ব্যাটিং ভুলে যাওয়া বাংলাদেশ গড়ল মাঝারি সংগ্রহ
ফাইনালের আশা আগেই শেষ, তবু এশিয়া কাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে চাওয়া ছিল বাংলাদেশের। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি জেতার ইচ্ছার কথা জানান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সঙ্গে ছিল ব্যাটিংয়ে উন্নতি করার ছাপ রাখার লক্ষ্য। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ যে মাঝারি লক্ষ্য পেল, সেটা কেবল ব্যাটসম্যানদের অবদানেই নয়, স্পিনার নাসুম আহমেদের দারুণ ইনিংসে মিলেছে লড়াই করার পুঁজি।
শুক্রবার কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৮ উইকেটে ২৬৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। শুরুর ভরাডুবির পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া সাকিব ও তাওহিদ হৃদয় বড় জুটি গড়ে দলকে অনেকটা পথ এগিয়ে দেন। এরপর নাসুম পালন করলেন ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব, সঙ্গে শেখ মেহেদি হাসানের লড়াই। শেষের দুই জুুটির রানেই মূলত আড়াই'শ পেরোয় বাংলাদেশ।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। দলীয় ১৩ রানেই বিদায় নেন লিটন কুমার দাস। রানের খাতা খোলার আগেই ভারতের পেসার মোহাম্মদ শামির দারুণ এক ডেলিভারিতে উপড়ে যায় ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের স্টাম্প। প্রথম উইকেট হারানোর চাপ সামলানোর আগেই থামেন ভালো শুরু করেও হতাশাজনকভাবে আউট হওয়া তানজিদ হাসান তামিম। ব্যাটে লেগে বোল্ড হন ১২ বলে ৩টি চারে ১৩ রান করা বাঁহাতি এই ওপেনার।
তৃতীয় উইকেটের পতনও কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়। দলীয় ২৮ রানে ক্যাচ তুলে আউট হন দীর্ঘদিন পর সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয়, ১১ বলে ৪ রান করেন তিনি। ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশের চাপ আরও বাড়ে ১৪তম ওভারে, অক্ষর প্যাটেলের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
৫৯ রানেই নেই প্রথম সারির চার ব্যাটসম্যান, বাংলাদেশ তখন দিকহারা। এখান থেকে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক সাকিব ও হৃদয়। উইকেটে মানিয়ে নিতে সময় নিলেও এ দুজন অনেকটা পথ লড়াই করেন। পঞ্চম উইকেটে ১১৫ বলে ১০০ রানের জুটি গড়েন তারা। এই জুটি গড়ার পথে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৫তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সাকিব। আর একটি হাফ সেঞ্চুরি করলেই বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ হাফ সেঞ্চুরির (৫৬টি) মালিক তামিম ইকবালকে ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি।
সাকিবের বিদায়ে এই জুটি ভাঙে, ফেরার আগে ৮৫ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ইনিংস সেরা ৮০ রান করেন তিনি। সাকিবের বিদায়ের পরের ওভারেই থামেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী, ৫ বলে ১ রান করেন তিনি। এরপর নাসুমের সঙ্গে ৩২ রানের জুটি গড়েন হৃদয়। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৮১ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৪ রান করে আউট হন।
হৃদয়ের বিদায়ের পর শেখ মেহেদির সঙ্গে জুটি গড়েন পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠা নাসুম। এই জুটি ৩৬ বলে ৪৫ রান যোগ করেন। ব্যাটসম্যানদের দৈন্যতার মাঝেও দারুণ ব্যাটিং করা নাসুম ৪৫ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৪ রান করেন। নবম উইকেটে ১৬ বলে ২৭ রানের জুটি গড়েন শেখ মেহেদি ও অভিষিক্ত তানজিম হাসান সাকিব। মেহেদি ২৩ বলে ৩টি চারে ২৯ ও সাকিব ৮ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন। ভারতের পেসার শার্দুল ঠাকুর ৩টি ও মোহাম্মদ শামি ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান প্রসিদ কৃষ্ণ, অক্ষর প্যাটেল ও রবীন্দ্র জাদেজা।