিনি রোনালদোর সঙ্গে দেখা করেন। 'রোনালদোর এমন আচরণে আমি খুশি। এটা আরও প্রমাণ করে ও কতটা বিনয়ী। সত্যিই তো, আমি তার জন্য এমন কেউ নই যে আমাকে সে মনে রাখবে। রোনালদোর আজকের সাফল্যের জন্য আমি খুব আনন্দিত। এত বছরেও আমাকে সে মনে রাখবে এটা আমি কখনো ভাবিনি।'
রোনালদো এবং এডনার পরবর্তী সময়ে আর দেখা হয়েছিল কিনা তা জানা যায়নি। কিন্তু রোনালদো যেমন স্বভাবের, তিনি বোধহয় তার জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ ওই নারীর সঙ্গে আবার সাক্ষাৎকারের কথা ব্যক্তিগতই রাখতে চেয়েছিলেন। এ গল্প সিনেমা তৈরি হওয়ারই মতো, এটি দয়া আর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের গল্প।