সালাউদ্দিনকে বহিষ্কার করলো বিএসপিএ
ক্রীড়া সাংবাদিকদের পরিবার নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসপিএ, ক্রীড়া লেখক সমিতি নামেও পরিচিত) সম্মানসূচক সদস্য পদ হারালেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। বুধবার এক বিবৃতিতে সালাউদ্দিনকে বহিষ্কার করার কথা জানায় বিএসপিএ। ২০১২ সাল থেকে ক্রীড়া সাংবাদিকদের ঐতিহীবাহী এই সংগঠনের সদস্য ছিলেন বাফুফে সভাপতি। এ ছাড়া ক্রীড়া সাংবাদিক ও তাদের পরিবার নিয়ে সালাউদ্দিন ও বাফুফে সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদের আপত্তিকর মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বিএসপিএ।
বিএসপিএর বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, 'বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন ও বাফুফে সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ ক্রীড়া সাংবাদিকদের নিয়ে সম্প্রতি যেসব আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে। সাংবাদিকদের ওপর তাদের কতটা বিদ্বেষ, সেটা প্রকাশ পেয়েছে তাদের কথাবার্তায়। তারা শুধু সাংবাদিকদের নয়, তাদের পরিবার এমনকি সাংবাদিকদের মা-বাবাকে পর্যন্ত কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। এটা পুরো সাংবাদিক সমাজকে ভীষণভাবে আহত করেছে।'
'একজন লিজেন্ডারি খেলোয়াড় হিসেবে বাফুফে সভাপতি পদে বসার পর কাজী মো. সালাউদ্দিনকে ২০১২ সালে বিএসপিএ সম্মানসূচক সদস্য পদ দিয়ে আপন করে নিয়েছিল। পরীক্ষিত ক্রীড়া সংগঠক, কিংবদন্তি খেলোয়াড় এবং মিডিয়া সংশ্লিষ্ট ক্রীড়া সংগঠকদের সম্মানসূচক সদস্য পদ দেওয়ার রেওয়াজ আছে এই সংগঠনের। এই ধারায় বিএসপিএ সাবেক বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) প্রধান ও বর্তমানে মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ অনেক ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে সম্মানিত করেছে সম্মানসূচক সদস্য পদ দিয়ে।'
বিবৃতিতে আরও লেখা হয়েছে, 'একইভাবে কাজী মো. সালাউদ্দিনকে সম্মানসূচক সদস্যপদ দেওয়া হয়েছিল। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার আচরণ, বক্তব্য সবকিছুই এই ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া সাংবাদিক সংগঠনের মতাদর্শের পরিপন্থী। তার কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ক্রীড়া সাংবাদিকদের আত্মসম্মানে আঘাত হেনেছে। তাই বিএসপিএর কার্যনির্বাহী কমিটি আজ জরুরি সভা করে কাজী মো. সালাউদ্দিনকে সম্মানসূচক সদস্য পদ থেকে বহিস্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'
মঙ্গলবার বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে বাফুফে সভাপতি পাশে বসা অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাংবাদিকদের কটাক্ষ করে কথা বলা শুরু করেন। সাংবাদিকদের বাবা-মাকেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন তিনি, যা সাংবাদিকদের রাখা মোবাইলে রেকর্ড হয়।
অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, সালাউদ্দিন তার পাশে থাকা বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদি ও সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিকের কাছে বলছেন, 'জার্নালিস্টরা এখানে ঢুকতে গেলে ফটো দিতে হবে তাদের বাপ-মায়ের।' পাশে থেকে বাফুফের এক সদস্যদের কথার উত্তরে সালাউদ্দিন বলেন, 'আরেকটা কন্ডিশন হলো তার বাপের ফটো পাঠাতে হবে জুতা পড়া। ঠিক আছে? এটা হতে হবে মেন্ডেটোরি। বাপের জুতা পড়া ছবি থাকতে হবে।' বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে পরে ক্ষমা চান সালাউদ্দিন।