মুজিব-রশিদের তোপের পর মোসাদ্দেকের লড়াই, বাংলাদেশের ছোট পূঁজি
যাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভয় ছিল, সেই মুজিব-উর-রহমানই যমদূত হয়ে হাজির হলেন। আফগানিস্তানের ডানহাতি এই অফ স্পিনার শুরুতেই দিক ভুলিয়ে দিলেন বাংলাদেশকে, তুলে নিতে থাকলেন একের পর এক উইকেট। পরে যোগ দিলেন বিশ্বের সেরা লেগ স্পিনার রশিদ। তাদের যুগলবন্দীতে পথ হারিয়ে খাদের কিনারে বাংলাদেশ। এরপরও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ইনিংস সেরা রান করা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ব্যাটিংয়ে ছোট পূঁজি পেল বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার শারজাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটে ১২৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ। আফগানদের দারুণ বোলিংয়ের সামনে মুখ থুবড়ে পড়া বাংলাদেশের ইনিংসে কেবল মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেক প্রত্যাশা মতো ব্যাটিং করতে পেরেছেন। শেষ দিকে কিছুটা অবদান রাখেন শেখ মেহেদি হাসান। তাকে নিয়েই ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটি গড়েন দারুণ ব্যাটিং করা মোসাদ্দেক।
মাহমুদউল্লাহ তবু ইনিংস বড় করতে পারেননি। তবে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে টি-টোয়েন্টি মেজাজেই রান তুলেছেন মোসাদ্দেক। ডানহাতি এই মিডল অর্ডারের ব্যাটেই মূলত লড়াইয়ের পূঁজি পায় সাকিব আল হাসানের দল। না হলে ৬ পাওয়ার প্লে ৬ ওভারে ২৮ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হতে পারতো ১০০ রানের আগেই।
দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার নাঈম শেখকে হারায় বাংলাদেশ। দারুণ এক ক্যারম বলে বাঁহাতি এই ওপেনারের স্টাম্প উপড়ে নেন মুজিব। ৮ বলে ৬ রান করে থামেন নাঈম। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এনামুল হক বিজয়কে সাজঘর দেখিয়ে দেন আফগান অফ স্পিনার। এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরার আগে ১৪ বলে ৫ রান করেন বিজয়।
উইকেট নেওয়ার ধারাবাহিকতা তৃতীয় ওভারেও ধরে রাখেন মুজিব। এই ওভারে তার শিকার বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ক্যারম বলেই নিজের তৃতীয় উইকেট ঝুলিতে পোড়েন আফগান অফ স্পিনার। এই উইকেট দিয়ে দ্বিতীয় কনিষ্ঠ বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ২০০ উইকেট পূর্ণ হয় তার। ৯ বলে ২টি চারে ১১ রান করেন সাকিব।
দলের দুঃসময়ে হাল ধরতে পারেননি মুশফিকুর রহিমও। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের উইকেট তুলে নেন রশিদ খান। তারকা এই লেগ স্পিনারের বলে পরাস্থ হন মুশফিক, জোড়ালো আবেদন করে আফগানিস্তান। আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নিয়ে মেলে সফলতা। ৪ বলে ১ রান করে ফেরেন মুশফিক।
এরপর জুটি গড়েন আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মাহমুদউল্লাহ। যদিও তাদের জুটি বড় হতে দেননি রশিদ খান। ১৫ বলে ১৫ রান করা আফিফকে ফিরিয়ে দেন তারকা এই লেগ স্পিনার। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে যোগ দেন মোসাদ্দেক। শুরু থেকেই টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলতে থাকেন দলকে খাদের কিনার থেকে টেনে তোলা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
ষষ্ঠ উইকেটে ৩৬ রান যোগ করেন মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেক। রশিদ খানের বলে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকা মাহমুদউল্লাহ। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন। এরপর মেহেদিকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন এক পাশ আগলে রান তুলে যেতে থাকা মোসাদ্দেক। এই জুটি থেকে সর্বোচ্চ ৩৮ রান পায় বাংলাদেশ।
শেষ বলে আউট হন ১২ বলে ২টি চারে ১৪ রান করা মেহেদী। মোসাদ্দেক ৩১ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৮ রানের দারুণ ইনিংস খেলেও অপরাজিত থাকেন। মুজিব ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রানে ৩টি উইকেট নেন। ৪ ওভারে ২২ রান খরচায় রশিদের শিকারও ৩ উইকেট। বাংলাদেশের যাওয়া ৭ উইকেটের ৬টিই তাদের ঝুলিতে। একটি উইকেট রান আউট থেকে পায় আফগানরা।