দ্বিতীয়বার চেক ইস্যু করে সাফজয়ীদের পুরস্কার বুঝিয়ে দিলো বিসিবি
গত বছরের সেপ্টেম্বরে কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ইতিহাস রচনা করে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতেন সাবিনা-কৃষ্ণারা। মেয়েদের সাফল্যে পুরো দেশে উৎসবের জোয়ার বয়ে যায়। ছাদখোলা বাসে রাজসিক সংবর্ধনা দেওয়া হয় তাদের, বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পুরস্কার ঘোষণা করে। তাতে শামিল হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। পরদিন ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে বিসিবি।
অক্টোবরে নারী ফুটবল দলের সদস্যদের নামে আলাদা আলাদা চেক ইস্যু করে বিসিবি। কিন্তু বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কার্যক্রমের জটিলতার কারণে বিজয়ীদের চেক বুঝিয়ে দিতে পারেনি বিসিবি। ৬ মাস পরে এসে দ্বিতীয়বার চেক ইস্যু করে সাফজয়ী নারী দলের সদস্যদের পুরস্কার বুঝিয়ে দিয়েছে দেশের ক্রিকেটে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার বিসিবি কার্যালয়ে চেক হস্তান্তর করা হয়। ৫০ লাখের ঘোষণা থাকলেও সমন্বয় করতে ১ লাখ টাকা বাড়িয়ে ৫১ লাখ টাকা দিয়েছে বিসিবি।
মিরপুরে চলমান বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের মধ্যেকার একমাত্র টেস্টের তৃতীয় দিনে বিসিবি কার্যালয়ে আসেন নারী দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন, অধিনায়ক সাবিনা খাতুনসহ তিন ফুটবলার। বিকেলের দিকে বিসিবির বোর্ড রুমে তাদের হাতে চেক তুলে দেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। এ সময় ছিলেন আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠু এবং বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী।
চেক হস্তান্তরে দেরি হওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে জালাল ইউনুস বলেন, 'গত অক্টোবরে চেক ইস্যু করা হয়েছিল। ৬ মাস পার হয়ে গেছে। আমরা নতুন করে আবার চেক ইস্যু করে তাদের হাতে তুলে দিলাম। তাদের (বাফুফে) সঙ্গে একটা যোগাযোগ ঘাটতি ছিল। আমরা চেয়েছিলাম এটা গত বছর দিতে। উনারাও ব্যস্ত ছিলেন। আমরাও কয়েকবার যোগাযোগ করেছি। উনারা সময় করতে পারেননি, আমরাও চেক হাতে তুলে দিতে পারিনি।'
অর্থাভাবে প্যারিস অলিম্পিক বাছাইয়ের এশিয়ান পর্বে অংশ নিতে বাংলাদেশ নারী দলকে মিয়ানমারে পাঠাতে পারেনি বাফুফে। এই আলোচনায় যখন তুঙ্গে, তখনই নতুন করে উঠে আসে বিসিবির পুরস্কার ঘোষণা করার বিষয়টি। এরপর জানা যায় বাফুফের গড়িমসির কারণে বিসিবি চেষ্টা করেও সাফজয়ীদের পুরস্কার বুঝিয়ে দিতে পারেননি।
যদিও কদিন আগে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন জানান, বিসিবির পুরস্কার ঘোষণার বিষয়টি তিনি জানেন না। তিনি বলেন, 'মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মানিক (বাফুফে সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক) টাকা দিয়েছে। সালামের (বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী) পে অর্ডার করে রেডি আছে। বিসিবির খবর জানি না। অনেকে টিভি পর্দায় বলেছে।'
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন অবশ্য বাফুফে সভাপতির এমন বক্তব্যকে মিথ্যা বলে আখ্যা দিয়েছেন। বুধবার নারী ফুটবল দলের পুরস্কারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে নাজমুল হাসান বলেন, 'মিথ্যা কথা (বিসিবির টাকা দিতে দেরি হচ্ছে)। ওরা (বাফুফে) নেয় না। বারবার বলা হচ্ছে। সুজনের (সিইও) সঙ্গে কথা বলেন, বলতে পারবে। আমাদের অক্টোবর মাসে চেক সই করা একদম নামে নামে।' জালাল ইউনুস জানান, যোগাযোগের ঘাটতির কারণে পুরস্কার বুঝিয়ে দিতে দেরি হয়েছে।