বিশ্বকাপজয়ী মার্তিনেসের সঙ্গে দেখা করে ‘মহাখুশি’ মাশরাফি
ডিয়েগো ম্যারাডোনার খেলা দেখে ভক্ত হওয়া, এরপর থেকে আর্জেন্টিনার পাঁড় ভক্ত মাশরাফি বিন মুর্তজা। সেই দেশের বিশ্বকাপজয়ী দলের গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেসের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হলো মাশরাফির। বিশ্বজয়ের মিশনে প্রিয় দলটির অন্যতম সেনানীর সঙ্গে দেখা করতে পেরে অভিভূত জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
মেয়ে হুমায়রা ও সাহেলও মাশরাফির সঙ্গে ছিল। বাবার মতো আর্জেন্টিনার ভক্ত মাশরাফির সন্তানরা মার্তিনেসের সঙ্গে দেখা করতে পেরে খুশিতে আত্মহারা। তাদের খুশিতে মহাখুশি মাশরাফিও। দারুণ এই অনুভূতির কথা মাশরাফি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন। মার্তিনেসের সঙ্গে দেখা করার কয়েকটি ছবি পোস্ট করে মাশরাফি লিখেছেন-
'এমিকে ভালো লাগার শুরু কোপা আমেরিকা থেকেই, যেখানে সে টাইব্রেকারে দুটি গোল আটকে দিয়ে দলকে জয় এনে দিল। কত বছর পর বড় কোনো শিরোপা জিতল আর্জেন্টিনা! লিওনেল মেসিও পেল দেশের হয়ে প্রথম বড় ট্রফির স্বাদ। স্বাভাবিকভাবেই পাখির চোখে তাকিয়ে ছিলাম বিশ্বকাপের দিকে। কিন্তু সৌদি আরবের সাথে হেরে মনে হয়েছিল, আরেকটি বিশ্বকাপও হয়তো শেষ হবে হতাশায়। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ানো এবং পরে বিশ্বকাপ জয় দেখতে পারাটা ছিল অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণের মতো।
সেই জয়ের অন্যতম নায়ক এমির সঙ্গে দেখা হলো আমাদের এই ঢাকায়। খুব অল্প সময়ের জন্য দেখা, কিন্তু দারুণ এক অনুভূতি। বিশ্বকাপজয়ী দলের গোলকিপার চোখের সামনে! সে তো জানে না, আমার এবং আমার মতো আরও কত কোটি মানুষের কত বছরের অপেক্ষা শেষ হলো, যেদিন তার ওই হাত ধরেই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয় করল!
আজ সে ইন্টারভিউয়ের মাঝেই একবার ট্রাউজার উঠিয়ে দেখাল, পায়ের ঠিক সেই জায়গায় একটি ট্যাটু করিয়েছে, বিশ্বকাপ ফাইনালে শেষ বাঁশির ১৮ সেকেন্ড আগে কোলো মুয়ানির শটটি আটকিয়ে দিয়েছিল যে জায়গা দিয়ে। এক সেকেন্ডের জন্য মনে হলো, আসলে বিশ্বকাপটা তো ওখানেই জিতে নিয়েছে।
আজ আসলে বেশি ভালো লাগছে আমার সন্তানদের জন্য। যখন বললাম, 'এমি আসছে, তোমাদের কি দেখা করার ইচ্ছা আছে?' ওরা লাফাচ্ছিল। সবশেষ দুটি দিন ওরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারছিল না এমিকে দেখবে বলে। আজ এমির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বললাম, 'বাচ্চারা তোমার অটোগ্রাফ নিতে চায়।' সে এতো আন্তরিকতা দেখাল, এক কথায় অসাধারণ। এমনকি সে ছবিও তুলে দিল ওদের সঙ্গে। এখন তারা মহাখুশি, আর ওদের খুশিতে আমিও এখন মহাখুশি।
এমি, আপনাকে স্বাগত এই বাংলার মাটিতে। এখানে আপনাদের অগুনতি ভক্ত আছে, যুগ যুগ ধরে। আশা করি, আপনারও ভালো লাগছে এই মাটিতে পা রেখে। পাশাপাশি এটাও ভাবি, সত্যি বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ ফুটবলে কোয়ালিফাই করবে আর আমরা আমাদের পতাকা নিয়ে মিছিল করব, ইনশাআল্লাহ। অনেকের কাছে এখন এটা অবাস্তব মনে হতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি, কাজটা কঠিন, খুব কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। স্বপ্ন পূরণের সেই দিনটির অপেক্ষায় আছি, ইনশাআল্লাহ।'
মার্তিনেসের মূল সফর কলকাতায়। সেখানে আড়াই দিনে বেশ কিছু কার্যক্রমে অংশ নেবেন বাংলাদেশে তুমুল জনপ্রিয় এই গোলরক্ষক। এর আগে ঢাকায় কয়েক ঘণ্টা কাটিয়ে যাচ্ছেন মার্তিনেস। তবে ঢাকায় তাকে নিয়ে তেমন আনুষ্ঠানিকতা নেই। বাংলাদেশে মার্তিনেসের সফরের পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান নেক্সট ভেঞ্চার্স একটি আয়োজন রেখেছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও মাশরাফি বিন মুর্তজা। দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার কথা আছে মার্তিনেসের।