বাবা-মাসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ক্রিকেটার নাজমুল অপু
দুই দিনে তিনটি দুঃসংবাদ শুনলো বাংলাদেশ ক্রিকেট। কদিন আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার নাফিস ইকবাল। শনিবার বিকালে মাশরাফি বিন মুর্তজার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
সন্ধ্যায় জানা গেল প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন জাতীয় দলের বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। শুধু নাজমুলই নন, তার মা-বাবাও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। নাজমুল নিজেই বিষয়টি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
করোনাভাইরাসের সঙ্কটময় এই সময়ে যে কজন ক্রিকেটার মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়জিত রেখেছেন, তার মধ্যে নাজমুল অপু অন্যতম। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই দুস্থ-অসহায়দের সাহায্য করে আসছেন তিনি।
সহযোগিতার এই কার্যক্রমে নারায়নগঞ্জে সরাসরি মাঠে থেকে কাজ করেছেন বাংলাদেশের হয়ে একটি টেস্ট, ৫টি ওয়ানডে ও ১৩টি টি-টোয়েন্টি খেলা নাজমুল। আর এই কাজ করতে গিয়েই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। যদিও মানুষের সাহায্যে নিয়জিত থাকায় এ নিয়ে আফসোস নেই তার।
আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে দ্য বিজনেজ স্ট্যান্ডার্ডকে নাজমুল অপু বলেন, 'গত সপ্তাহ থেকে অসুস্থবোধ করছিলাম। জ্বর, গা ব্যথা ছিল। বুধবার করোনা পরীক্ষা করিয়েছি। আজ দুপুরেই রেজাল্ট পেয়েছি। পজিটিভ এসেছে, এখন বাসায় আলাদা রুমে আছি। মানুষের কষ্ট দেখে এগিয়ে গিয়েছিলাম। আক্রান্ত হলেও আমার কোনো আফসোস নেই।'
নাজমুলের আফসোস বাবা-মাকে নিয়ে। তার কারণে বাবা-মা আক্রান্ত হওয়ায় কষ্টের কথা জানালেন অপু, 'আমার শরীরের অবস্থা ভালো আছে এখন, কাশি আছে। কষ্টের ব্যাপার হচ্ছে আমার জন্যই আব্বু-আম্মুর হয়েছে। কারণ ত্রাণ সেন্টার থেকে দিচ্ছিলাম। ঈদের পর বন্ধ করে দেওয়ায় মানুষজন বাসায় এসে ত্রাণ নিয়েছে। সমস্যাটা বাসা থেকেই হয়েছে।'
অপুর চিন্তা তার বাবাকে নিয়ে। কারণ ৬৫ বছর বয়সী আলতাব মাহমুদ এমনিতেই হৃদরোগী। নাজমুল বলেন, 'আব্বুর শরীরের অবস্থা ভালো না। আব্বু হার্টের রোগী। আর জ্বর ও প্রচন্ড কাশি আছে। আম্মুর শরীর আল্লাহর রহমতে ভালো। আমার আব্বু-আম্মু এবং আমার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই, যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারি। আবারও মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।'
মানুষের পাশে দাঁড়াতে পরিবার থেকে দূরে ছিলেন নাজমুল অপু। পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষার কথা ভেবে বাড়িতে থাকেননি তিনি। কিন্তু তাতেও রক্ষা হলো না। নাজমুল বলেন, 'আপাতত ঘরেই থাকব। আমি দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে আছি। যখন ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়েছি, তখনও পরিবার ছেড়ে আলাদা থেকেছি। এখন আবার এভাবেই থাকতে হবে।'