মানুষ হিসেবে বড় হওয়াই গুরুত্বপূর্ণ, নাজমুলকে নিয়ে তামিম
করোনাভাইরাসের প্রকোপে স্থবিরতা নেমে এসেছে সবখানে। সারা দেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ। এসব মানুষের সাহায্যে বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটারই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এদের মধ্যে একজন নাজমুল ইসলাম অপু।
করোনাভাইরাস দুর্গতদের সহায়তায় অনেক আগে থেকেই কাজ করে আসছেন বাঁহাতি এই স্পিনার। চাল মাপা থেকে শুরু করে প্যাকেট করা; অন্যান্যদের সঙ্গে এসব কাজও করে যাচ্ছেন নাজমুল ইসলাম। তার এসব কাজে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
জীবনে যে মানুষ হিসেবে বড় হওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, নাজমুলকে দিয়ে সেই উদাহরণ দিয়েছেন তামিম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের অফিসিয়াল পেজে নাজমুলের একটি ছবি পোস্ট করে সতীর্থকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তামিম।
বাংলাদেশ ওপেনারের পোস্ট করা ছবিতে নাজমুলকে চাল মাপতে দেখা যাচ্ছে। ছবিটি পোস্ট করে তামিম লিখেছেন, 'ছবিতে নিজ হাতে চাল মেপে দিচ্ছেন যিনি, মানুষটিকে আপনারা অনেকেই চেনেন। মাঠে তার সেলিব্রেশন আপনাদের আনন্দ দিয়েছে অনেক সময়। এখন সে কাজ করে চলেছে অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। জাতীয় ক্রিকেটার নাজমুল ইসলাম অপু।'
নারায়নগঞ্জে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা সবাইকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। তামিম তার পোস্টে আরও লিখেছেন, 'নারায়ণগঞ্জে করোনার এই ক্রান্তিকাল শুরুর সময় থেকেই অপু নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। নিজে যতটুকু পেরেছে, ও অন্যদের সহায়তা নিয়ে দিনের পর দিন দুঃস্থদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে চলেছে। আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি ওকে সহায়তা করার। আরও অনেকে করেছেন।'
নাজমুল অপুর প্রশংসা করে তামিম লিখেছেন, 'এই প্রবল দুর্যোগের সময় দেশজুড়ে আরও অসংখ্য মানুষ এভাবে অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছে আজ। অপুর যে দিকটি আমার খুব ভালো লেগেছে, সে উদ্যোগ নিয়েছে তো বটেই, নিজেই সবকিছু জোগাড় করে, মেপে, প্যাকেট করে, মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দিচ্ছে। একবার-দুবার নয়, বারবার। একজন জাতীয় ক্রিকেটার যখন এভাবে মানবসেবায় ঝাঁপিয়ে পড়েন, সমাজকে তা খুব ভালো বার্তা দেয়।'
জাতীয় দলে নাজমুল ইসলামের যাত্রাটা দীর্ঘ নয়। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ দলে অভিষেক হওয়া নাজমুল একটি টেস্ট, ৩টি ওয়ানডে ও ১৩টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। কিন্তু মানবতার সেবায় তিনি টেস্টের মতো বড় ইনিংস খেলে চলেছেন। সর্বশেষ তামিম তার পোস্টে লিখেছেন, 'অনেক সময়ই আমাদেরকে বিচার করা হয় শুধু ক্রিকেট দিয়ে। অপু দেখিয়ে দিচ্ছে, মানুষ হিসেবে বড় হওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ!'
তামিম ইকবাল নিজেও বিভিন্নভাবে দুস্থদের সাহায্য করে যাচ্ছেন। নিজের এক মাসের বেতনের অর্ধেকটা শুরুতেই দান করেছেন তিনি। এরপর অ্যাথলেট সামিউল ইসলামের পরিবারের তিন মাসের খরচ দেন তিনি। সর্বশেষ চার সিনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গে মিলে টিম বয় ও মাসাজম্যানদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ওপেনার।