লিডের পাহাড় গড়েও ব্যাটিং ছাড়ল না শ্রীলঙ্কা
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটে বদলেছে, নাকি খেই হারিয়েছে দুই দলের ব্যাটসম্যানরা; চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে এটা হতে পারে সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক ধাঁধা। যে উইকেটে প্রায় দুদিন ব্যাটিং করে শ্রীলঙ্কা তোলে ৫৫১ রান, সেই উইকেটেই ১৭৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। আবার প্রথম ইনিংসে ১৫৯ ওভারে রান পাহাড় গড়া লঙ্কানরাই দ্বিতীয় ইনিংসে পুরো অচেনা, ৮৯ রানেই হারায় ৬ উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও খালেদ আহমেদের তোপে দিক হারায় শ্রীলঙ্কা, রীতিমতো উইকেট বৃষ্টি শুরু হয়। অবশ্য শেষ দিকে সামলে নিয়ে দিন শেষ করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও প্রবাথ জয়সুরিয়া। ৬ উইকেটে ১০২ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছে সফরকারীরা। ইতোমধ্যে ৪৫৫ রানের লিড হলেও ইনিংস ঘোষণা করেনি লঙ্কানরা। এই রান পাড়ি দিলেও হবে বিশ্ব রেকর্ড। কিন্তু তৃতীয় দিন শেষেই বড় হারের চিন্তায় থাকা বাংলাদেশকে পাহাড়সম লক্ষ্য দিতে চায় শ্রীলঙ্কা।
ম্যাথুস ৩৪ ও জয়সুরিয়া ৩ রানে অপরাজিত আছেন। ম্যাুথুসের রানই এই ইনিংসে শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ, এ ছাড়া নিসান মাদুসকা ৩৪ রান করেন। আউট হওয়া শ্রীলঙ্কার কোনো ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে ১৭৯ মিনিট ব্যাটিং করা শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায়। হাসান মাহমুদের বলে এনসাইড এজে বোল্ড হন ৪ রান করা দিমুথ করুনারত্নে।
৫ বল পরে খালেদের বলে একইভাবে বোল্ড হন কুশল মেন্ডিসও। ১৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পরও গুছিয়ে নেয় লঙ্কানরা। তৃতীয় উইকেটে ৪৫ রানের জুটি গড়েন মাদুসকা ও ম্যাথুস। মাদুসকাকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন দারুণ বোলিং করা অভিষিক্ত হাসান। এরপর খেই হারায় শ্রীলঙ্কা, হাসান ও খালেদের বোলিংয়ের সামনে ২৯ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে তারা। প্রথম ইনিংসে ২ উইকেট নেওয়া হাসান ইতোমধ্যে ৪ উইকেটে নিয়েছেন। খালেদের শিকার ২ উইকেট।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করা বাংলাদেশের শুরুটা ভালোই ছিল। ১ উইকেটে ৫৫ রান তুলে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় দিনের শুরুটাও মন্দ ছিল না, আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জাকির হাসান ও তাইজুল ইসলাম আরও কিছুটা পথ পাড়ি দেন। কিন্তু ৫৪ রান করা জাকির আউট হতেই শুরু হয় আসা-যাওয়ার মিছিল। লঙ্কান পেসারদের বলে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা, দেখে মনে হয় তাদের ডেলিভারি অপ্রতিরোধ্য।
আগের দিন ২১ রান করে আউট হন মাহমুদুল হাসান জয়। এদিন হাফ সেঞ্চুরি থামেন জাকির। এরপর কেবলই ভাঙনের সুর বেজে গেছে। এর মাঝে কিছুটা ব্যতিক্রম ছিলেন মুমিনুল হক ও নাইট ওয়াচম্যান তাইজুল। ৮৪ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলার পথে বাংলাদেশের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ৪ হাজার রান পূর্ণ করেন মুমিনুল। তাইজুল ৬১ বলে ২২ ও সাকিব আল হাসান ১৫ রান করেন।
সিলেট টেস্টে চরম দৃষ্টিকটুভাবে আউট হওয়া লিটন কুমার দাস আজও বাজে বলে আউট হন, স্লিপে ক্যাচ দেওয়া ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪ রান করেন। ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে যাওয়া শান্ত ক্যাচ অনুশীলন করিয়ে থামেন। আগের দুই ইনিংসে ৫ ও ৬ রান করা বাংলাদেশ অধিনায়ক আজ ১ রান করেন। শাহাদাত হোসেন দিপু ৮ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ৭ রান করেন। শ্রীলঙ্কার আসিথা ফার্নান্দো ৪টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান বিশ্ব ফার্নান্দো, লাহিরু কুমারা ও প্রবাথ জয়সুরিয়া।