হতাশা কাটিয়ে আফিফের ব্যাটিং শো, মিললো লড়ায়ের পূঁজি
তিন বলেও রানের খাতা খুলতে পারলেন না সাব্বির রহমান, হাফ শটে ক্যাচ তুলে সাজঘরে। লিটন কুমার দাসের দারুণ শুরুর অপমৃত্যু একই ধরনের শটে। মেহেদী হাসান মিরাজ বল তুললেন আকাশে। যেন প্রতিপক্ষকে ক্যাচ অনুশীলন করতে নেমেছিলেন সবাই।
ইয়াসির আলী রাব্বির আউটের ধরন আরও হতাশার। তবু ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশ লড়াইয়ের পূঁজি পেল। টি-টোয়েন্টিতে দলের ত্রাতা হয়ে ওঠা আফিফ হোসেন ধ্রুবর ব্যাট হাতে পথ দেখালেন, অবদান রাখেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানও। অবশ্য আফিফও ক্যাচ তুলে বেঁচে চান একবার।
রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ১৫৮ রান তুলেছে চরম হতাশায় ইনিংস শুরু করা বাংলাদেশ। সংক্ষিপ্ততম এই ফরম্যাটে তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা আফিফ অসাধারণ ব্যাটিংয়ে সর্বোচ্চ ৭৭* রানের ইনিংস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ৩৫* সোহানের। বাকিদের কেউ ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি।
চরম অগোছালো শুরু করা বাংলাদেশ পাওয়ার প্লে ৬ ওভার থেকে ৪২ রান তোলে, উইকেট হারায় ৪টি। ইনিংসে উদ্বোধন করতে নেমে মিরাজ নিজের কাজটা ঠিকভাবে শুরু করলেও সাব্বির ব্যর্থ হন। দ্বিতীয় ওভারে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন ৩ বলেও কোনো রান করতে না পারা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
লিটন সাবলীল শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে আকাশে বল তোলেন তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা টপ অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। জুনায়েদ সিদ্দিকের তালুবন্দী হওয়ার আগে ৮ বলে ৩টি চারে ১৩ রান করেন লিটন।
দলীয় ৩৫ রানে বিদপ বাড়ে মিরাজের বিদায়ে। ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে টপ এজ হয়ে যায়, ১৪ বলে ২টি চারে ১২ রান করে ফেরেন তিনি। ইয়াসির খুবই দৃষ্টিকটুভাবে আউট হন। ফুটওয়ার্কের দীনতায় বোল্ড হয়ে যান ৭ বলে ৪ রান করা মিডল অর্ডার এই ব্যাটসম্যান।
অন্য প্রান্তে ভাঙনের সুর বাজলেও আফিফ ছিলেন অবিচল। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও হতাশ করে ফেরেন। ৮ বলে ৩ রান করে স্টাম্পিং হন তিনি। অধিনায়ক হোসানকে নিয়ে লড়াই শুরু হয় আফিফের। উইকেট হারানোর চাপ কাটিয়ে এই জুটি পাল্লা দিয়েই রান তোলা শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করেন তারা।
৫৪ বলে ৮১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ার পথে ৩৭ বলে ৫০ পূর্ণ করেন আফিফ। এরপর আরও হাত খুলে ব্যাটিং শুরু করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। চোখ ধাঁধানো সব শটে ৫৫ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৭৭ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন আফিফ। টি-টোয়েন্টিতে এটাই তার সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
শেষ বলে ছক্কা মেরে ইনিংস শেষ করা বাংলাদেশ অধিনায়ক সোহান ২৫ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় হার না মানা ৩৫ রান করেন। আমিরাতের কার্তি মিয়াপ্পান সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান সাবির আলী, আয়ান আফজাল খান ও জাওয়ার ফরিদ।