ব্যথায় রাত তিনটা পর্যন্ত জেগে ছিলেন আম্রাবাত, ব্যথা নিয়ে খেলতে নেমেই ইতিহাস গড়লেন
সব প্রতিকূলতা ছাপিয়ে মরক্কো কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেছে।
কাতার বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে ফুটবল ভক্তরা ভাবতেও যে মরক্কো এত দূর আসতে পারবে। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে বাঘা বাঘা দলের সাথে খেলতে হয়েছিলো তাদের। বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়া এবং কানাডার মত দলের সাথে খেলে দ্বিতীয় পর্বে কোয়ালিফাই করেছে মরক্কো।
বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে কোনো গোল খাওয়ার রেকর্ড নেই মরক্কোর। কানাডার বিপক্ষে একটি মাত্র গোল হজম করেছে, তা-ও নিজ দলের জালেই বল জড়িয়েছেন নায়েফ।
আন্ডারডগ হিসেবে রাউন্ড অব সিক্সটিনে স্পেনের বিপক্ষে খেলতে নেমে গোলশূন্য ড্র করে মরক্কো। অতিরিক্ত সময়েও গোল করতে পারেনি কোনো দল। সবাইকে অবাক করে দিয়ে টাইব্রেকারে ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে শেষ আটে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করে উত্তর আফ্রিকান দেশটি।
এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে মরক্কোর রক্ষাকবচ হয়ে আশরাফ হাকিমির চমৎকার পেনাল্টি কিকে জয় নিশ্চিত হয় মরক্কোর, কারণ এর আগে সব কয়টি পেনাল্টি শট মিস করেছে স্পেন।
মরক্কোর সমর্থকরা হাকিমির পেনাল্টি কিকের মুহূর্তটি কখনো ভুলতে পারবে না। পিএসজির রক্ষণভাগের খেলোয়াড় এই ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় ছিলেন না হয়তো, কিন্তু সেরাদের একজন তিনি।
ম্যাচজুড়ে প্রশংসার দাবিদার ছিলেন সোফয়ান আম্রাবাত। ১২০ মিনিটের খেলায় একবারও এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের পা থেকে একটি ভুল পাস যায়নি।
সুফিয়ান আম্রাবাত হলেন নেদারল্যান্ডস বংশোদ্ভূত মরোক্কান পেশাদার ফুটবলার, যিনি ওলন্দাজ ক্লাব এবং মরক্কো জাতীয় দলে মাঝমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন।
ম্যাচ-পরবর্তী সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রাত তিনটা পর্যন্ত ফিজিওর সঙ্গে জেগে ছিলেন তিনি। ব্যাথানাশক ইঞ্জেকশন নিয়ে খেলতে নেমেছেন স্পেনের বিপক্ষে।
আম্রাবাত বলেন, 'এই ম্যাচে আমি খেলতে পারব ভাবিনি। আবেগিও হয়ে পড়েছিলাম। গত রাতে ফিজিওর সঙ্গে রাত তিনটা পর্যন্ত জেগে ছিলাম। খেলার আগেও একটা ব্যাথানাশক ইঞ্জেকশন নিতে হয়েছে আমার। আমি আমার সতীর্থদের এড়িয়ে যেতে পারিনি, পারিনি আমার দেশকে দূরে ঠেলে দিতে।'
এটাই হয়তো প্রতিশ্রুতি। ম্যাচ শেষে নিজের আবেগ আর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন অকপটে। আম্রাবাতের জন্য এই আবেগ এখন অন্য উচ্চতায়। মরক্কোর হয়ে জয় এনে কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে টিকে থাকা তার ফুটবল ক্যারিয়ারের সেরা সময়। বিশ্বকাপে অসাধারণ খেলার জন্য প্রিমিয়ার লীগ তাকে ছাড়তে চাওয়ার কোনো কারণ নেই, জানুয়ারিতে ফিওরেন্টিনার হয়ে খেলবেন তিনি এমনটাই আশা ফুটবল ফ্যানদের।