জামালপুরে ‘নেইমার’, ‘মেসি’র বাড়ি দেখতে উৎসুক জনতার ঢল
ঘনিয়ে আসছে কাতার বিশ্বকাপের দিনক্ষণ। বাড়ছে সারা বিশ্বে উত্তেজনা, উন্মাদনা, উদ্দীপনা । সবাইকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের সমর্থকেরা যেন সবদেশ থেকে এগিয়ে থাকে এই উন্মাদনায়।
আর এ সবকিছুকেই ছাপিয়ে ভিন্নমাত্রার সংযোজন জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের চরদাতনা পূর্বপাড়া গ্রামের 'নেইমার' ও 'মেসি'র দুইটি বাড়ি।
এই গ্রামের বাদশা আলমের ছেলে শামীম হাসান প্রায় ২ মাস পরিশ্রম করে তার বাড়িটিকে গড়ে তুলেছেন আর্জেন্টিনা ও মেসিময় করে। ইসলামপুর সরকারি কলেজের ডিগ্রি ৩য় বর্ষের ছাত্র শামীম হাসান তার পুরো বাড়টিকে আর্জেন্টিনার পতাকার রঙে একেছেন। আর বাড়ির সামনের অংশে মেসির বিশাল আকৃতির ছবি একেছেন, আর একপাশে ম্যারাডোনার ছবি।
বাড়িটি নিজেই রঙ করেছেন তিনি, আর মেসি ও ম্যারাডোনার ছবি একেছেন তার পাশের বাড়ির স্বপন মিয়া।
ছোটবেলা থেকেই আর্জেন্টিনার ভীষণ ভক্ত এই সমর্থকের এই কাজের সিংহভাগের খরচ জোগাড় করেছেন তার বাড়ির পাশে করা একটি ছোট দোকানের আয় থেকে। লেখাপড়ার পাশাপাশি ঐ দোকানটি পরিচালনা করেন তিনি।
তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আমার এই বাড়িটি নিয়ে এলাকার সবার মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে । তাছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক ফুটবল ভক্তরা আসছেন আমাদের এই বাড়িটি দেখতে। আমি চাই মেসির মতো খেলোয়াড় আমাদের দেশে তৈরি হোক।'
অপরদিকে একই এলাকার পল্লী চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মোঃ মিনহাজ ইসলাম ইসলামপুর সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক ২য় বর্ষের ছাত্র ব্রাজিল দলের অন্ধ ভক্ত।
তিনি বলেন, 'আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা যদি মেসির বাড়ি তৈরি করতে পারে আমরা কেন পারবো না নেইমারের বাড়ি তৈরি করতে। আমি ব্রাজিলের সমর্থকদের কথা চিন্তা করে ব্রাজিলের পতাকা রঙে আমার বাড়িটি রাঙ্গিয়েছি আর বাড়ির নাম দিয়েছি ব্রাজিল বাড়ি।'
'এলাকার এবং দূর-দূরান্তের ব্রাজিলের সমর্থকেরা আসে আমার বাড়িটি দেখতে। আমার বাবাও একজন ব্রাজিল সমর্থক। তিনি আমার বাড়ি করার সমস্ত খরচ দিয়েছেন। বাড়ির রঙের কাজ সম্পূর্ণ আমি নিজ হাতে করার পরও প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে', যোগ করেন তিনি।
উল্লেখ্য ,শামীম হাসান ও মিনহাজ ইসলাম দুজন সম্পর্কে চাচাতো ভাই।
দুজনেরই বাড়িতে খেলোয়াড়দের ছবি একেছেন একই গ্রামের আর্জেন্টিনা ভক্ত স্বপন মিয়া।
জামালপুর শহরের গেইটপাড় কদমতলা থেকে আগত ব্রাজিল সমর্থক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'আমি অনেক উৎসাহ নিয়ে এখানে এসেছি এবং খুব ভালো লাগল। অনেক দূর-দূরান্তের জেলার মানুষেরা আসছে এই বাড়ি দুটো দেখতে।'
গাইবান্ধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান আনসারী বলেন, 'আমি বাড়ি দুটো প্রায়ই দেখতে যাই। দূর -দূরান্তের বিভিন্ন লোকজন আসে এবং তাদের আতিয়থিয়তা করতে হয় আমাকে।'
ইসলামপুর পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের শেখ বলেন , 'আমি নিজেও একজন খেলোয়াড় ছিলাম এবং প্রথম শ্রেণীর বিভিন্ন ক্লাবে খেলেছি। সুতরাং, আমার নিজের উপজেলার লোক হিসেবে তাদের এই কাজকে আমি উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি বিভিন্নভাবে।'