‘নতুন এক বাঘ আসছে’
শুরুটা হয়েছিল টি-টোয়েন্টি দিয়ে। সংক্ষিপ্ততম এই ফরম্যাটে ২২ ম্যাচ খেলার পর ওয়ানডে খেলার সুযোগ পান নাসুম আহমেদ। অভিষেকটা তেমন মনে রাখার মতো হয়নি বাঁহাতি এই স্পিনারের। কিন্তু ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের কাছে যমদূত হয়ে ওঠেন নাসুম। নতুন শুরুতে উদযাপনেও নতুনত্ব রাখেন বাংলাদেশের এই স্পিনার।
নাসুমের উদযাপন সবারই জানা। উইকেট পাওয়ার পর আকাশে হাত ছুঁড়ে বা লাফিয়ে উঠে উদযাপন করেন তিনি। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে উইকেট পাওয়ার পর ভিন্নভাবে উদযাপন করেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ম্যাচ শেষে উদযাপনের পেছনের গল্প শোনান নাসুম। তার এই উদযাপনের মানে, 'নতুন এক বাঘ আসছে।'
২০২১ সালের মার্চে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় নাসুমের। এরপর এই ফরম্যাটে নিয়মিত সদস্য হয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু ওয়ানডে অভিষেক হতে প্রায় দেড় বছর সময় লেগে যায়। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে পথচলা শুরু হয় নাসুমের। অভিষেক ম্যাচে কৃপণ বোলিং করলেও ছিলেন উইকেটশূন্য।
কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তার স্পিন ছোবলে দিশেহারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নাসুমের ঘূর্ণিতে দিক হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা, আর এই সুযোগে ঘরের মাঠের দলটিকে চেপে ধরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। শুরুর দিকের ৩ উইকেট ঝুলিতে পোরেন নাসুম। মিরাজ ৪ উইকেট নিলেও আসল কাজটি করেছেন নাসুমই। ১০ ওভারে ৪ মেডেনসহ মাত্র ১৯ রান খরচায় ৩ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি এই স্পিনার হন ম্যাচসেরা।
এই ম্যাচে নতুন উদযাপন করেন নাসুম। উইকেট পাওয়ার পর এক হাত আড়াআড়ি রেখে নিচে আরেক হাত খারাভাবে ধরেন তিনি। তার উদযাপন দেখে অনেকটা রিভিউ নেওয়ার মতো মনে হতে পারে। আদতে তা নয়। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ধারাভাষ্যকার ড্যারেন গঙ্গার প্রশ্নের উত্তরে উদযাপনের রহস্য জানান নাসুম।
ধারাভাষ্যকারের প্রশ্নের পর মুখে মৃদু হাসি রেখে নাসুম বলেন, 'আ নিউ টাইগার ইজ কামিং।' তাকে সাহায্য করতে তখন পাশে ছিলেন জাতীয় দলের লজিস্টিক ম্যানেজার ও সাবেক ক্রিকেটার নাফীস ইকবাল। উদযাপনের পেছনের গল্প পরিষ্কার করতে তিনি বলেন, 'উদযাপনের মানে হচ্ছে 'আ নিউ টাইগার ইজ কামিং।' এটা হলো 'T' (এক হাত আড়াআড়ি রেখে নিচে আরেক হাত খারাভাবে ধরা), টি-তে টাইগার, এটিই ওই উদযাপন।'
প্রথম ম্যাচে ৮ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচা করেন নাসুম, কিন্তু পাননি কোনো উইকেট। দ্বিতীয় ম্যাচে উইকেট নিতে মুখিয়ে ছিলেন তিনি। এর জন্য অবশ্য বেশি কিছু করেননি বাংলাদেশের এই স্পিনার। তার ভাষায়, 'আমি খুব রোমাঞ্চিত ছিলাম। প্রথম ম্যাচে উইকেট পাইনি, পরের ম্যাচে যেন উইকেট পাই; ওরকমভাবেই আমি জায়গায় বল রাখার চেষ্টা করছি। উইকেটে যে সহায়তা ছিল, তা নেওয়ার চেষ্টা করেছি।'