মিরপুরে সোহান-জিয়া ঝড়, ফের ব্যর্থ সাকিব
ইনিংসের শুরুটা দেখে ঝড় বোঝার উপায় নেই। রান তুলতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিলেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ব্যাটসম্যানরা। ১১.১ ওভারে ৪ উইকেটে শেখ জামালের স্কোরকার্ডে তখন মাত্র ৫৬ রান। এখান থেকে দলের হাল ধরে শেষ পর্যন্ত খুনে ব্যাটিং করে গেলেন অধিনায়ক নুরুল হোসেন সোহান। জিয়াউর রহমানও খেললেন ঝড়ো ইনিংস। লড়াকু পুঁজি গড়ে সাকিব আল হাসানের দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে দিলো শেখ জামাল।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মোহামেডানকে ১৬ রানে হারিয়েছে শেখ জামাল। ঘরোয়া এই আসরে প্রথম ম্যাচ হারলো সাকিবের দল, প্রথম তিন ম্যাচেই জিতেছিল তারা। এই হারে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে নেমে গেছে মোহামেডান। ৪ ম্যাচের দুটিতে জয় পাওয়া শেখ জামাল আছে ছয় নম্বরে।
এই ম্যাচেও রানের দেখা পাননি সাকিব, ২ রান করেই ফিরেন যান। রীতিমতো ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী হয়ে আছেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। প্রিমিয়ার লিগের চার ম্যাচে সাকিবের মোট রান ৫১, সর্বোচ্চ ২৯। অবশ্য নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পর কোনো ফরম্যাটেই চেনা সাকিবকে দেখা যায়নি। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি নিজের ছায়া হয়ে আছেন তিনি।
বল হাতে উইকেটের দেখা মিললেও রান করতে যেন ভুলে গেছেন সাকিব। নিষেধাজ্ঞার পর বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি, আইপিএল ও প্রিমিয়ার লিগ মিলিয়ে ১৫টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। ১৩.০৬ গড়ে তার রান ১৯৬। এর মধ্যে সর্বোচ্চ রান ২৯, সেটা এই প্রিমিয়ার লিগে। শেখ জামালের বিপক্ষে হারের দিন বল হাতে দারুণ ছিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান খরচায় ২ উইকেট নেন সাকিব।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা শেখ জামাল ধীর গতিতে শুরু করলেও শেষের দিকে তা পুষিয়ে দেন ম্যাচ সেরা নুরুল হাসান সোহান ও জিয়াউর রহমান। ব্যাট হাতে ঝড় তোলা শেখ জামাল অধিনায়ক ৩৪ বলে ৪টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৬৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন। জিয়াউর রহমান ১৭ বলে একটি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৭ রান করেন। এ ছাড়া সৈকত আলী ২০ ও মোহাম্মদ আশরাফুল ১৫ রান করেন। ৪ ওভারে ৫৩ রান খরচ করে ২টি উইকেট নেন মোহামেডানের পেসার আবু হায়দার রনি।
জবাবে এবাদত হোসেন, মোহাম্মদ এনামুলদের বোলিং তোপে শুরুতেই দিক হারায় মোহামেডান। বিশেষ করে এনামুলের বল খেলতেই পারেনি তারা। দলীয় ১৫ রানের মধ্যেই মোহামেডানের যাওয়া ৪ উইকেটের তিনটিই নেন ডানহাতি এই অফ স্পিনার। পারভেজ হোসেন ইমন, সাকিবদের হারিয়ে আর চাপ কাটিয়ে উঠতে পারেনি ঐতিহ্যবাহী দলটি।
তবু চেষ্টার শেষ রাখেননি শামসুর রহমান শুভ, নাদিফ চৌধুরীরা। যদিও তাদের চেষ্টা দলকে হারতে থেকে বাঁচাতে পারেনি। শামসুর ২৯ রান করেন। নাদিফের ব্যাট থেকে আসে ৪৩ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৭ রানের ইনিংস। এ ছাড়া শুভাগত হোম ১৩ ও আবু হায়দার ১৪ রান করেন। ৩ ওভারে মাত্র ১৩ রান খরচায় ৩টি উইকেট নেন এনামুল। জিয়াউর ২টি এবং এবাদত, আরাফাত সানি ও সালাউদ্দিন শাকিল একটি করে উইকেট নেন।