হোয়াইটওয়াশ পাকিস্তান, ওয়ার্নারের ঝলমলে বিদায়
সিরিজ শুরুর আগে ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার, তার ইচ্ছা পূরণ করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। বাঁহাতি এই অজি ওপেনার নিজের হোম গ্রাউন্ড সিডনিতে খেললেন ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট। নিজের শেষ ইনিংসে ওয়ার্নার করলেন হাফ সেঞ্চুরি, প্রতিপক্ষ পাকিস্তানকে তার দল করল হোয়াইটওয়াশ; সব মিলিয়ে ঝলমলে বিদায় হলো তার।
তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার পাশাপাশি বেনো-কাদির ট্রফি ধরলো রাখলো অজিরা। সিরিজের প্রথম দুই টেস্টে যথাক্রমে ৩৬০ রান ও ৭৯ রানে জেতে স্বাগতিকরা।
পাকিস্তানের করা ৩১৩ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৯৯ রনে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান ১১৫ রানে গুটিয়ে গেলে অজিদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৩০ রান। যা ওয়ার্নার ও মার্নাস লাবুশেনের ব্যাটে ২৫.৫ ওভারেই পাড়ি দেয় ঘরের মাঠের দলটি।
তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের গন্ধ পাচ্ছিলো অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ১৪ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা পাকিস্তান তৃতীয় দিন শেষে ৭ উইকেটে ৬৮ রান তুলে। ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ৮২ রানে এগিয়ে থাকে তারা। মোহাম্মদ রিজওয়ান ৬ ও আমির জামাল শূন্য রানে অপরাজিত থাকেন।
চতুর্থ দিনের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের ভালোভাবেই সামাল দেন রিজওয়ান ও জামাল। সকালের প্রথম সেশনে ৮১ বল বিপদ ছাড়া কাটিয়ে দেন তারা। দিনের ১৪তম ওভারের চতুর্থ বলে রিজওয়ানকে ২৮ রানে থামিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন নাথান লায়ন। ভাঙে অষ্টম উইকেটে জামাল-রিজওয়ানের ৮৯ বলে ৪২ রানের জুটি।
পাকিস্তানের বাকি ২ উইকেট তুলে নিতে বেশি সময় নেয়নি অস্ট্রেলিয়া। ২টি চারে ১৮ রান করা জামালকে ফেরান অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। শেষ ব্যাটসম্যান হাসান আলীকে ৫ রানে থামান লায়ন। ৪৩.১ ওভারে ১১৫ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার জশ হ্যাজেলউড ১৬ রানে ৪টি ও লায়ন ৩৬ রানে ৩টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স ও ট্রাভিস হেড।
১৩০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম ওভারের শেষ বলে উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। রানের খাতা খোলার আগেই স্পিনার সাজিদ খানের শিকারে পরিণত হন ওপেনার উসমান খাজা। শুরুতে উইকেট হারালেও অস্ট্রেলিয়াকে চাপে পড়তে দেননি আরেক ওপেনার ওয়ার্নার ও লাবুশেন।
দ্বিতীয় উইকেটে ১৪৩ বলে ১১৯ রানের জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের খুব কাছে পৌঁছে দেন তারা। জুটি গড়ার পথে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩৭তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ওয়ার্নার। দলের জয়ের ১১ রান বাকি থাকতে সাজিদের বলে আউট হন ৭৫ বলে ৭টি চারে ৫৭ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। এই ইনিংস দিয়ে শেষ হলো তার টেস্ট অধ্যায়। ১১২ টেস্টের ২০৫ ইনিংসে ২৬টি সেঞ্চুরি ও ৩৭টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৪৪.৫৯ গড়ে ৮ হাজার ৭৮৬ রান করেছেন তিনি।
ওয়ার্নার ফেরার পর ৬ বলে ১১ রান তুলে অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত করেন লাবুশেন ও স্টিভ স্মিথ। ৭৩ বলে ৯টি চারে অপরাজিত ৬২ রান করেন লাবুশেন। ৪ রানে অপরাজিত থাকেন স্মিথ। ঘরের মাঠে ২৮ বছরে এ নিয়ে টানা ১৭ টেস্টে পাকিস্তানকে হারালো অস্ট্রেলিয়া। ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সর্বশেষ টেস্ট জেতে পাকিস্তান।