মোসাদ্দেক ভেল্কির পরও রাজার ব্যাটে জিম্বাবুয়ের লড়াকু পূঁজি
যমদূত হয়ে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের পথ ভুলিয়ে দিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার স্পিন ভেল্কিতে ৭ ওভারের মধ্যেই ৫ উইকেট হারিয়ে মাঝ দরিয়ায় পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। এরপরও দলকে পথ হারাতে দিলেন না সিকান্দার রাজা। তার সঙ্গে সুর মেলালেন রায়ান বার্ল। এই দুজনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের পূঁজি পেল জিম্বাবুয়ে।
রোববার হারারে স্পোর্টস ক্লাবে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৮ উইকেটে ১৩৫ রান তুলেছে জিম্বাবুয়ে। সিরিজে টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি করা রাজা ও রায়ান বার্ল ছাড়া জিম্বাবুয়ের কেবল একজন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রান করেত পেরেছেন। বাকিদের কেউ ৭ বলের বেশি খেলতে পারেননি, টপকাতে পারেননি ১০ রানের সীমানা।
বল হাতে শুরুটা দাপুটে হয় বাংলাদেশের। স্পিন দিয়ে শুরু করান অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। বল হাতে নিয়েই জাদু দেখাতে শুরু করেন মোসাদ্দেক। ডানহাতি এই অফ স্পিনার প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন রেজিস চাকাভাকে। প্রথম উইকেট হারানোর চাপ কাটিয়ে ওঠারও সুযোগ পায়নি স্বাগতিকরা। এই ওভারের শেষ বলে ওয়েসলে মাধেভেরেকেও সাজঘর দেখিয়ে দেন মোসাদ্দেক।
প্রথম ওভারেই ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যাওয়া জিম্বাবুয়েকে আবারও চেপে ধরেন মোসাদ্দেক। নিজের দ্বিতীয় ওভারে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনের উইকেট তুলে নেন তিনি। সিকান্দার রাজা এক পাশ ধরলেও অন্য প্রান্তে রাজত্ব চালিয়ে যেতে থাকেন মোসাদ্দেক।
বাংলাদেশের বাকি বোলাররাও নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে থাকেন। তবে উইকেট নেওয়ার দায়িত্বটি একাই পালন করে যেতে থাকেন মোসাদ্দেক। উইকেট তুলে নেওয়ার ধারাবাহিকতায় নিজের তৃতীয় ওভারে শন উইলিয়ামসকে ফেরান তিনি। আর চতুর্থ ওভারে মিল্টন শুম্বাকে ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন মোসাদ্দেক, ৪ ওভারে তার খরচা মাত্র ২০ রান।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের দিনে রেকর্ডে নাম উঠে গেছে তার। ডানহাতি এই অফ স্পিনারে নাম বসে গেল ইলিয়াস সানি, সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমানদের পাশে। বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ উইকেট নিলেন তিনি, যা যৌথভাবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা বোলিং। সংক্ষিপ্ততম এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্পিনার ও বোলার হিসেবে বিদেশের মাটিতে ৫ উইকেট নিলেন মোসাদ্দেক।
মোসাদ্দেক তোপে পড়ে ৬.৫ ওভারে মাত্র ৩১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। তখন মনে হচ্ছি ১০০ রানও হয়তো করতে পারবে না প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দাপুটে জয় পাওয়া দলটি। কিন্তু সিকান্দার রাজার কারণে সেই বিপদে পড়তে হয়নি স্বাগতিকদের। রায়ান বার্লের সঙ্গে জুটি গড়ে তোলেন আগের ম্যাচে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালানো রাজা।
বার্লের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ৮০ রানের জুটি গড়েন রাজা, বার্লের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ফেরার আগে ৩১ বলে ৩টি চারে ৩২ রান করেন তিনি। পরের ওভারে রাজাকে ফেরান মুস্তাফিজ। দলের দুঃসময়ে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়া রাজা ৫৩ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬২ রান করেন। লুক জংওয়ে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন।
মোসাদ্দেক উইকেট বৃষ্টি নামালেও সবচেয়ে কৃপণ বোলিং করেন শেখ মেহেদি হাসান। ডানহাতি এই অফ স্পিনার ৩ ওভারে মাত্র ১০ রান দেন। মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩ রানে এক উইকেট নেন। দেড় বছর পর জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামা হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে ২৪ রানে নেন এক উইকেট। শরিফুল ইসলাম ৪ ওভারে ৩৭ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি।