সাকিব-সুজন কেন মুখোমুখি?
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দল আবাহনী লিমিটেডের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। দুজনের মধ্যে সম্পর্কটা বেশ গাঢ়। এর আগে একটি ফেসবুক লাইভে বিসিবির কর্তাদের চরম সমালোচনা করলেও সুজনকে প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন সাকিব। সেই সুজনের সঙ্গেই বাক-বিতণ্ডায় জড়াতে দেখা গেল বাংলাদেশ অলরাউন্ডারকে।
কেবল বাক-বিতণ্ডাই নয়, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচ চলাকালীন সুজনের দিকে তেড়ে গেলেন সাকিব। সুজনও বসে থাকেননি, সাকিবের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক রুদ্রমূর্তিতে সাকিবের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। দুই দলের ক্রিকেটার, কর্মকর্তারা মিলে দুজনকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেন।
সুজনের সঙ্গে সাকিবের কী হয়েছিল, তা জানতে মোহামেডান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, এ দুজনের মধ্যে কিছুই হয়নি। সাকিবকে ভুল বুঝেছেন সুজন। মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গ্যালারিতে থাকা আবাহনীর কিছু সমর্থকদের গালি-গালাজের কারণে তেড়ে যান সাকিব। কিন্তু সুজন মনে করেছিলেন তাকে উদ্দেশ্য করে সাকিব এগিয়ে আসছেন।
মোহামেডান কর্তৃপক্ষের দাবি, সাকিব পরে ড্রেসিংরুমে এসে বিষয়টি পরিস্কার করাসহ দুঃখ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মোহামেডানের এক কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'সাকিব প্রথমে পুরো ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে খালেদ মাহমুদকে বুঝিয়ে বলেছেন, তাকে উদ্দেশ্য করে কিছুই বলেননি তিনি।'
যদিও আলোকচিত্রীদের ক্যামেরায় ধরা পড়া মুহূর্ত অন্য কিছু বলছে। রাগান্বিত সুজন যখন এগিয়ে যাচ্চিলেন, সাকিব তখন সুজনের দিকে আঙুল তুলে এগিয়ে আসছিলেন। তাকে ফেরানোর চেষ্টা করছিলেন সতীর্থ খেলোয়াড়রা। মোহামেডানের ব্যাটসম্যান শামসুর রহমান শুভ এগিয়ে যান সুজনের কাছে। তিনি আবাহনী অধিনায়ককে সেখান থেকে সরিয়ে নেন।
ঘটনার সূত্রপাত মাঠে। শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মোহামেডানের দেওয়া ১৪৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করছিল আবাহনী। ওভারের পঞ্চম ওভার করছিলেন সাকিব। এই ওভারের শেষ ডেলিভারিটি আবাহনী অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের পায়ে লাগলে এলবিডব্লিউর আবেদন করেন সাকিব।
আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় দুই সেকেন্ডের ব্যবধানে আম্পায়ারকে আক্রমণ করে বসেন সাকিব। লাথি মেরে স্টাম্প ভেঙে আম্পায়ার ইমরান পারভেজ রিপনের সঙ্গে তর্কে জড়ান তিনি। এ সময় আম্পায়ারকে গালি-গালাজ করেন মোহামেডান অধিনায়ক। তার সতীর্থরা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এখানেই থামেনি সব। পরের ওভারে আরও ঔদ্ধত্বপূর্ণ আচরণ করেন সাকিব। এই ওভারটি করতে আসেন মোহামেডানের অফ স্পিনার শুভাগত হোম। প্রথম দুই বলে দুটি চার হজম করতে হয় তাকে। ওভারের পঞ্চম বলের পর বৃষ্টি শুরু হয়, উইকেট ঢাকার নির্দেশ দেন আম্পায়ার। এ সময় এক্সট্রা কভার থেকে দৌড়ে এসে দুই হাতে দুই স্টাম্প তুলে আছাড় মারেন সাকিব।
এরপরও সাকিবকে থামানো যাচ্ছিল না। গালি-গালাজ করতে করতে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। মাঠের বাইরে গিয়ে আরেকটি অঘটনের জন্ম দেন তিনি। আঙুল তুলে কিছু একটা বলে যাচ্ছিলেন তিনি, তেড়ে যাচ্ছিলেন আবাহনীর ড্রেসিং রুমের দিকে। এ সময় আবাহনীর কোচ সুজনকেও সাকিবের দিকে তেড়ে যেতে দেখা যায়।