সাকিবের সিদ্ধান্ত ক্রিকেটের চেতনা বিরোধী, বলছেন বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ
আইসিসির রুলবুক অনুযায়ী একজন ব্যাটসম্যান ১০ ভাবে আউট হতে পারেন, এর মধ্যে একটি 'টাইমড আউট।' তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আগে কখনই এভাবে কোনো ব্যাটসম্যান আউট হননি। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস এই আউটের প্রথম শিকার হন। নিয়মে আছে বলে এই আউটে সমস্যা দেখছেন না অনেকেই, সাকিব আল হাসানের পক্ষেই তাদের রায়।
কিন্তু ক্রিকেট খেলায় নিয়মের বাইরেও উল্লেখ করা আছে 'স্পিরিট অব ক্রিকেট' বা ক্রিকেটীয় চেতনা। অনেকেই মনে করেন সাকিবের সিদ্ধান্ত ক্রিকেটের চেতনা বিরোধী। এভাবে আউট করায় অনেকেই সাকিবকে সমালোচনা করেছেন, এর মধ্যে একজন বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড। দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি এই পেসার জানান, ক্রিকেট মাঠে তিনি কখনই এমন কিছু দেখতে চান না। এমন কিছুর পক্ষে নন তিনি।
ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকব্লগ ডটনেটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড বলেছেন, 'আমার মন বলছিল মাঠে ঢুকে বলি; 'যথেষ্ট হয়েছে, আমরা এর পক্ষে না। আমরা এমন দল না যে এর পক্ষ নেব।' আমি শুধু সেখানে গিয়ে বলতে চাচ্ছিলাম, 'যথেষ্ট হয়েছে আর না।' এটা আমার তাৎক্ষণিক ভাবনা।'
'সবকিছু দ্রুত ঘটে গেছে। আপনি কর্তৃত্বের কথা বলছেন, আমি তো প্রধান কোচ না, আমি দায়িত্বে নেই। আমি মারাই এরাসমাসকে বলতে দেখেছি, 'অ্যাঞ্জেলো, দয়া করে তুমি এখন মাঠ ছাড়তে পারো।' এরপর দেখেছি, অ্যাঞ্জেলো হেলমেট তুলে নিল, বিজ্ঞাপনী বোর্ডের দিকে ছুড়ে মারল। আসলে, আমি বিস্মিত হয়েছি।' যোগ করেন তিনি।
ঘটনাটিকে ক্রিকেটের চেতনা বিরোধী জানিয়ে ডোনাল্ড বলেন, 'আপনি এই খেলার প্রতি, একে অন্যের প্রতি সম্মান ও মর্যাদার কথা বলুন। ক্রিকেটের চেতনার কথা বলুন। আমি এমন জিনিস দেখতে চাই না। এটি আসলে আমার ব্যাপার। আমার কথা হচ্ছে, এটা হতে পারে না, এটা হবে না। কিন্তু আমরা সেটাই দেখেছি। জানি না, আমার মন সঙ্গে সঙ্গেই বলছিল, এটা হতে পারে না। এটা একেবারেই হতে পারে না!'
বাংলাদেশ জিতেছে, তবে এই ঘটনায় জয়ের মাহাত্ম্য কমে গেছে বলে মনে করেন প্রোটিয়া এই সাবেক পেসার। তার ভাষায়, 'আমার মনে হয় এটার (টাইমড আউট) কারণে বাংলাদেশের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ম্লান হয়ে গেছে। সত্যি বলতে আমি এখনও একটু হতভম্ব। ব্যক্তি ও ক্রিকেটার হিসেবে এটি আসলে আমার মূল্যবোধের ব্যাপার। বয়সভিত্তিক দল, ক্লাব ক্রিকেট, রাজ্য ক্রিকেট, আন্তর্জাতিক, আমার গোটা জীবনে কখনই, কখনই এমন কিছু দেখিনি নিশ্চিতভাবেই।'
পুরো ঘটনার ব্যাখ্যায় বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ বলেন, 'এটা (টাইমড আউট) দেখতে খুব হতাশার লেগেছে। মানলাম সাকিব সুযোগ নিয়েছে। সে বলেছে, 'আমি জেতার জন্য যা যা সম্ভব করেছি।' আপনি আমার কথা শুনেই বুঝতে পারছেন, ব্যাপারটা আমার অপছন্দ...এমন কিছু আমি পছন্দ করি না। এমন কিছু ঘটতে দেখা সত্যিই খুব কঠিন...শ্রীলঙ্কার অন্যতম সেরা খেলোয়াড় কোনো বল না খেলেই আউট হয়ে চলে গেল! আমার মনোভাব এটাই।'