বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ পরিচালনায় বাংলাদেশি সৈকত
ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। বাংলাদেশি এই আম্পায়ার আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে দায়িত্ব পালন করবেন। তার আগে আর কোনো বাংলাদেশি আম্পায়ার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অন-ফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্ব পাননি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) বুধবার নিশ্চিত করেছে, ১ জুন ডালাসে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যকার টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচটি পরিচালনা করবেন সৈকত।
৪৭ বছর বয়সী সৈকত আম্পায়ার হিসেবে ক্রমেই তার অভিজ্ঞতার ভান্ডার সমৃদ্ধ করছেন। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাঁচটি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন তিনি, দুটি আইসিসি নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ এবং ২০১৮ সালের আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও পরিচালনা করেছেন।
উদ্বোধনী ম্যাচে সৈকতের সঙ্গে মাঠে থাকবেন রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ। রিচার্ড তিনবার আইসিসির বর্ষসেরা আম্পায়ারের পুরষ্কার জিতেছেন। ২০২৩ বিশ্বকাপ ফাইনালে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
চলতি বছরের শুরুতে আইসিসির এলিট প্যানেলে জায়গা হয় সৈকতের। তার আগে আর কোনো বাংলাদেশি আম্পায়ারিংয়ে এতোটা সাফল্য অর্জন করেননি। গুরুত্বপূর্ণ পদে সৈকতের ধারাবাহিক দায়িত্বপালন বাংলাদেশি আম্পায়ারদের জন্য একটি আনন্দদায়ক খবর হয়ে এসেছে।
সাবেক বাঁহাতি এই স্পিনার দেশের হয়েও ম্যাচ খেলেছেন। এসএসসি পাস করার পরই ডাক পান বাংলাদেশ দলে, খেলেন বিশ্বকাপ বাছাইয়ের টুর্নামেন্ট আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। জাতীয় দলে অভিষেকের পর অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেন সৈকত।
নবম শ্রেণি থেকে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা শুরু, খেলেন ১৭-১৮ বছর। তবে পিঠের ইনজুরির সঙ্গে পেরে না ওঠায় স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখা হয়নি তার। সাবেক বাঁহাতি এই স্পিনার খেলতে পারেননি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। এই স্বপ্ন পূরণ না হলেও স্বপ্ন দেখা থামাননি সৈকত। বাংলাদেশ একদিন টেস্ট মর্যাদা পাবে, টেস্ট ও বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করা যাবে; এই স্বপ্নে নাম লেখান আম্পায়ারিংয়ে।
বেশ কয়েক বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিং করে ২০০৬ সালে আইসিসি ইন্টারন্যাশনাল প্যানেলের অংশ হন তিনি। আন্তর্জাতিক ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে সৈকতের অভিষেক হয় ২০১০ সালে, মিরপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
এখন পর্যন্ত ১০ টেস্ট, ৬৩ ওয়ানডে ও ৪৯ টি-টোয়েন্টিতে আম্পায়ারিং করেছেন তিনি। মেয়েদের ক্রিকেটে আম্পায়ারিং দিয়ে বিশ্বকাপে অভিষেক সৈকতের। দেশের প্রথম আম্পায়ার হিসেবে গত বছর অনুষ্ঠিত ছেলেদের বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করেন। আইসিসির এলিট প্যানেলে জায়গা পাওয়া প্রথম বাংলাদেশিও তিনিই।