সাংবাদিকদের বাবা-মা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে ক্ষমা চাইলেন সালাউদ্দিন
আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা। প্রায় ঘণ্টা চারেক ধরে হওয়া এই সভা শেষে বোর্ড রুমে ঢোকার অনুমতি মেলে অপেক্ষারত ক্রীড়া সাংবাদিকদের।
বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ শীর্ষ কর্তাদের প্রায় অনেকেই ছিলেন সেই কক্ষে। সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগ মুহূর্তে বাফুফে সভাপতির সামনে রেকর্ডার অন করে রাখছিলেন সাংবাদিকরা।
আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে বাফুফে সভাপতি পাশে বসা অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্মেলনে আসা সাংবাদিকদের কটাক্ষ করে কথা বলা শুরু করেন। যেখানে তিনি সাংবাদিকদের বাবা-মাকেও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে কার্পণ্য করেননি!
এমনিতেই বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের নিষেধাজ্ঞা, বাফুফের অনিয়ম, দুর্নীতি-জালিয়াতি কান্ড সংবাদ মাধ্যমে নিয়মিত প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই সাংবাদিকদের যেন সরাসরি শত্রুর আসনে বসিয়েছেন সালাউদ্দিন। সেই ক্ষোভটাই ঝাড়তে গিয়ে সাংবাদিকদের পরিবার নিয়ে যা তা বলেছেন সহকর্মীদের কাছে।
অডিও রেকর্ড অন করার পর সালাউদ্দিনের কথা শুনে রীতিমত বিস্মিত ক্রীড়া সাংবাদিকরা। সালাউদ্দিন নিজের পাশে থাকা বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদি ও সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিকের কাছে বলে ওঠেন, 'জার্নালিস্টরা এখানে ঢুকতে গেলে ফটো দিতে হবে তাদের বাপ-মা'র।'
এরপর পাশে থেকে উপস্থিত বাফুফের সদস্যদের মধ্যে কেউ একজন কথা বলেন, যার উত্তরে সালাউদ্দিন বলেন, 'আরেকটা কন্ডিশন হলো তার বাপের ফটো পাঠাতে হবে জুতা পড়া। ঠিক আছে? এটা হতে হবে মেন্ডেটরি। বাপের জুতা পড়া ছবি থাকতে হবে।'
এই কথা দিয়ে ক্রীড়া সাংবাদিকদের পরিবারদেরকে রীতিমত হেয় করেছেন সালাউদ্দিন। অথচ কেবল সাংবাদিক সমাজে নয়, সালাউদ্দিনদের অনিয়ম-জালিয়াতি নিয়ে গোটা দেশেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দেশের ফুটবলপ্রেমীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সালাউদ্দিনকে ফুটবলের শত্রু আখ্যা দিয়েছেন। সালাউদ্দিনের এমন উক্তিতে ক্ষোভে ফুসছে সাংবাদিক সমাজ।
খুব বেশি সময় না গড়াতেই সালাউদ্দিন তার মন্তব্য নিয়ে ক্ষমাও চেয়েছেন, 'আমি দেখেছি যে, আমি সাংবাদিকদের আহত করার জন্য একটা কথা বলেছি। আসলে আমি সাংবাদিকদের কষ্ট দেওয়ার জন্য কিছু বলিনি। আমি নাবিলের সঙ্গে একটি জিনিস নিয়ে মজা করছিলাম। সেটা যে কেউ টেপ করছিল, আমি জানি না।"
বাফুফে সভাপতি আরো যোগ করেন, 'এ কথায় আমি যদি কাউকে দুঃখ দিয়ে থাকি, তাহলে আমি খুব দুঃখিত, ক্ষমা চাই। আমি কাউকে উদ্দেশ্য করে বলিনি। আমাদের ব্যক্তিগত মজা চলছিল। ওখানে যে টেপ আছে, সেটাও আমি জানি না। কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে, অবশ্যই এটার জন্য আমি খুব দুঃখিত।'
এদিকে আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে গড়া বাফুফের দশ সদস্যের কমিটি থেকে দুজনের পদত্যাগ নিয়েও কথা বলেন সালাউদ্দিন। পদত্যাগ করা দুজন হলেন বাফুফের দুই সহসভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া ও মহিউদ্দিন আহমেদ। মহিউদ্দিন আহমেদ পদত্যাগ করেন ২৬ এপ্রিল। আতাউর রহমান সরে দাঁড়ান গত ২৪ এপ্রিল।
তবে বাকি আট জনকে নিয়ে নিজেদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন এই আহ্বায়ক কমিটির প্রধান বাফুফের আরেক সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ, 'আমাদের কমিটিতে যারা রয়েছেন তারা অত্যন্ত বিজ্ঞ এবং অভিজ্ঞ। তাদের নিয়ে আমরা শীঘ্রই কাজ শুরু করব। আমরা প্রথম সভা করে একটি রূপরেখা করব। প্রথম সভার পরই আমাদের কর্মপদ্ধতি ও নানা বিষয় অবহিত করা হবে।'