২৩ বছর বয়সী এমবাপ্পে যেন ২৩ বছর বয়সী মেসির মতোই অপ্রতিরোধ্য
কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে আজ (রবিবার) রাত ৯ টায় মুখোমুখি হবে ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ ফাইনালের এ মাহেন্দ্রক্ষণে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় দুই দলের দুই তারকা খেলোয়াড় কিলিয়ান এমবাপ্পে ও লিওনেল মেসি।
যদিও এই দুই তারকার ক্যারিয়ার শুরু দুই ভিন্ন সময়ে, তবুও এমবাপ্পের অসাধারণ সব পারফরম্যান্স যেন ইতিমধ্যেই কিংবদন্তি বনে যাওয়া মেসির সঙ্গে তাকে আলোচনায় আনতে বাধ্য করছে। বর্তমানে এমবাপ্পের বয়স মাত্র ২৩ বছর হওয়ায় ২৩ বছর বয়সী মেসির সাথেও অনেক ভক্ত এমবাপ্পেকে তুলনা করছেন। আর কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে দুই তারকার ২৩ বছর বয়সের তুলনায় দেখা যাচ্ছে চমৎকার সব পরিসংখ্যান।
১৯৯৮ সালে জন্মগ্রহণ করা ফ্রান্স তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পের অভিষেক হয়েছিল ২০১৫ সালে মাত্র সতেরো বছর বয়সে। লীগ ওয়ানে ওই অভিষেকের পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এ পিএসজির তারকাকে। সেই থেকে শুরু করে আজ অবধি এমবাপ্পে যেন অপ্রতিরোধ্য। মাত্র ২৩ বছর বয়সে এমবাপ্পে যখন নিজের দেশের হয়ে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলবেন তখন তার ক্যারিয়ারে ম্যাচের সংখ্যা ৩০২ টি।
৩০২ ম্যাচে ২২২টি গোল করে এমবাপ্পে যেন রীতিমতো গোলের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। শুধু গোল নয়, অ্যাসিস্ট করার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে নেই পিএসজির এ তারকা। ৩০২ ম্যাচে গোলের পাশাপাশি ১১১টি এসিস্ট করেছেন এমবাপ্পে।
এখন যেহেতু ফুটবল বিশ্বকাপ চলছে তাই ক্লাব ফুটবলের কথা বাদ দিয়ে যদি নিজ দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচের পরিসংখ্যানও যদি টানা হয় তবেও দেখা যায়, মাত্র ২৩ বছর বয়সেই দেশের হয়ে ৬৩ ম্যাচে ৩৩ গোল করার অনন্য কীর্তি গড়েছেন এমবাপ্পে।
এবার ১৯৮৭ সালে জন্ম নেওয়া মেসির ২৩ বছর বয়সের সময়কার পরিসংখ্যান দেখা যাক। মেসি ঠিক এমবাপ্পের মতোই মাত্র ১৭ বছর বয়সে ২০০৪ সালে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলেন। আর এর পরের ছয় বছরে মেসিও করেছেন অনন্য সব রেকর্ড; ফুটবল বিশ্বকে জানান দিয়েছেন নিজ যোগ্যতার। তবে সংখ্যার হিসেবে মেসির অনেক পারফরম্যান্সই যেন এমবাপ্পেকে ছুঁতে পারছে না।
২৩ বছর বয়সে মেসি খেলেছিলেন ২৬৯ ম্যাচ; গোল করেছিলেন ১০৮ টি। ম্যাচ ও গোলসংখ্যা দুটিই এমবাপ্পের তুলনায় কম। কিন্তু তৎকালীন সময়ে ফুটবল বিশ্বে মেসির ফুটবল জাদুর প্রমাণ মেলে মাত্র ২৩ বছর বয়সেই দুই দুইটি ব্যালন ডিঅর জেতার পরিসংখ্যান থেকে। অন্যদিকে এমবাপ্পে ২৩ বছর বয়সে এখনো একটিও ব্যালন ডিঅরের দেখা পাননি।
ক্লাব ফুটবলে পরিসংখ্যান যা-ই হোক না কেন, আন্তর্জাতিক ফুটবলে ২৩ বছর বয়সী মেসির থেকে ২৩ বছর বয়সে নিঃসন্দেহে এগিয়ে এমবাপ্পে। মেসি আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে ২৩ বছর বয়সে ৫৭ ম্যাচে গোল করেছিলেন মাত্র ১৭ টি, যা এমবাপ্পের তুলনায় কম। এছাড়াও শুধু ২৩ বছর বয়সেই নয়, বর্তমানে ৩৫ বছর বয়সেও মেসি খুঁজে বেড়াচ্ছেন অধরা বিশ্বকাপ ট্রফিটিকে। অন্যদিকে এমবাপ্পে ২০১৮ সালে ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন মাত্র ২০ বছর বয়সে। আর ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে এমবাপ্পের রয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ।
রেকর্ড সাতটি ব্যালন ডিঅর ও গোল্ডেন বুট ছাড়াও অসংখ্য ব্যক্তিগত অর্জন রয়েছে মেসির। তবে দলগত অর্জনে মেসির ২০২১ কোপা জয়ের স্মৃতিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অর্জন। আর তাই কাতার বিশ্বকাপে এমবাপ্পেদের হারিয়ে ফাইনালে জয় পেলে মেসি নিঃসন্দেহে স্থান পাবেন পেলে, ম্যারাডোনার মতো ফুটবল কিংবদন্তিদের কাতারে। অন্যদিকে চলতি বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে যদি ফ্রান্স জিতে যায় তবে ২৩ বছর বয়সেই এমবাপ্পের কাছে থাকবে দুই দুইটি বিশ্বকাপ শিরোপা।